মোটের উপর শান্তিতেই শুরু হয়েছিল তৃতীয় দফার ভোট পর্ব। কাঠফাটা রোদ, ঘাম ঝরানো গরম, সব উপেক্ষা করেই ভোটের লাইনে সামিল হয়েছিলেন মানুষ। হঠাৎই বোম পড়তে শুরু করল মুড়িমুড়কির মতো। প্রাণ ভয়ে বুথ ছেড়ে যে যে দিকে পারলেন ছুটলেন। এ ছবি মুর্শিদাবাদের ডোমকলের টিকটিকিপাড়ায়। একটা বুথে নয়, দিনভর বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর এল ডোমকলের একাধিক বুথ থেকে।
তা সে পঞ্চায়েত ভোটই হোক, বিধানসভা বা লোকসভা ভোট, শাসকের আসনে থাকুক যে দলই, ভোট হবে অথচ গুলি চলবে না, বোমা পড়বে না, এমন অভিজ্ঞতা নেই এখানকার মানুষের। রক্ত ঝরবে, খান কয়েক লাশ পড়বে,এটাই যেন এখানে স্বাভাবিক। বিগত পঞ্চায়েত, বিধানসভা ও লোকসভা ভোটের ইতিহাস ঘাঁটলেও তার সত্যতাও মেলে। এ হেন ডোমকলে আজ একেবারে শান্তিতে মিটবে ভোট তা ভাবেননি কেউই। বেলা বাড়তেই ডোমকলের নানা প্রান্তে টের পাওয়া গেল সেই উত্তাপ।
সকালে ডোমকলের মানিকনগরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। বুথ দখলকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে জখম হন তিনজন তৃণমূল কর্মী। তাঁদের নাম তুজাম আনসারি (৫০), মাসাদুল ইসলাম (৩৫) ও মল্লিক মণ্ডল (২৭)। এই ঘটনায় গুরুতর জখম তুজাম আনসারিকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
বেলা একটু বাড়তেই টিকটিকিপাড়ার ১৭৪ নম্বর বুথ থেকে ২০০ মিটার দূরেও বোমাবাজি শুরু করে দুষ্কৃতীরা। পরের পর পড়তে থাকে বোমা। জখম হন একজন। কংগ্রেসের অভিযোগ, ভোটাররা যাতে বুথমুখী না হয়, তার জন্য সকাল থেকেই এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে রাজ্যের শাসকদল। গ্রাম ঘেরাও করে রাখে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। সে সব উপেক্ষা করেই ভোটাররা বুথমুখী হতেই , শুরু হয় বোমাবাজি। পুলিশ গিয়ে অবস্থা সামাল দেয়। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই বোমাবাজি করেছে।
বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ রানিনগর ২ নম্বর ব্লকে কোন্নগর হাই মাদ্রাসায় ২১৬ নম্বর বুথে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কংগ্রেসের অভিযোগ, কর্তব্যরত পুলিশের সামনেই ছাপ্পা চলে। বুথের ভেতর থেকে তাঁদের সমস্ত এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়।
কিছু পরেই রাজাপুর গ্রামে বুথ থেকে তিনশো মিটার দূরে বোমা পড়তে শুরু করে। বিস্তীর্ণ এলাকায় দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়ায় বলে অভিযোগ। এখানেও পরষ্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস ও তৃণমূল নেতৃত্ব।