রবিবার সাড়ে ৫ ঘণ্টার মধ্যে বদলে গেল ছবিটা। সকালে চার্চে চার্চে তখন ইস্টারের প্রার্থনা করতে গিজগিজ করছেন মানুষ। রয়েছেন বিদেশি পর্যটকও। হঠাৎ করেই জোরালো বিস্ফোরণ। একটা নয়, সাড়ে ৫ ঘণ্টায় মোট ৮টা। আর এই বিস্ফোরণেই চেহারা বদলে গিয়েছে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর। জারি হয়েছে কারফিউ। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই ২০৭ জন নিহত হয়েছেন এই হামলায়। আহত ৪০০-র বেশি। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। জানা গিয়েছে, এই বিস্ফোরণে অন্তত ৩৫ জন বিদেশি নাগরিকও নিহত হয়েছেন। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ৭ সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শ্রীলঙ্কার বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় অন্তত ৩৫ জন বিদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। তবে তাঁরা কোন দেশের তা এখনও বিস্তারিত ভাবে জানা যায়নি। শনাক্তকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে ক’জন পর্যটক আর ক’জন কাজের সূত্রে সেখানে এসেছিলেন, সে ব্যাপারেও সঠিক ভাবে কিছু জানা যায়নি। কলম্বোর বিভিন্ন হোটেল, বিমানবন্দরের বোর্ডিং চার্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের দূতাবাসকেও জানানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই ৮টি বিস্ফোরণের মধ্যে অন্তত দুটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ হয়েছে। বিস্ফোরণের পর গোটা কলম্বো জুড়ে তল্লাশি করে সাত সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে শ্রীলঙ্কা পুলিশ। তাদের জেরা করে জানার চেষ্টা হচ্ছে, এই ঘটনার পিছনে কারা যুক্ত। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী এই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। তবে মনে করা হচ্ছে, ন্যাশনাল থোটিথ জামাথ ( এনটিজে ) নামের একটি মুসলিম জঙ্গি সংগঠন এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। এই জঙ্গি সংগঠনই গত বছর শ্রীলঙ্কায় এলাধিক বৌদ্ধ মূর্তি ভাঙার ঘটনায় যুক্ত ছিল।
তবে এখনও নিশ্চিত হতে পারছে না শ্রীলঙ্কা প্রশাসন। জানানো হয়েছে, আপাতত সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এই কারফিউ থাকবে। তারপর পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরও কোনও জঙ্গি লুকিয়ে আছে কিনা, সে ব্যাপারে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। এখনও কার্যত গোটা কলম্বো জুড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে সেনা। আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় মানুষ। আতঙ্কিত বিদেশি নাগরিক ও পর্যটকরাও। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশে ফেরার চেষ্টা করছেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ এই ঘটনার জন্য শ্রীলঙ্কার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে।