২০১৯ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের কুরুক্ষেত্র পাঁচ বছর পর ফিরে এসেছে। ধর্ম ও অধর্মের মধ্যে কার জিত হবে নির্ধারণ করবে জনতা। ঐতিহ্য ও অগ্রগতির নিরিখে ভারতের স্থান নির্ধারিত হবে এই তিক্ত রাজনৈতিক লড়াই দ্বারা। বিপুল মানব সম্পদের দ্বারা অর্থনৈতিক রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে ভারত আত্মপ্রকাশ করবে নাকি ফিরে যাবে পুরাতন পরিবার কেন্দ্রিক সামন্ততন্ত্রে,
যেখানে দক্ষতার তুলনায় বনেদিয়ানা গুরুত্ব পাবে?
নাকি বহু দলীয় শাসন ব্যবস্থায় নীতি পঙ্গুত্বের মাধ্যমে অনিশ্চয়তার দিকে এগিয়ে যাবে দেশ ? ভারতের প্রাচীন আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের ওপর আলোকপাত হবে নাকি নেহরু বা মার্কসপন্থীদের ছায়ায় আত্মগোপন করবে।
বর্তমান সরকার কি চাইছে তা অত্যন্ত স্পষ্ট এবং মোদী স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রধানমন্ত্রী। বিজেপি এই মুহুর্তে যথেষ্ট শক্তিশালী, বিহার তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্রের মত রাজ্য গুলির সহায়তা পাচ্ছে। গত পাঁচ বছরে ভারত অর্থনীতি, প্রযুক্তি, বিদেশনীতি সব ক্ষেত্রেই অনেক এগিয়ে গেছে। দুর্নীতি কমেছে। প্রথম বারের জন্য পাক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা গেছে।
মোদীর বিপরীতে আঞ্চলিক ও বামপন্থীদের একটি পরিবর্তনশীল জোট তৈরি হয়েছে। এই ধরনের জোটনীতি যেকোন ধরনের অবস্থান নির্বাচনের জন্য জটিল এবং সর্বদা বিতর্কের অবকাশ রাখে। এই ধরনের জোট কার অঙ্গুলি হেলনে চলছে তাও ঠিক ভাবে বোঝা যায় না। অর্থনীতি ও মতাদর্শগত ভাবে এর কোনো স্থিরীকৃত নীতি নেই। একমাত্র মোদী বিরোধিতাই কাজ।
কংগ্রেস ২০১৪ সালের হারের পর ক্ষমতায় ফিরতে চাইছে । কিন্তু কংগ্রেসের সংগঠন শক্তিতেই গলদ রয়ে গেছে। কংগ্রেস রাহুল গান্ধীকে সামনে রেখে এগোচ্ছে, পারিবারিক গরিমা ছাড়া রাহুল গান্ধীর কোনো রাজনৈতিক শিক্ষা নেই। দলীয় প্রচারটাও তাঁকে দিয়ে ঠিকমতো হয় না, দেশ শাসন অনেক দূরের কথা। মা এবং বোনকে ছাড়া তিনি অচল। মোদী বিরোধিতা ও নঞর্থক প্রচারের দ্বারা যেনতেন প্রকারে তাঁরা মোদিকে হঠাতে চাইছেন। ভুল শাসনের জন্য ২০১৪ তেই বহু দলীয় শাসন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। মোদির সাফল্য বিরোধী দের মরিয়া করে তুলেছে। এইবার না হলে আর কোনো কালেই শাসনে ফিরতে না পারার আশঙ্কা থেকে তারা মোদীকে কলঙ্কিত করতে চেষ্টা করছেন। এর সঙ্গে সঙ্গে তারা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। রাজনৈতিক হিংসা ছড়াচ্ছে, গণতন্ত্র ও বাক স্বাধীনতা হরণ হচ্ছে তৃণমূল শাসিত পশ্চিমবঙ্গে ও বামশাসিত কে্রালায়। ব্যুরোক্রেসি এবং মিডিয়া কংগ্রেসের পক্ষে, মোদি এই সমস্ত বাধাকে অতিক্রম করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। মূলগত এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নত ঘটেছে। ভারতের মত বৈচিত্র্য পূর্ণ দেশে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে মোদির গতিশীল অবস্থান ভীষণ প্রয়োজন মানব সম্পদের উন্নতির জন্য।
নেহরু পন্থীরা ধনিক শ্রেণির প্রতিনিধি। তাঁরা ব্রিটিশ রাজনৈতিক ভাবধারার সঙ্গে কিঞ্চিত গান্ধিবাদি অহিংসায় বিশ্বাসী। তারা রঙিন পরকলার সাহায্যে ভারতবর্ষকে দেখে। শিল্প সংস্কৃতির উৎস ভারতবর্ষের প্রাচীন ঐতিহ্যকে ব্রিটিশ প্রভাবে সংশোধন করার পক্ষপাতী। নেহরু পন্থীরা অন্যান্য নেতাদের ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস থেকে মুছে দিতে চান। ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্যকে অস্বীকার করেন। ভারতের ইতিহাসে যারা বনেদিয়ানার প্রভাব মুক্ত হয়ে নিজ উদ্যোগে বড় হতে চেয়েছে তাদের বড় হতে দেয় নি। মোদী নিম্নস্তর থেকে উঠে আসা নেতা। কিন্তু তাঁকে ধনী, দুর্নীতি পরায়ণ ও ধনীদের স্তাবক হিসেবে দেখানো হয়েছে।
২০১৪ সালে হিন্দু ভোট ব্যাঙ্ক হারিয়ে কংগ্রেস এই বছর তা ফিরে পাওয়ার লক্ষে রাহুল গান্ধিকে হিন্দু পরিচয়ে সামনে আনছে হিন্দু ভোট হাসিল করার লক্ষে। রাহুল গান্ধীর মন্দিরে মন্দিরে পূজা দেওয়ার চিত্র দেখে হিন্দুরা ভুলবেন না, কারণ তা আদতে হিন্দু ধর্মের কোনো উপকারে আসবে না। হিন্দুদের তাঁকেই ভোট দেওয়া উচিত যিনি হিন্দু ধর্মের প্রকৃত রক্ষক। শবরীমালা মন্দির, রাম মন্দির নির্মাণ বা হিন্দুদের উৎসব অনুষ্ঠান পালনকে কেন্দ্র করে এ বিষয়ে বিরোধীদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। পাকিস্তানি হামলা বা বালাকোটে মিলিটারি অভিযানের প্রেক্ষিতে তারা ভারতের বিরোধিতাই করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা পাকিস্তানের কাছে নতি স্বীকারে রাজি থাকলেও মোদি সরকারের সঙ্গে থেকে কঠোর বিরোধিতার পথে যেতে রাজি হন না।
তাই জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ভোট দিন। একটী ভোটও যেন নষ্ট না হয়। সকলে অবশ্যই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ কর সঠিক ও শক্তিশালী সরকার গঠনে সহায়তা করুন।