আয়ুশেই ম্যাজিক, কোয়ারেন্টাইনে থাকা ২৬ জনই করোনা নেগেটিভ

আয়ুশেই ম্যাজিক (Life Magic)। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কোয়ারান্টাইনে থাকা উত্তর কলকাতার একটি হাসপাতালের ২৬ জন কর্মীকে প্রত্যেকদিন খেতে দেওয়া হয়েছিল ক্বাথ আর চব্যনপ্রাশ। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার ফলে খাননি শুধু এক নার্স। তাই শুধু তিনিই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বাকিদের স্পর্শ করতে পারেনি করোনা। সম্প্রতি এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর কলকাতার রাজা রামমোহন রায় সরণির শ্রী বিশুদ্ধানন্দ সরস্বতী মাড়োয়াড়ি হাসপাতালে।

এপ্রসঙ্গে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ডা. সুমিত সুর (Dr. Sumit Sur)জানান, এই ক্বাথ ও চব্যনপ্রাশ নির্দিষ্ট ডোজে খাওয়ালে নিঃসন্দেহে শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এই ক্ষেত্রে যাঁদের খাওয়ানো হয়েছিল, তাঁদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়েছে। তাই তাঁদের প্রত্যেকের রিপোর্টে করোনা নেগেটিভ আসা আশ্চর্যজনক নয়। রাজ্যে এটি একটি নিদর্শন বলা যেতে পারে।

গত ১০ এপ্রিল জোড়াসাঁকোর মুক্তারাম বাবু স্ট্রিটের বাসিন্দা এক বৃদ্ধা তাঁদের হাসপাতালে ভরতি হন। তাঁর লালারস পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়। এরপর ১৪ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর পরিজনরা বৃদ্ধার শেষকৃত্য করেন। এরপর তাঁর করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালের ২৭ জন কর্মীকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।

বিশুদ্ধানন্দ হাসপাতালের প্রশাসক সুরেশ শর্মা জানান, কর্মীদের মধ্যে ২৬ জন হাসপাতালের ভিতরেই কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। শুধু একজন নার্স হাসপাতালে থাকতে রাজি হননি। তিনি বিডন স্ট্রিটের বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। হাসপাতালের আয়ুর্বেদিক বিভাগের চিকিৎসক ডা. তপনদেব গুপ্তা সিদ্ধান্ত নেন, কোয়ারেন্টাইনে যে ২৬ জন আছেন, তাঁদের শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে আয়ুশ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করার। প্রত্যেকদিন নিয়ম করে তাঁদের এলাচ, আদা, হলুদ, কালো মরিচ ও লবঙ্গ দিয়ে ক্বাথ তৈরি করে উষ্ণ জলে খাওয়ানো হয়। নিজস্ব পদ্ধতিতে হাসপাতালে চব্যনপ্রাশ তৈরি করেও তাঁরা বিশেষ ডোজে তা খাওয়াতে শুরু করেন। এছাড়াও রাতে শোওয়ার আগে দুধের সঙ্গে হলুদ খাওয়ানো হয়। টানা ১৪ দিন ধরে এই ওষুধ খাওয়ানো হয় তাঁদের। শেষ পর্যন্ত তাঁদের প্রত্যেকের লালারস পরীক্ষা করে কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। কিন্তু, যিনি হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার ফলে এই আয়ুশ চিকিৎসা নেননি। তাঁর লালারস পরীক্ষা করে কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে। তাঁর চিকিৎসা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.