বাঙালিহিন্দুর বদান্যতাতেই বামের বিকাশ
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি বরাবরই জনসমর্থনের পাশাপাশি সংগঠননির্ভর। এই সংগঠননির্ভর রাজনীতি বামপন্থীদের দান। বাঙালি বিশেষকরে মধ্যবিত্ত বাঙালি স্বাধীনতার পর থেকেই কংগ্রেসবিমুখ। আরও স্পষ্ট করে বললে বাঙালিহিন্দু মধ্যবিত্ত। এর অনেক ঐতিহাসিক কারণ আছে। বাঙালিহিন্দু বিশেষ করে বাঙালিহিন্দু মধ্যবিত্তকে স্বভাব বামপন্থী (হ্যাবিচুয়েটেড লেফ্ট) বললেও অতিশয়োক্তি হয় না। বাঙালিহিন্দুর সমর্থনের জোরেই সাতচল্লিশর পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে শাসক কংগ্রেসের প্রতিস্পর্ধী শক্তি হয়ে ওঠে কমিউনিষ্টরা। পশ্চিমবঙ্গে কমিউনিষ্টরা গত শতাব্দীর পঞ্চাশ-ষাটের দশকে পায়ের তলার জমি শক্ত করতে একাধিক রাজনৈতিক কৌশল নিয়েছিল । তার মধ্যে মোক্ষম একটি কৌশল ছিল পূর্বপাকিস্তান থেকে বিতাড়িত বাঙালিহিন্দুদের অনলবর্ষী ক্রোধকে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়া। তার ফলে ষাটের দশকে জুড়ে পশ্চিমবঙ্গের উদ্বাস্তুদের কলোনিগুলি হয়ে ওঠে বামপন্থীদের দুর্জয় ঘাঁটি । দেশভাগ,দাঙ্গায় চোখের সামনে প্রিয়জনের মৃত্যু, জননী-জায়া-ভগিনী-দুহিতার সম্ভ্রম নাশ এবং সাতপুরুষের ভিটে থেকে উচ্ছেদের জন্য পূর্ববঙ্গের বাঙালিহিন্দু উদ্বাস্তু মুসলিম লিগের পাশাপাশি কংগ্রেসকেও সমানভাবে দায়ী মনে করে। বাঙালিহিন্দু উদ্বাস্তুদের প্রতি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর অসহিষ্ণুতা একটি ঐতিহাসিক সত্য। দল হিসেবে কংগ্রেস সেই দায় এড়াতে পারে না। এবং তার রাজনৈতিক মূল্যও পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে চোকাতে হয়েছে সাতষট্টির পর থেকে একের পর এক নির্বাচনে হেরে। একটু তলিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবেন এতদিন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীদের ভোটব্যাঙ্ক ছিল মূলতঃ বাঙালিহিন্দু নির্ভর। পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান সমাজ কোনও দিনই বামপন্থীদের ঢেলে ভোট দেয় নি। বরং এই সেদিন পর্যন্ত মুসলমান ভোটের বড় ভাগীদার ছিল কংগ্রেস।
বাঙালিহিন্দুর মানস সরোবরে কমল ফুটছে
যেহেতু স্বাধীনতা এবং দেশভাগের পর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক-সামাজিক গণমনস্তত্ত্ব বামপন্থায় জাড়িত-লালিত-পালিত এবং বাঙালিহিন্দুর যাবতীয় রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক এবং বৌদ্ধিক বিদ্রোহ বামপন্থাকে আশ্রয় করেই ঘটেছে তাই গৈরিক রাজনীতি এতদিন পর্যন্ত এখানে কোনও স্পেস পায় নি। লক্ষ্য রাখবেন আমি বললাম,এতদিন। তাহলে এখন বাঙালিহিন্দুর মনের ঘরে বাস করে কোন জনা ? সম্প্রতি বাঙালিহিন্দুর মানস সরোবরে যে রাশিরাশি পদ্ম ফুটতে শুরু করেছে তা পদ্মশিবিরের শত্রু এবং মিত্র কারোরই অজ্ঞাত নয়। হ্যাঁ। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সংগঠন দুর্বল। এখনও দুর্বল। আর বাংলায় বিজেপির সংগঠন যে দুর্বল এটা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপিতি অমিত শাহর চেয়ে ভালো আর কেউ জানেন না। অমিত শাহজি পাকা বৈদ্য। নাড়ি টিপেই রোগীর হাল কেমন ,কী দাওয়াই দরকার বুঝতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সমর্থন সবল কিন্তু সংগঠন দুর্বল। এতে লজ্জার কিছু নেই। কারণ বাস্তব এটাই যে সংগঠন জিনিসটা আকাশ থেকে পড়ে না তাকে ধীরেধীরে তৈরী করতে হয়। দক্ষ চাষী যেভাবে ধীরেধীরে যত্ন নিয়ে জমি তৈরী করে কতকটা সেইরকম । পশ্চিমবঙ্গে এই কাজটা দীর্ঘদিন ধরে করেছে একমাত্র কমিউনিষ্টরা। কিন্তু আজ কমিউনিষ্টদের পাশে জনসমর্থন নেই। বাঙালিহিন্দু সিপিএম থেকে সরে আসছে বিজেপির দিকে। বাঙালিহিন্দুর মতি পরিবর্তন কেন ? এই প্রশ্নের রাজনৈতিক সদুত্তর একটাই — বাঙালিহিন্দুর গণমনস্তত্ত্বে পরিবর্তন আসছে। স্বভাব বামপন্থী বাঙালিহিন্দু, হ্যাবিচুয়েটেড লেফ্ট বাঙালিহিন্দু বামপন্থা ছেড়ে আত্মপরিচয়ের রাজনীতির দিকে ঝুঁকছে। আইডেন্টিটি পলিটিক্সের দিকে ঝুঁকছে।এটাকে আমি বলছি বাঙালিহিন্দুর রাজনৈতিক রূপান্তর বা পলিটিক্যাল মিউটেশন। প্রশ্ন উঠতে পারে বাঙালিহিন্দু কেন আইডেন্টিটির পলিটিক্সে ঝুঁকছে ? আমি বলব, বাঙালিহিন্দু আইডেন্টিটির ক্রাইসিসে ভুগছে তাই তারা আইডেন্টিটির রাজনীতিতে ঝুঁকছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভোটবৃদ্ধির কারণটিও খুঁজতে হবে এখানেই। বাঙালিহিন্দু স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কমল চিহ্নে ভোট দিচ্ছে বলেই বিজেপির ভোট বাড়ছে।ভোট নামক রাজনৈতিক যুদ্ধে জয়লাভের জন্য সংগঠন এবং সমর্থন দুটোই প্রয়োজন। নিঃসন্দেহে উত্তরোত্তর বাড়তে থাকা জনসমর্থনই ক্রমে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সংগঠনেও অক্সিজেন জোগাবে।বিজেপির অ্যাডভান্টেজটা হল বিজেপি যদি সাংগঠনিক শক্তিতে দু কদমও এগোতে সক্ষম হয় মানুষ বিজেপির দিকে নিজে থেকেই চার কদম এগিয়ে যাবে। এই মানুষ কারা ? এই মানুষ অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিহিন্দু জনগোষ্ঠী।
বামের ভোট সাবাড় এবার থাবা বসাও ঘাসফুলে
ভোটের রাজনীতিতে প্রত্যেকটা বড় রাজনৈতিক দলের একটা বেসিক ভোটব্যাঙ্ক থাকে।কমিটেড বা দায়বদ্ধ সমর্থকদের দ্বারা এই ভোটব্যাঙ্ক তৈরী হয়। প্রশ্ন হল,পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বেসিক ভোটব্যাঙ্ক কত ? ২০১৪র আগে আমাদের রাজ্যে বিজেপি চার-পাঁচ শতাংশের বেশি ভোট পেত না। ১৯৮৯র পর থেকে ভোটের হার কখনও কিছু বেড়েছে কিন্তু ভোটবৃদ্ধি ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে নেতৃত্ব । তাই বাংলায় পদ্মের সাফল্য স্থায়ী হয় নি। ২০১৪র লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপি ভোট পেল ১৭ শতাংশের ওপর। ২০১৬র বিধানসভা নির্বাচনে কমে হল দশ। ষোলর বিধানসভার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে যতগুলি লোকসভা-বিধানসভা উপনির্বাচন এবং পুর ও পঞ্চায়েত ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে দু-একটি ছাড়া সবকটিতেই বিজেপির ভোট বেড়েছে এবং বামের ভোট কমেছে। বামেদের ভোট ভেঙেই যে বিজেপির ভোট বেড়েছে এটা ভোটের ফলাফল গুলির দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যায়। তৃণমূলের রাজত্বে পুর ও পঞ্চায়েত নির্বাচন দূরের কথা লোকসভা-বিধানসভার উপনির্বাচনও অবাধ হয় না। কিন্তু তারপরেও একাধিক উপনির্বাচনে ৩০ থেকে ৩৭ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছে বিজেপি। এমন অনেক কেন্দ্রে তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর দিয়ে বিজেপি দ্বিতীয় হয়েছে যেখানে বাম প্রার্থী জামানতটুকু পর্যন্ত রক্ষা করতে পারেন নি।উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়ি পুরসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪২ শতাংশ। ২০১৮র পঞ্চায়েত নির্বাচনে লাজলজ্জার ধার ধারে নি তৃণমূল। শাসকদলের লাগামছাড়া সন্ত্রাসের চোটে ৩৭ শতাংশ আসনে প্রার্থীই দিতে পারে নি বিরোধীরা। রক্তাক্ত,সন্ত্রাসদীর্ণ পঞ্চায়েত ভোটেও বাংলার গ্রামে গ্রামে শাসক তৃণমূলের মূল প্রতিপক্ষ হয়ে উঠে এল বিজেপিই। সিপিএম-কংগ্রেস পরিণত হল ক্ষয়িষ্ণু প্রান্তিক শক্তিতে। দুয়ারে আবার লোকসভা নির্বাচন। আসন্ন ভোটযুদ্ধে বাংলায় এবার লড়াই যে দুই ফুলে এটা সবার কাছেই পরিস্কার। সর্বভারতীয় একটি চ্যানেলের ওপিনিয়ন পোলে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভোট দেখানো হয়েছে ৩৪ শতাংশ। ৩৪ শতাংশ যথেষ্টই ভাল ভোট। বিজেপি রাজ্যে ৩৪ শতাংশ ভোট অর্জন করতে পারলে ১৪-১৫টি আসনে জয়লাভ অসম্ভব কিছুই নয়। অমিত শাহ বিজেপিকে ২৩টি আসন জেতার টার্গেট দিয়েছেন। বিজেপি ২২-২৩টি আসন জিতলে উনিশেই তৃণমূল ফিনিশ। তবে ২২-২৩টি আসন জিততে হলে বিজেপিকে কমপক্ষে ৩৮- ৩৯ শতাংশ ভোট পেতে হবে। তাহলেই তৃণমূলের আসন এবং ভোটের শতাংশ দুটোই বিজেপির নীচে নেমে যাবে ।
পশ্চিমবঙ্গে বামেদের ভোট বিজেপির সাবাড় করা সারা। সিপিএমের জন্য পড়ে রয়েছে তলানিটুকু। এই তলানিটা কমিটেড। এটা মেরেকেটে ১৩-১৪ শতাংশের বেশী নয়। লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের ভোট আরও ৩-৪ শতাংশ কমাতে পারলে তা বিজেপির উপরি পাওনা। কংগ্রেসের ভোট নামতে নামতে ৮-৯ শতাংশে এসে স্থির হয়েছে। এটাও কমিটেড ভোট। কাজেই আর নামার সুযোগ নেই। বিজেপি বামেদের ভোট কাড়ছে। কেন কাড়ছে ? অঙ্ক খুব সহজ। যে বাঙালিহিন্দু আগে সিপিএমকে ভোট দিত এখন সে বিজেপিকে ভোট দিচ্ছে। এখন বিজেপিকে তো শুধু ক্লাসের সেকেন্ড বয় হলে চলবে না। তাকে ফার্স্টবয় হতে হবে। বাঙালিহিন্দুদের একটা বিশাল অংশ তৃণমূলকে ভোট দিচ্ছে বলেই তৃণমূল ক্ষমতায়। তাহলে বিজেপিকে জিততে গেলে কী করতে হবে এটা বুঝতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তৃণমূলের ভোট কমাতে হবে এবং সেই ভোট অন্য কোথাও নয় পদ্মে সুই্যং করাতে হবে। যে বাঙালিহিন্দু ২০১৬তে ঘাসফুলে বোতাম টিপেছে তাদের একটা বড় অংশের আঙুল এবার পদ্মের দিকে ঘোরাতে পারলেই বুথে বুথে গোপনকক্ষে নীরব বিপ্লব ঘটবে।
অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে কাকে মিত্র বাছবে বাঙালিহিন্দু ?
নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপির নেতা-কর্মি-সংগঠকরা যাবতীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব ভুলে ভোটারদের মন জয় করার কাজ তাঁদের মতো করে অবশ্যই চালিয়ে যাবেন । কিন্তু বাংলা জুড়ে ভাবান্দোলনের কাজটা চালাতে হবে আমাদের সবার। এই আমরা সবাই কারা ? এই আমরা সবাই হলাম, আমরা যারা চাই না বাঙালিহিন্দু আগামী তিরিশ বছর পরে পশ্চিমবাংলায় তার আধিপত্য হারাক। আমি খুব সচেতনভাবেই হিন্দু না বলে বাঙালিহিন্দু বলছি কারণ একটু চক্ষুষ্মান মাত্রই বুঝতে পারবেন বাঙালিহিন্দুর বিপদটা প্রায় ঘাড়ের উপর এসে পড়েছে। এই পরিস্থিতির রাজনৈতিক মোকাবিলার জন্যই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনা দরকার। এটা বাঙালিহিন্দুকে সবার আগে বুঝতে হবে। এবং বাঙালিহিন্দু যত দ্রুত এই সত্যটা হৃদয়ঙ্গম করতে পারবে ততই তার মঙ্গল।এখন প্রশ্ন হল তৃণমূলের পরিবর্তে কাকে ক্ষমতায় বসানো হলে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিহিন্দু একটু আপাত নিরাপত্তা বোধ করবে ? ফের সিপিএমকে ক্ষমতায় আনলে কাজ হবে কী ? বাঙালিহিন্দুর ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করতে যা যা কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার সিপিএম তা নেবে না। সবথেকে বড়কথা সিপিএম ইসলামিক মৌলবাদের দুষমণ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে ব্যর্থ। সিপিএমের বিরুদ্ধে আরও বড় অভিযোগ,এরা ৩৪ বছরের শাসনে লাখ,লাখ বাংলাদেশী অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর(হিন্দু উদ্বাস্তু নয়) হাতে রেশনকার্ড তুলে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের চরম সর্বনাশ করেছে।অতএব পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিহিন্দুকে বুঝতে হবে,পরিত্যক্ত সিপিএমকে আর মাটি থেকে তুলে আর ক্ষমতায় বসানো চলবে না। কংগ্রেসকে রাজ্যে ক্ষমতায় আনলে কি বাঙালিহিন্দুর কিছু উপকার হবে ? এই দলটা বাঙালিহিন্দুর ঐতিহাসিক দুশমন।১৯৪৭এর ১৫ই আগষ্টের মধ্যরাত থেকে বাঙালিহিন্দুর ভাগ্যাকাশে দুর্যোগের শুরু।এই দুর্যোগের জন্য দায়ি কংগ্রেস। পূর্ববাংলার ছিন্নমূল ,উদ্বাস্তু হিন্দুদের চরম দুঃখ দেখেও নেহেরুর চোখে জল আসে নি। পূর্ববঙ্গের বাঙালিহিন্দু শরণার্থিরা কোনওদিন কংগ্রেসকে ক্ষমা করে নি। করবেও না। বাঙালিহিন্দুর কল্যাণ আর কংগ্রেস কার্যতঃ বিপরীত শব্দ।
তাহলে বাঙালিহিন্দুর সামনে এই সংকটকালে স্বাভাবিক চয়ন বা ন্যাচারাল চয়েজ কোনটি ? এই প্রশ্নের একটিই উত্তর-বিজেপি। আবেগ নয় যুক্তি দিয়েই সিদ্ধান্তে পৌঁছুতে হবে আমাদের। বিজেপি সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে হিন্দু আত্মপরিচয়ের রাজনীতি করে।যে দায়বদ্ধতা থেকে বিজেপি অবশিষ্ট ভারতে হিন্দুত্বের রাজনীতি করে সেই দায়বদ্ধতা থেকেই বিজেপি পশ্চিমবঙ্গেও বাঙালিহিন্দুর আত্মপরিচয় নিয়ে, অস্মিতা নিয়ে রাজনীতি করতে বাধ্য। বিজেপির হিন্দিত্ব নিয়ে আমাদের কোনও আগ্রহ নেই কিন্তু বিজেপির হিন্দুত্বকে আমরা বর্ম হিসেবে ব্যবহার করব।করতেই হবে।এটাই আজকের পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক বাস্তবতা। অন্ততঃ বাঙালিহিন্দুদের জন্য।এইভাবে বাঙালিহিন্দুর ভাবদরিয়া আন্দোলিত করতে পারলে কিন্তু বাংলায় পরিবর্তনের পরিবর্তনও সম্ভব।নিরন্তর চর্চা থেকেই নতুন চেতনার জন্ম হয়।ভোটের দিন যে মানুষটি তৃণমূলের বুথঅফিস আগলাচ্ছেন তিনিই ভোটদান কক্ষে ঢুকে ইভিএমে পদ্মফুলের ঘরে বাটন টিপছেন পশ্চিমবঙ্গে ধীরেধীরে এমন রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় মাও জে দং বলেছিলেন সদর দফতরে কামান দাগো। আসুন আমরা বাঙালিহিন্দুর মস্তিষ্কে চেতনার গোলা দাগি। এটাই আমাদের সাংস্কৃতিক বিপ্লব।
শ্রী উত্তম দেব