থেমে গেল লড়াই| মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল হুগলি (Hooghly) জেলার পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত স্কুলছাত্র ঋষভ সিং| দীর্ঘ ৮ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার পর, শনিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ কলকাতার এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে ঋষভ| চলতি মাসের ১৪ তারিখ হুগলি (Hooghly) জেলার পোলবার কামদেবপুরে (Kamdevpur) চুঁচুড়ার (Chuchura)একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পুলকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মারার পর উল্টে গিয়েছিল রাস্তার ধারে নয়ানজুলিতে| ওই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিল ঋষভ সিং এবং দিব্যাংশ ভগত নামে দুই স্কুল পড়ুয়া| ওই দিনই গ্রিন করিডর করে দুই ছাত্রকে কলকাতার এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল|
ওই দিন থেকেই ভেন্টিলেশনে ছিল ঋষভ (Reshab)| তাঁর ফুসফুস অকেজো হয়ে গিয়েছিল| ফুসফুসে কাদা, জল থেকে যাওয়ায় শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল| আর তাতেই চিকিত্সকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন| শুক্রবারই হাসপাতালে তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, ঋষভের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে| চিকিত্সকদের শত চেষ্টা সত্ত্বেও, প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হল না ঋষভকে| শনিবার ভোরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে ঋষভ| এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রের খবর, শুক্রবার রাত দশটার পর ঋষভের শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে| কিডনিও স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল| রক্তে প্লেটলেট অস্বাভাবিক হারে কমে যায়|
ঋষভের বাড়ি শ্রীরামপুরের (Serampore) বেনেপাড়া লেনে| ছোট্ট ঋষভের অকাল-মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বেনেপাড়া লেনের বাসিন্দারা| শনিবার সকাল থেকেই স্থানীয় দোকানপাট বন্ধ ছিল| ৮ দিন পর শনিবার ঋষভ বাড়ি যাবে, চোখ বন্ধ করে| ঋষভের পরিবারের আবেদন, ঋষভের শরীর কাটাছেঁড়া হবে তা তাঁরা মেনে নিতে পারবেন না, তাই ময়নাতদন্ত যেন না করা হয়| যদিও, হাসপাতাল সূত্রের খবর, এই ধরনের ঘটনায় আইনগতভাবেই ময়নাতদন্ত জরুরি, তা ছাড়া ঘটনার তদন্তের জন্যও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রয়োজন| ছেলের অকাল-মৃত্যুতে বাক্যহার ঋষভের বাবা| এদিন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন ঋষভের বাবা|
এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতাল সূত্রের খবর, দুর্ঘটনায় আহত আর এক ছাত্র দিব্যাংশু ভগতের শারীরিক অবস্থা আগের থেকে ভাল রয়েছে| সঙ্কট পুরোপুরি না কাটলেও, তাঁর শারীরিক অবস্থা এখন কিছুটা স্থিতিশীল| তাঁকে ভেন্টিলেশন থেকে বাইরে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকরা|