আকাশপথে হামলা চালিয়ে আবার সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি ধ্বংস করল ভারতীয় সেনা। পশ্চিমের পরে এ বার পূর্ব সীমান্তে। পাকিস্তানের পরে মায়ানমারে। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি, মায়ানমারের সাগিয়াং প্রদেশে সোমবার গভীর রাতে ড্রোন হামলা চালিয়ে জঙ্গিগোষ্ঠী এনএসসিএন (খাপলাং-ইউংআং)-এর কয়েকটি শিবির ধ্বংস করেছে সেনা। যদিও সরকারি তরফে এখনও এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
অরুণাচল প্রদেশ সীমান্ত দিয়ে মায়ানমারের মাটিতে খাপলাং গোষ্ঠীর শিবিরে ওই হানাদারি হয়েছে বলেও প্রকাশিত খবরগুলিতে দাবি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তিন রাজ্যের সঙ্গে মায়ানমারের প্রায় ১৬৪৩ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে অরুণাচল-মায়ানমার সীমান্ত প্রায় ৫০০ কিলোমিটার। মায়ানমারে সাম্প্রতিক গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে সীমান্তে বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠনগুলির তৎপরতা বেড়েছে ফলে নজরদারি বাড়িয়েছে সেনা। সেই সঙ্গে মণিপুর ও অরুণাচলের সীমান্তবর্তী এলাকায় সক্রিয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চলছে।
কয়েক বছর আগে মায়ানমারে জঙ্গিশিবিরে কমান্ডো অভিযানও চালিয়েছিল ভারত। কিন্তু এই প্রথম অপারেশন সিঁদুরের কায়দায় আকাশপথে হামলা চালানোর কথা জানা গেল। প্রসঙ্গত, জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিল পর্যটক হত্যাকাণ্ডের জবাবে ৬ মে গভীর রাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের ন’টি জঙ্গিঘাঁটিতে আকাশপথে হামলা চালিয়েছিল সেনা। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের সেই অভিযানের পাঁচ মাস পরে আবার পড়শি দেশে অভিযানের ‘খবর’ জানা গেল। প্রসঙ্গত, নাগাল্যান্ড এবং মণিপুরে সক্রিয় এনএসসিএন (আইএম) গোষ্ঠীর সঙ্গে গত এক দশক ধরে কেন্দ্রের সংঘর্ষবিরতি চুক্তি বহাল রয়েছে।
অন্য দিকে, মায়ানমার সীমান্তে সক্রিয় এনএসসিএন (খাপলাং) জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে গত কয়েক বছরে একাধিকবার সেনা এবং অসম রাইফেল্সের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৭ সালে মায়ানমারে ওই গোষ্ঠীর প্রধান এসএস খাপলাংয়ের মৃত্যু হয়েছিল। তার পর সংগঠনটি আবার কয়েকটি গোষ্ঠীতে ভেঙে যায়। অরুণাচল-মায়ানমার সীমান্তের পাশাপাশি এনএসসিএন (খাপলাং-ইউংআং) গোষ্ঠীর সক্রিয়তা রয়েছে অসমেও। খাপলাং জীবিত থাকাকালীন ২০১৫-য় তাঁর সংগঠনকে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করেছিল নয়াদিল্লি। এর পরে আলফার পরেশ বরুয়া, কেএলওর জীবন সিংহ, এনডিএফবির বি সাউরাইগাউরার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইউএনএলএফডব্লিউ নামে একটি যৌথ মঞ্চও গড়েছিলেন খাপলাং। এনএসসিএন (খাপলাং-ইউংআং) এখন সেই মঞ্চের সদস্য।

