নৈহাটিতে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর ঘণ্টা দু’য়েকও কাটেনি। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেল রাজনৈতিক চাপানউতোর। গোটা ঘটনায় সরাসরি পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। বললেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ টাকা খেয়ে এখানে বেআইনি ১০০ কারখানা চালাতে দেয়।”
নৈহাটির দেবক এলাকার একটি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে শুক্রবার সকালে।
ইতিমধ্যেই তিন জনের মৃত্যু ও আট জনের গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘটনার পর ওই এলাকায় পৌঁছে যান অর্জুন। তিনি বলেন, “আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে বলেছি এই ঘটনার তদন্ত করতে। খতিয়ে দেখতে হবে এটা খাগড়াগড়ের মতো ঘটনা কিনা।”
বিস্ফোরণের ঘটনা যে মামুলি নয় তা স্থানীয়দের কথাতেই স্পষ্ট। শুধু নৈহাটি নয়, বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিল গঙ্গার ওপারের হুগলিও। চুঁচুড়ার আখনবাজার, প্রেমনগর এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন তাঁরাও কম্পন টের পেয়েছেন। অর্জুন এদিন বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যে যে আইন বলে কিছু নেই এই ঘটনা তারই প্রমাণ। পুলিশকেও টাকা দিয়ে পোস্টিং নিতে হয়। আর পুলিশও টাকা খেয়ে এসব বেআইনি কারখানা চালাতে দেয়।” তিনি আরও বলেন, “আমার তো সন্দেহ হচ্ছে এখানে বাজি ছাড়াও অন্য কোনও বিস্ফোরক মজুত করা ছিল কি না!”
এক বছর আগেও একবার বিস্ফোরণ ঘটেছিল এই কারখানায়। সেবার মারা গিয়েছিলেন পাঁচ জন। তার পরেও ওই বাজি কারখানা চলছিল পর্যাপ্ত সতর্কতা ছাড়াই। আর এতেই পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয়রা। পুলিশ জানিয়েছে, কোনও তেজস্ক্রিয় তৈরি হচ্ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকেই কারখানার মালিক নুর হুসেন পলাতক।
অর্জুন বলেন, “কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত করা উচিত। এখানকার পুলিশের উপর কোনও বিশ্বাস নেই মানুষের। খাগড়াগড়ের বেলাতেও পুলিশ বলেছিল গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে। এনআইএ তদন্ত করার পর আসল ব্যাপারটা সামনে আসে। এখানেও তেমন হচ্ছে না কে বলতে পারে।”
ঘটনাস্থলের রয়েছে নৈহাটি থানার পুলিশ ও দমকল। পুলিশ গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে, ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে। বিজেপির অভিযোগ, ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির খবর চাপা দিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে এলাকার শাসকদলের নেতারাও। যদিও তৃণমূলের দাবি, একটা ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।