পুলওয়ামা হামলার পর থেকে শুধু সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো নয়, জলপথেও সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা শুরু করেছে ভারত। ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়ান নেভির ৬০টি যুদ্ধজাহাজ ও ৮০টি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছে উত্তর আরব সাগরে পাক জলসীমার কাছে। এই যুদ্ধজাহাজের মধ্যে রয়েছে আইএনএস বিক্রমাদিত্য। এছাড়াও নিউক্লিয়ার সাবমেরিন চক্রকেও মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে। এই নৌবহর দেখেই পিছু হটেছে পাক নৌসেনা।
বালাকোটের বায়ুসেনা হামলার পরেই ভারতীয় সেনাবাহিনী, বায়ুসেনা ও নেভির প্রধানরা মিলে বিবৃতি দেন। সেখানেই নৌসেনার প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লাম্বা জানিয়েছিলেন, জলপথ দিয়ে এর আগেও আক্রমণ করেছে জঙ্গিরা। তাই জলপথকে সুরক্ষিত রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তারপরেই দেখা যায়, উত্তর আরব সাগরে প্রচুর পরিমাণ যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা শুরু হয়েছে।
নৌবাহিনীর মুখপাত্র ডি কে শর্মা বলেছেন, “ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার পরেই আইএনএস বিক্রমাদিত্যর নেতৃত্বে প্রচুর সংখ্যায় যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন ও যুদ্ধবিমান উত্তর আরব সাগরে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সেগুলি পাক জলসীমার কাছে অবস্থান করছে। পুরো এলাকার তদারকি করছে। আমরা সব পরিস্থিতির জন্য তৈরি আছি।”
ক্যাপ্টেন শর্মা আরও জানিয়েছেন, ১৯ জানুয়ারি থেকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে থিয়েটার লেবেল অপারেশনাল রেডিনেস এক্সারসাইজ ( TROPEX 19 ) চলছিল। এই এক্সারসাইজে অংশ নেওয়ার জন্যই ভারতীয় নৌবাহিনীর ৬০টি যুদ্ধজাহাজ ছাড়াও ইন্ডিয়ান কোস্টগার্ডের আরও ১২টি জাহাজ এবং প্রায় ৮০টি যুদ্ধবিমানকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার পর এই পুরো নৌবহরকে সেখান থেকে নিয়ে এসে মোতায়েন করা হয় উত্তর আরব সাগরে।
নৌসেনা সূত্রে খবর, যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন ও যুদ্ধবিমানের এত বেশ সংখ্যা দেখে পাক নৌবাহিনী মাকরান উপকূলের কাছেই অবস্থান করছে। সমুদ্রের মধ্যে আসার সাহস হয়নি তাদের। এই মুহূর্তে মার্কিন নৌবহরের পরেই অন্যতম শক্তিশালী নৌবহর রয়েছে ভারতীয় নৌসেনার। আইএনএস বিক্রমাদিত্য ও আইএনএস বিক্রান্তের অন্তর্ভুক্তিতে এই নৌবহর আরও শক্তিশালী হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে চক্রর মতো নিউক্লিয়ার সাবমেরিন। অর্থাৎ সমুদ্রের মধ্যেও যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন ও যুদ্ধবিমান এই তিনভাবে শত্রুপক্ষের উপর আঘাত হানতে পারে ভারতীয় নৌসেনা। পাকিস্তান যাতে কোনওভাবেই জলপথে দেশে সন্ত্রাস সৃষ্টি না করতে পারে, তার জন্য বদ্ধপরিকর ইন্ডিয়ান নেভি।