বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ডিভিশন বেঞ্চের স্থগিতাদেশ, যোগেশচন্দ্র তদন্তে নয় সিআইডি

যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল কলেজ সংক্রান্ত মামলায় আবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় গত ১২ অক্টোবর যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের মামলায় অধ্যক্ষ সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েন‌্‌কার বিরুদ্ধে সিআইডি তদন্তের যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, বুধবার তাতে স্থগিতাদেশ দিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ।

সুনন্দার বিরুদ্ধে নথি জাল করে কলেজের শিক্ষক পদে যোগ দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, গত পাঁচ বছরে কলকাতা পুলিশের অ্যান্টি ফ্রড সেকশন ওই মামলার তদন্তের কিনারা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই তদন্তের ভার সিআইডি-কে দেওয়া হল। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ ছিল, সুনন্দাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিআইডি। প্রয়োজনে হেফাজতেও নিতে পারবে। কিন্তু বুধবার দুই বিচারপতির বেঞ্চ সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এর আগে যোগেশচন্দ্র ল কলেজের অধ্যক্ষ সুনন্দাকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু গত ১১ অক্টোবর সেই নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের অক্টোবরে যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের পরিচালন সমিতির (গভর্নিং বডি) প্রাক্তন সদস্য অধ্যক্ষ সুনন্দার বিরুদ্ধে নথি জালিয়াতি এবং আর্থিক অনিয়মের মামলা করেন। যার প্রেক্ষিতে নিম্ন আদালত এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিয়েছিল। ওই বছরের নভেম্বরে এফআইআর দায়ের করে কলকাতা পুলিশের চারু মার্কেট থানা তদন্ত শুরু করে। পরে তা যায় কলকাতা পুলিশের অ্যান্টি ফ্রড সেকশনে। সুনন্দার বিরুদ্ধে যে সব ধারায় মামলা করা হয়েছে তাতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অন্তত ১০ বছরের সাজা হতে পারে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় দ্রুত তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছিলেন, ১৮ অক্টোবর তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে হবে সিআইডিকে। ঘটনাচক্রে, সেই তারিখেই জারি হল ডিভিশন বেঞ্চের স্থগিতাদেশ।

ওই মামলার সময় প্রাক্তন অধ্যক্ষ মানিক ভট্টাচার্য (বর্তমানে তৃণমূল বিধায়ক) তদন্তে সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ। কিন্তু তা সত্ত্বেও অ্যান্টি ফ্রড সেকশন কোনও পদক্ষেপ করেনি বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, অন্য মামলায় মানিক ভট্টাচার্য জেলে রয়েছেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও নির্দেশ দেওয়া হবে না। অতীতে নিয়োগ দুর্নীতি-সহ কয়েকটি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেও যোগেশচন্দ্র ল কলেজ মামলায় সিবিআই তদন্তের দাবি খারিজ করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘এটি একটি স্থানীয় মামলা। সিআইডি তদন্তেরই উপযুক্ত।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.