আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। চাঁদের মাটি স্পর্শ করতে চলেছেচন্দ্রযান ৩। ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার (আজ) সন্ধ্যায় ঘড়ির কাঁটা ৬টা ৪মিনিটের ঘরে কখন পৌঁছবে সেই অপেক্ষায় রয়েছে গোটাদেশ। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে,চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফ্টল্যান্ডিং করবে চন্দ্রযান ৩-র ল্যান্ডার বিক্রম। তার সঙ্গে চাঁদের মাটিতে পৌঁছবে রোভার প্রজ্ঞানও।
চাঁদের বুকে অবতরণের সেই দৃশ্য বুধবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিট থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে ইসরোর ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, ইউটিউবে। ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা) রাষ্ট্রগোষ্ঠীর শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে এই ইতিহাসের সাক্ষী থাকতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত থাকবেন তিনি। বুধবার সন্ধ্যায় সমস্ত স্কুল খোলা থাকবে বলে জানা গিয়েছে। কৌতূহলী ছাত্রছাত্রীরা স্কুল থেকে অনলাইন মাধ্যমে চন্দ্রযান ৩-এর অবতরণ দেখতে পারবেন। এমনকি মহাকাশ বিশেষজ্ঞেরাও এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী থাকার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। তাঁরাও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জমায়েতের পরিকল্পনা করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। চাঁদের মাটি ছোঁয়ার আগের ‘১৫ মিনিট’ অত্যন্ত ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মনে করছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
২০০৯ সালে ইসরোর চন্দ্রযান ১-এর অনুসন্ধানে থাকা নাসার একটি যন্ত্র দ্বারা চাঁদের পৃষ্ঠে জলের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছিল। ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফ্ট ল্যান্ডিং করার সময় খুব সন্তর্পণে জায়গা নির্বাচন করা হবে। ইসরোর বিজ্ঞানীদের আশা, চন্দ্রপৃষ্ঠে যেখানে জলের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে সেখানে ‘লুনার ওয়াটার আইস’ বা বরফের খোঁজও মিলতে পারে। জলের সন্ধান মিললে তা মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাছে মূল্যবান সম্পদ হয়ে ধরা দেবে বলেই জানিয়েছে ইসরো।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এর আগে কোনও দেশই মহাকাশযান পাঠাতে পারেনি। ফলে বুধবারের পরীক্ষায় ইসরো সফল হলে ইতিহাস তৈরি করবে ভারত। এই যাত্রায় সফল হলে আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিনের পর ভারত বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে নজির গড়বে। ২০১৯ সালে চন্দ্রযান ২ পাঠিয়েছিল ভারত। কিন্তু সফল হয়নি। চাঁদের মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়েছিল সেই মহাকাশযান। অতীতের সেই ভুল থেকে অনেক ত্রুটি শুধরে এ বার সাবধানী ইসরো। গত রবিবার চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মহাকাশযান নামাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে রাশিয়া। চাঁদের মাটিতে ভেঙে পড়ে লুনা-২৫। তবে ভারতের চন্দ্রাভিযানের সাফল্য নিয়ে আশাবাদী ইসরোর বিজ্ঞানী থেকে গোটা দেশবাসী। এই অভিযানের সাফল্যের কামনায় প্রার্থনা চলছে দেশ জুড়ে।