তিন মাস আগে যাঁকে অ্যারেস্ট করিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, জেলে থাকা সেই উজ্জ্বল কাদরিকেই ভোটের আগে ‘জামিন’ করিয়ে দেওয়ার কথা বললেন অনুব্রত মণ্ডল।
রবিবার সিউড়ি রবীন্দ্র সদনে বীরভূম লোকসভার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে কর্মী সভা করেন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, বীরভূম জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায়। খয়রাশোলের তৃণমূল ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষ খুনের মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত উজ্জ্বল কাদরির জামিনের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন তাঁকে। সভা মঞ্চ থেকে অনুব্রত বলেন, “উজ্বলের জামিনের ব্যবস্থা করো মলয়দা!”
মাস তিনেক আগে বীরভূমের কাঁকড়তলা থানা এলাকায় তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ব্যাপক গোলাগুলি চলার অভিযোগ ওঠে। তার পরদিনই বোলপুরে একটি দলীয় কর্মসূচি থেকে বীরভূমের কেষ্ট নির্দেশ দেন, “ওখানে বোম মারার নায়ক উজ্বল কাদরি। ওকে অ্যারেস্ট করে ভিতরে ঢুকিয়ে দাও।” লোকে বলে অনুব্রতই বীরভূমের মুখ্যমন্ত্রী, তিনিই পুলিশ সুপার, তিনিই জেলা শাসক। এমন দাপট যাঁর, তাঁর মুখ থেকে কথা বেরনো মানেই কাজ হয়ে যাওয়া। হয়েছিলও তাই। উজ্জ্বলকে অ্যারেস্ট করে পুলিশ। দীপক ঘোষ খুনের মামলায় প্রথমে উজ্জ্বলের নাম না থাকলেও পরে যুক্ত করা হয়। কিন্তু ভোটের আগে তাঁকেই জামিন করিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন তিনি।
সভা শেষ হওয়ার পর এ ব্যাপারে বীরভূমের কেষ্টবাবুকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করলে, একপাশে শতাব্দী রায় ও আরএক পাশে রাজ্যের মন্ত্রী আশিষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বসিয়ে অনুব্রত বলেন, “ওর ৯০ দিন হয়ে গিয়েছে। তাই বলেছি। আইন আইনের পথে চলবে।” তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, এ বার কি তাহলে ভোটের কাজে উজ্জ্বলকে লাগানো হবে? অনুব্রতর সাফ জবাব, “সেটা কমিটি ঠিক করবে। আমি কী করে বলব!”
এ ব্যাপারে বিজেপি বীরভূম জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলেন, “এটাই অনুব্রতবাবুদের পার্টির অবস্থা। ভোটে সাধারণ মানুষের উপর আস্থা নেই। জেল থেকে আসামী ছাড়িয়ে এনে ভোট করাতে হচ্ছে।”