ঐতিহ্যবাহী উপাসনাগৃহে বসে সম্প্রতি দুর্গাপুজো-সহ বেশ কিছু বিষয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এমন কিছু মন্তব্য করেছিলেন, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সূত্রের খবর, তাঁর ওই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এ বার বিশ্বভারতীর কাছে রিপোর্ট চাইল প্রধানমন্ত্রীর দফতর (পিএমও)। ওই সূত্রেই আরও খবর, উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ করেছিল শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট। যদিও এ বিষয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করতে চাননি।
সম্প্রতি বেশ কয়েক বার উপাসনা থেকে তাঁর সমালোচকদের একের পর এক জবাব দিয়ে যাচ্ছিলেন উপাচার্য। মার্চের সাপ্তাহিক উপাসনা থেকে বসন্ত উৎসব প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘‘যাঁরা প্রথার কথা বলেন, তাঁরা বসন্ত উৎসবের নামে বসন্ত-তাণ্ডব চান। আমরা সেই বসন্ত-তাণ্ডবের পক্ষপাতী নই।’’ ওই বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের একাংশকেও নিশানা করে তাঁদের ‘অশিক্ষিত’ এবং ‘অল্পশিক্ষিত’ বলে তোপ দাগেন বিদ্যুৎ। এর পরে দুর্গাপুজো প্রসঙ্গে বলেন, “দুর্গাপুজো শুরু হয় ব্রিটিশদের পদলেহনের জন্য।’’ অভিযোগ, এই নিয়ে সে দিন আরও কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি।
এর প্রতিবাদে আশ্রমিক, প্রাক্তনী-সহ ১৭৫ জনের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি দেওয়া হয় শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে। ট্রাস্টের তরফে উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী, রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানানো হয়। ওই চিঠিতে ট্রাস্টের আবেদন ছিল, উপাসনাগৃহকে ব্যবহার করে উপাচার্যের বিতর্কিত মন্তব্য ও কুকথা বন্ধ হোক। সূত্রের খবর, সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতোর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, উপাচার্য কেন এই ধরনের কথা বলেছেন। ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার বলেন, “উপাসনাগৃহ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে সেখানে উপাসনা হয়েছে। কখনওই কেউ এই ধরনের বক্তব্য রাখেননি। এটা বন্ধ হওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রীর দফতর এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে বলেই আশা।”