‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’-এর পক্ষে দোলপূর্ণিমা পরবর্তী হোলি উৎসবের দিনে বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের অন্তর্গত বেলাকুঁড়ি গ্রামে সমাজসেবী ছাত্র অসীমলাল মুখার্জির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হল ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য পথ প্রদর্শন ও কার্যকরী সহযোগিতার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা কার্যক্রমের সূত্রপাত। গ্রামের তিরিশটি ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে তৈরি হচ্ছে তথ্য সংগ্রহের কাজ।
তাদের বিস্তারিত পরিচয় নেওয়া হচ্ছে, তাদের পূর্ববর্তী সাফল্যের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে, আগামী সম্ভাবনার কথাও লেখা হচ্ছে। এই তথ্য সংগ্রহের কাজ যেমন চলবে ধারাবাহিকভাবে, তেমনি সময়ে সময়ে তাদের সচেতন করানো হবে নানান বিষয়ে। দেখা হবে কার কোন বিষয়ে আগ্রহ ও ভালোবাসা। দেখা হবে কোন ছাত্রের কোন দিকে পারদর্শিতা, কোন শখ, কোন ইচ্ছে তাদের মনের গহনে, কোন পথে তাদের সর্বোত্তম বিকাশ লাভ সম্ভব।বছরের নানান সময় তাদের সঙ্গে মিশবেন প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাবিদ এবং উচ্চ শ্রেণির মেধাবী ছাত্রেরা। সব কিছু লিপিবদ্ধ আকারে রাখার পরই শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, সে কোনো বিষয় নিয়ে উচ্চতর শিক্ষালাভ করবে। জানিয়ে দেওয়া হবে তাদের অভিভাবকদের। সাধ্যমতো যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হবে নানান মহলে, যাতে সহায়তা পান।
বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও অধ্যাপক ড: কল্যাণ চক্রবর্তী প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন এই কার্যক্রমের। ড: চক্রবর্তী জানান, “শিক্ষার্থীরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তারা এক একটি নতুন চারাগাছ। তাদেরকে স্বামী বিবেকানন্দের দেখানো পথে চারিত্রিকভাবে গড়ে তুলতে হবে। তারাই পারে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে। ওরা সবুজ, ওরা কাঁচা। আধ মরাদের ঘা মেরে ওরাই বাঁচিয়ে তুলতে পারে। ওদের হাতেই ‘নতুন স্বাবলম্বী ভারত’ গড়ে উঠবে। ওদের গড়ে তোলা ভারত ‘বিশ্বগুরু’র আসন দখল করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”
এদিনের অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন, বেলকুড়ি গ্রাম এবং আশপাশের গ্রামগুলির স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এবং ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’-এর পক্ষ থেকে অসীম লাল মুখার্জি। আজকের দিনে শিক্ষার গুরুত্ব প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন যে, “আজকের যুব সমাজ আদর্শহীনতায় ভুগছে। তারা সঠিক পথের সন্ধান পাচ্ছে না। স্বামী বিবেকানন্দের জীবনবোধ ও তার দেখানো পথে বর্তমান যুব সমাজ যাতে নিজেদের চরিত্র নির্মাণ করে, তাঁর আদর্শে যাতে দেশের কাজে এগিয়ে এসে দেশ মাতৃকার মঙ্গল সাধনে ব্রতী হয়– সেই উদ্দেশ্যেই আজকের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।’
গ্ৰামের মানুষ এবং বাচ্চাদের অভিভাবকরা খুব আনন্দিত হন এবং দেশের মাটি কল্যাণ মন্দিরকে তাঁরা একত্রে স্বাগত জানান। গ্রামের পক্ষ থেকে জানানো হয় “এ ধরনের উদ্যোগে যথেষ্ট প্রশংসনীয় এবং আমরা কল্যাণ মন্দির এর পাশে থাকব……..আমরা এই উদ্যোগে খুব খুশি।” এছাড়াও দেখা যায় বাচ্চাদের মধ্যে আনন্দের ঢেউ ওঠে, তারা খুব খুশি হয়। বাচ্চাদের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। এইভাবেই অনুষ্ঠান পরিচালনা করে দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির।