‘রাস্তায় দেখে প্রেম, পরে বিয়ে’, রায়গঞ্জের যুবকের সেই দ্বিতীয় স্ত্রীর দেহ মিলল নির্মীয়মাণ বাড়িতে

নির্মীয়মাণ ঘর থেকে উদ্ধার হল এক বধূর দেহ। আটক করা হয়েছে মৃতার স্বামীকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, স্ত্রীকে খুন করে দেহ লোপাট করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত। বুধবার এই ঘটনা ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মিলনপাড়া এলাকায়। পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে দেহ। ওই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

মিলনপাড়ার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, রাখাল দাস নামে এক জনের বাড়িতে মাসখানেক ধরে দ্বিতীয় স্ত্রী পুলতা বর্মণকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন সুমিত বিশ্বাস নামে এক যুবক। মঙ্গলবার রাতে সুমিত এবং পুলতার মধ্যে অশান্তি বাধে। সুমিত এর পর পুলতাকে খুন করে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, সুমিত পুলতার দেহ লোপাট করার জন্য ভাড়া বাড়ি থেকে প্রায় দুশো মিটার দূরে রাস্তা দিয়ে টেনে নিয়ে গিয়ে তাঁর নির্মীয়মাণ বাড়িতে নিয়ে লুকিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ। এর পর স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে ওই নির্মীয়মান বাড়ি থেকে দেহ উদ্ধার করে।

সুমিত দাবি করেছেন, তাঁর স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘স্ত্রী মারা গিয়েছে গলায় ফাঁস দিয়ে। আমি ওকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু পারিনি।’’ তাঁর দাবি, মঙ্গলবার রাত ২টো থেকে আড়াইটের মধ্যে ঘটেছে এই ঘটনা। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে অশান্তি হয়েছিল তা স্বীকার করেছেন সুমিত। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমাদের মধ্যে পয়সাকড়ি নিয়ে অশান্তি হয়েছিল রাতে। এক যুবকের সঙ্গে কথা বলার জন্য ওকে থাপ্পড় মেরেছিলাম।’’ সুমিত স্বীকার করেছেন, তিনিই তাঁর স্ত্রীর ঝুলন্ত দেহ নামিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দেহ আমি নামিয়েছি। কারণ, তখন জ্ঞান ছিল ওর। ওকে বাঁচানোর জন্য ভাড়া বাড়ি থেকে ওই বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলাম। কারও ওখানে আমার আত্মীয়েরা আছে। এখানে কাউকে ডেকে পাইনি।’’ সুমিতের সংযোজন, ‘‘ওর বাপের বাড়ি কোথায় জানি না। রাস্তায় দেখে প্রেম হয়েছিল।’’

অবশ্য খোকন দাস নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘ওদের মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত। তবে গলায় ফাঁস দিলে কারও রক্ত বেরোয় না। এখানে রক্ত পড়েছিল। আমাদের সন্দেহ খুন করেছে সুমিত।’’ পুলিশ সুমিতকে আটক করেছে। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতার জানিয়েছেন, ওই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.