অধ্যাপক ড: শঙ্কর কুমার সান্যাল পুনরায় 1932 সালে প্রতিষ্ঠিত সর্ব ভারতীয় হরিজন সেবক সংঘের চেন্নাইতে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় মহা অধিবেশনে তৃতীয় বার সর্বসম্মতি ক্রমে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। চেন্নাইতে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় মহা সম্মেলনে ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যের প্রবীণ গান্ধীবাদী নেতৃবৃন্দ, প্রাক্তন সাংসদ, প্রশাসনিক কর্তা, উপাচার্য, শিক্ষাবিদ, সেনাকর্তা, প্রযুক্তিবিদগণের উপস্থিতিতে প্রাক্তন সাংসদ ও ভারত সরকারের কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ পর্ষদের সভানেত্রী ডঃ প্রেমা ক্যারিয়াপ্পার সভানেতৃত্বে শ্রী সান্যাল পুনর্নিবাচিত হন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ যোগ্য 2015 সালে আমেরিকার সল্টলেক সিটিতে ষষ্ঠ বিশ্ব ধর্ম মহাসভাতে এবং 2018তে কানাডার টরোন্টোতে বিশ্ব ধর্ম মহা সম্মেলনে বিশিষ্ট গান্ধীবাদী নেতা ডঃ শঙ্কর কুমার সান্যাল আমন্ত্রিত হয়ে গান্ধীজীর মতাদর্শ, শান্তি, ভালবাসা, সংহতি, বিশ্বভ্রাতৃত্বের কথা তুলে ধরেন।
বিশ্বের 80টি দেশের 50টি ধর্মের প্রায় 10হাজার ভিন্ন মতাদর্শের প্রতিনিধিগণ এখানে উপস্থিত ছিলেন। আমরা সবাই জানি 1893 খ্রীস্টাব্দে চিকাগো শহরে এই বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় স্বামীজী হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
বিশ্ব ধর্ম মহাসভাতে গান্ধীবাদী প্রতিনিধি দলের নেতা হিসাবে ডঃ সান্যাল আমন্ত্রিত হয়ে গান্ধীজীর মতাদর্শ, শান্তি, ভালবাসা, অহিংসা ও সহিষ্ণুতার ওপর তাঁর বক্তব্য রাখেন। এখানে উল্লেখ্য যে এই প্রথম গান্ধীবাদী প্রতিনিধি দল এই পার্লামেন্টে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। এটা নিঃসন্দেহে সমস্ত গান্ধী আদর্শে বিশ্বাসী সকলের কাছে এক গৌরবোজ্জ্বল মুহূর্ত ছিল।
বর্তমানে শ্রী সান্যাল 1932 সালে মহাত্মা গান্ধী প্রতিষ্ঠিত সর্বভারতীয় হরিজন সেবক সংঘের সভাপতির সম্মানজনক পদে অধিষ্ঠিত। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে শ্রী সান্যালই এই পদে প্রথম অধিষ্ঠিত হন। সংঘের পূর্ববর্তী সভাপতি ছিলেন জি. ডি. বিড়লা, মাতা রামেশ্বরী নেহেরু, পদ্মবিভূষণ দিদি নির্মলা দেশপাণ্ডের মতো প্রখ্যাত স্বনামধন্য ব্যক্তিগণ।
শ্রী সান্যাল অখিল ভারতীয় প্রাকৃতিক চিকিৎসা পরিষদ, পশ্চিমবঙ্গ গান্ধী স্মারক নিধি, পূর্ব কোলকাতা গান্ধী স্মারক সমিতি-এর সভাপতি। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংগে যুক্ত থেকে পঞ্চাশ বছর তাঁর বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ করে যাচ্ছেন।
শ্রী সান্যাল শান্তি, প্রেম, সংহতি ও ভ্রাতৃত্বের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই কাশ্মীর সহ দেশের বিভিন্ন উপদ্রুত প্রান্তে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে গান্ধী আদর্শে অনুষ্ঠিত ইটালী, ফ্রান্স,সুইজারল্যাণ্ড, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, চীন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতবর্ষের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। শ্রী সান্যাল দক্ষিণ আফ্রিকায় মহাত্মা গান্ধীর পৌত্রী শ্রীমতি এলা গান্ধীর আমন্ত্রণে গান্ধী ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট এবং কোয়া-জুলু নাটাল সরকারের সহযোগে ডারবান ইউনিভারসিটি অফ টেকনোলজি-তে গান্ধীজীর সত্যাগ্রহের শতবর্ষে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পনেরো সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
শ্রী সান্যাল একদিকে একনিষ্ঠ গান্ধীবাদী হিসাবে যেমন সমাজসেবার কাজে নিয়োজিত অন্যদিকে কোলকাতা হাইকোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ও বহু কর্পোরেট সেক্টরের উচ্চপদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইণ্ডিয়া, বেঙ্গল সার্কেল-এর ডাইরেক্টর এবং 2002-2018 পর্যন্ত হাওড়া চেম্বার অফ কমার্স এণ্ড ইণ্ডাস্ট্রী-এর সভাপতি হিসাবে হাওড়ার ক্ষুদ্র ও ছোটো শিল্প সমূহের উন্নতির জন্য সক্রিয় ছিলেন।
শ্রী সান্যালের বহুমুখী এবং বহুমাত্রিক কার্যকলাপের জন্য বহু সাম্মানিক পুরস্কার অর্জন করেছেন। ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জ্ঞানী জৈল সিং দ্বারা প্রদত্ত ‘ন্যাশনাল ইউনিটি এওয়ার্ড’ খাদি কমিশন-এর চেয়ারম্যান শ্রী সুরেন্দ্রমোহন দ্বারা ‘ননকনভেনশনাল এনার্জি এওয়ার্ড, গ্লোবাল এন.আর.আই দ্বারা ‘মুনিশ রাজা মেমোরিয়াল এওয়ার্ড, এডিটোরিয়াল বোর্ড অফ ইনটারন্যাশনাল বায়োগ্রাফিকাল সেন্টার,কেমব্রিজ,ইংলণ্ড দ্বারা ইনটারন্যাশনাল ম্যান অফ দি ইয়ার 1997-98 দি ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ প্রোমোশান ইন্সটিটিউট, নিউ দিল্লি দ্বারা ‘এম.এস.পি.আই আউটস্ট্যাণ্ডিং পারসোনালিটিজ – 1998’ ক্যালকাটা ইউনিভারসিটি-এর উপাচার্য ড: আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারা ‘ন্যাশনাল ইনটিগ্রেশন এণ্ড সোশ্যাল ওয়ার্ক এওয়ার্ড, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্বাধীনতা পরিষদ, বাংলাদেশ দ্বারা ‘বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমান ইনটারন্যাশনাল এওয়ার্ড, ইণ্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এণ্ড বিজনেশ ম্যানেজমেন্ট, কোলকাতা দ্বারা ‘কর্পোরেট এনার্জি ম্যানেজমেন্ট এওয়ার্ড, উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপাল ড: কৃষ্ণকান্ত পল দ্বারা গঙ্গা এয়ার্ড, চৌধুরী রণবীর সিং হুদা জাতীয় সংহতি পুরস্কার, ‘প্রফুল্ল চন্দ্র সেন মেমোরিয়াল এওয়ার্ড ইত্যাদিতে ভূষিত হয়েছেন।