সাদা-কালো ছবি। সন্দেহ নেই এ ছবি অন্তত কয়েক দশক আগের। গাল ভর্তি কালো দাড়ি, মাথার চুলেও তখন তারুণ্য। মঞ্চে বসে আছেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। মঞ্চের ব্যাকড্রপে লাগানো ব্যানারে লেখা ৩৭০ ধারা আর সন্ত্রাসবাদের অবসান চাই।
এক কালে যে দাবিতে আন্দোলন করেছিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের নেতা, আজ তিনিই দেশের প্রধানমন্ত্রী। দ্বিতীয়বার কুর্সিতে বসার দু’মাস পেরোতে না পেরোতেই সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হল। সংবিধান থেকে মুছে দেওয়া হল ৩৭০ ধারা। উঠে গেল জম্মু ও কাশ্মীরের সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা। সেই সাদা-কালো পুরনো ছবিই টুইট করে বিজেপি-র অন্যতম সাধারণ সম্পাদক রাম মাধব লিখলেন ‘প্রতিশ্রুতি পূরণ হল।’ অন্য একটি টুইটে তিনি লেখেন, “আজকের দিনটি গৌরবের দিন। সাত দশক ধরে দেশের মানুষ যা চেয়েছিলন, আজ তা বাস্তবায়িত হল।”
আরএসএস থেকে উঠে আসা নেতা রাম মাধব আরও বলেছেন, “সবাই জানেন ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি আমাদের মতাদর্শগত অবস্থান থেকেই চাওয়া ছিল। অনেকেই তা চাইতেন। কিন্তু বাস্তবায়িত হওয়াটা একটা ইতিহাস।” প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও টুইট করে লিখেছেন, “যে ঐতিহাসিক ভুল হয়েছিল, আজ তার সংশোধন হল।”
জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এই আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন। গিয়েছিলেন উপত্যকাতেও। সেই সূত্র ধরেই বাংলার বিজেপি নেতারা বলছেন, আজ বাঙালিরও গর্বের দিন।
সোমবার সকালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ক্যাবিনেটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রস্তাব করেন ৩৭০ ধারা বিলোপের। তা পাশও হয়ে যায় মোদী মন্ত্রিসভায়। এরপর আইনমন্ত্রকের ড্রাফট চলে যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে। তাতে সিলমোহর দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নেয় জম্মু-কাশ্মীর আর লাদাখ হবে আলাদা কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল। এ বযাপারেও সেখানকার মানুষের ইচ্ছের মর্যাদাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে দাবি কেন্দ্রের।