কালের কন্ঠের অধিকাংশ মন্তব্যকারীর স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ উদযাপন লক্ষ্য করার মতো

জেনারেল বিপিন রাওয়াতের দুর্ভাগ্যজনক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই নজর রাখছিলাম দুই দেশের দুই বহুল প্রচলিত সংবাদপত্রের ফেসবুক পেজের কমেন্ট বক্সে। ভারতবর্ষের এই শোকের দিনে দুই দেশের সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া কি হয় মূলত সেটা বোঝার জন্যে। প্রথমটি পাকিস্তানের প্রবাদপ্রতিম সংবাদপত্র “ডন” দ্বিতীয়টি বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত খবরের কাগজ “কালের কন্ঠ”।

ডন পত্রিকার কমেন্ট বক্সে লক্ষ্য করে দেখলাম বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু মানুষ উল্লাস প্রকাশ করলেও বেশিরভাগ পাকিস্তানী নাগরিক রাওয়াতজীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছে। কমিটেড শত্রুর আকস্মিক মৃত্যুতে যারা আনন্দে আত্মহারা হয়ে উল্লাস প্রকাশ করছে তাদেরকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ তিরস্কারও করছে। অপরপক্ষে কালের কন্ঠের অধিকাংশ মন্তব্যকারীর স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ উদযাপন লক্ষ্য করার মতো। বিপিন রাওয়াত জীবিত অবস্থায় পাকিস্তানকে একের পর এক অনেক ধাক্কা দিয়েছেন। সার্জিকাল স্ট্রাইক, বালাকোট এয়ার রেড অনেকের মতে রাওয়াতজীরই মস্তিষ্ক প্রসূত। তা সত্ত্বেও অন্তত পাকিস্তানের ইংলিশ এডুকেটেড নেটিজেনদের এই সহমর্মিতা আমাকে আশ্চর্য করেছে। অপরপক্ষে আমার জানামতে উনি বেঁচে থাকতে বাংলাদেশের কোন অনিষ্ট করেননি। তা সত্ত্বেও সাধারণ বাংলাদেশীদের ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সর্বাধীনায়কের দুর্ভাগ্যজনক অকাল মৃত্যুতে এই অকাল ঈদ উদযাপনের আহ্বান যথেষ্ট উদ্বেগজনক। মনে রাখতে হবে বিপিন রাওয়াত কিন্তু কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন না উনি ছিলেন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি পেশাদার বাহিনীর সর্বাধিনায়ক যে বাহিনী সর্বাত্মক আত্মত্যাগ করেছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ বাংলাদেশীদের পক্ষে এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে। বিষয়টি অ্যালার্মিং। মনে রাখতে হবে ভারত বিভাজনের দায়ী “মুসলিম লীগ” নামক অশুভ শক্তিটি লাহোরে নয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আমাদের অনেকের পিতৃ পুরুষের ভিটে ঢাকা শহরে ১৯০৬ খ্রীষ্টাব্দে ঢাকার নবাব সলিমুল্লার খাঁর পৌরহিত্বে।

BK Gupta

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.