মাঠের নব্বই মিনিট একে অপরের প্রতিপক্ষ হতে পারে। কিন্তু সে লড়াইয়ের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই ফুটবলারদের মধ্যে আত্মিক সম্পর্কের। আর সেই কারণেই ডার্বির মঞ্চে সব লড়াইকে ছাপিয়ে মুগ্ধ করল শুভাশিস বসুর মানবিকতা। শনিবার ডার্বির হিরো হয়তো জনি কাউকো। বা গোল করে নায়ক হয়েছেন রয় কৃষ্ণ, মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসোরা। কিন্তু ফুটবল মহল থেকে শুরু করে নেটপাড়া সকলের মন জয় করে নিয়েছেন শুভাশিস বসু।
ম্যাচের ২৩ মিনিটে যখন অরিন্দ ভট্টাচার্যের ভুলে লিস্টন কোলাসো এটিকে মোহনবাগানের হয়ে তিন নম্বর গোলটি করেন। সে সময়ে চোট পেয়ে এবং নিজের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য যন্ত্রণায় মাঠের মধ্যেই উপুড় হয়ে পড়ে ছটফট করছিলেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
আসলে এটিকে মোহনবাগানের তৃতীয় গোলটির জন্য অরিন্দমের দোষই বেশি। তবে সবুজ-মেরুনের আক্রমণে একেবারে ছন্নছাড়া দশা হয়ে পড়েছিল লাল-হলুদের রক্ষণ। এই পরিস্থিতিতে ম্যাচের ২৩ মিনিট নাগাদ লিস্টন কোলাসো একটি বল নিয়ে বক্সের ভিতর ঢুকছেন দেখেই, গোল ছেড়ে বেরিয়ে এসে সেই আক্রমণ প্রতিহত করতে যান অরিন্দম। কিন্তু দুরন্ত ছন্দে থাকা লিস্টন অরিন্দমকে ডজ দিয়ে ফাঁকা গোলে বল জড়িয়ে সুন্দর ভাবে ৩-০ এগিয়ে দেন সবুজ-মেরুনকে। আর কোলাসোকে আটকাতে গিয়েই চোট পান অরিন্দম। সেই সঙ্গে নিজের ভুলে গোল হজম করার যন্ত্রণা তো ছিলই।
লিস্টন, রয় কৃষ্ণরা যখন গোলের পর উচ্ছ্বাসে ভাসছেন, তখন অরিন্দমকে ছটফট করতে দেখে এগিয়ে আসেন শুভাশিস বসু। গোলের অরিন্দমকে সান্ত্বনা দেন। জানতে চান কী সমস্যা হচ্ছে। ওই সময়ে অরিন্দমের দিকে বিপক্ষের শুভাশিসই ভরসার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। লাল-হলুদ কিপারের পাশে তখন নিজের দলের ফুটবলাররাও ছিলেন না। আর শুভাশিসের এই ব্যবহারেই মুগ্ধ হয়েছে ফুটবল মহল।
শুধু শুভাশিস বলে নয়, যখন অরিন্দম চোটের কারণে মাঠ ছাড়ছিলেন, তখন দেখা যায় তাঁকে জড়িয়ে ধরেছেন রয় কৃষ্ণ। লেনি রডরিগেজ, হুগো বৌমাসরা এসেও সান্ত্বনা দিয়ে যান। বিপক্ষ দলের প্লেয়ারদের এই সৌজন্যে আবেগপ্রবণ ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান নির্বিশেষে সব ফুটবলপ্রেমীরাই।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য ৩-০ গোলেই হারতে হল এসসি ইস্টবেঙ্গলকে। আর এই তিন গোলই হজম করতে হয়েছে অরিন্দমকে। ২৩ মিনিটের মধ্যে তিন গোল তিনি হজম করেন। এ দিন গোটা ম্যাচে গোলমুখী কোনও শটই মারতে পারেননি দিয়াজের ছেলেল। ম্যাচটি এক তরফা খেলেই জিতে গেল এটিকে মোহনবাগান।