এই ম্যাচ ডের সম্ভবত সেরা মোকাবিলায় গ্রুপ ‘বি’-র ম্যাচে স্পেন ও ইংল্যান্ডের দুই ইনফর্ম দল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও লিভারপুল মুখোমুখি হয়েছিল মাদ্রিদে। প্রত্যাশা মতোই দর্শকরা এক দারুণ টানটান উত্তেজনায় ভরা ম্যাচের সাক্ষী থাকলেন। মহম্মদ সালাহের জোড়া গোলে লিভারপুল ৩-২ ব্যবধানে অ্যাটলেটিকোকে হারাল।
প্রতিপক্ষের মাঠে শুরুটা একদম টপ গিয়ারে করেছিল লিভারপুল। ম্যাচের আট মিনিটে সালাহের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর, ১৩ মিনিটে চোখ ধাঁধানো ভলিতে লিভারপুলের ব্যবধান দ্বিগুন করেন নাবি কেইটা। দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে অ্যাটলেটিকোর ম্যাচে ফিরে আসার লড়াই শুরু হয়। ২০ মিনিটে অ্যাটলেটিকোর কর্ণার থেকে কোনক্রমে বক্সের বাইরে থাকা কোকের কাছে বল চলে আসে। তাঁর শট গ্রিজম্যানের পায়ের আলতো ছোঁয়া লেগে লিভারপুলের জালে জড়িয়ে যায়। ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
এরপর জাও ফেলিক্স ও গ্রিজম্যানের যুগলবন্দিতে ৩৪ মিনিটে ম্যাচে সমতায় ফেরে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। ফেলিক্স প্রায় তিন ডিফেন্ডারকে দারুণ স্কিলে পরাস্ত করে গ্রিজম্যানকে বল পাস করেন। ফরাসি তারকা ভার্জিল ভ্যান ডাইককে প্রায় মাটি ধরিয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন। দুই গোলের ক্ষেত্রেই কেইটার ডিফেন্সিভ ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। অ্যাটলেটি ব্যাকফুটে শুরু করেও সহজেই প্রথমার্ধে লিড নিয়ে নিতে পারত। তাদের মুর্হুমুহু আক্রমণে নাজেহাল দেখাচ্ছিল রেডসদের। এই সময়ই ঢাল হয়ে উঠেন গোলরক্ষক অ্যালিসন, না হলেও প্রথমার্ধে দুইটি বিশ্বমানের সেভ করেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধে ৫২ মিনিটে গ্রিজম্যানের হাই ফুট ফির্মিনোকে আহত করার পর তিনি লাল কার্ড দেখেন। এর ফলে খেলার ছবি বদলে যাওয়ার কথা ছিল। তবে অ্যাটলেটিকো ১০ জন নিয়েও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল, ভাল আক্রমণও গড়ে তোলে দিয়েগো সিমিওনের দল। ম্যাচের ৭৬ মিনিটে অবশ্য পেনাল্টি বক্সে মারিও হার্মোসোর দিয়োগো জোটাকে করা এক বাজে ফাউলে পেনাল্টি পায় লিভারপুল। গোল করতে কোনরকম ভুল করেননি সালাহ। তবে এরপরেই দমে না গিয়ে আক্রমণ শানায় অ্যাটলেটিকো। লিভারপুল এগিয়ে যাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই জোটার ফাউল থেকে পেনাল্টিও আদায় করে নেয় তারা। তবে রেফারি ভিএআরের সহায়তায় সিদ্ধান্ত বদল করেন।
দ্বিতীয়ার্ধে আর কোন গোল না হওয়ায় এক দুর্দান্ত ম্যাচ জিতে নেয় লিভারপুল। দ্বিতীয়ার্ধে অ্যালিসন বেশ কিছু ভাল সেভ করেন। এই জয়ের ফলে লিভারপুল গ্রুপে তিন ম্যাচ জিতে শীর্ষে রইল। নিজের জোড়া গোলের সুবাদে প্রথম লিভারপুল ফুটবলার হিসাবে সালাহ নাগাড়ে নয় ম্যাচে গোল করলেন। পাশাপাশি তিনি স্টিভেন জেরার্ডকে টপকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুলের সর্বোচ্চ গোলদাতা (৩১) হয়ে যান। অপরদিকে, এসি মিলানকে ১-০ গোলে হারিয়ে অ্যাটলেটিকোর ওপর চাপ বাড়ায় পোর্তো।
চোট আঘাতে জর্জরিত মিলান ম্যাচে নিজেদের দক্ষতা অনুযায়ী একেবারেই পারফর্ম করতে পারেনি। শুরুটা তারা ভাল করলেও পোর্তোই গোল করার প্রথম সুযোগ পায়। অলিভিয়ের জিরু এবং রাফায়েল লিয়াওয়ের দুর্দান্ত ওয়ান টু পোর্তো ডিফেন্সকে প্রায় বোকা বানিয়ে দিয়েছিল। পোর্তোর মেহেদি তারেমি গোল করার সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাত পারেনি। প্রথমার্ধের একদম শেষের দিকে জিরু অসাধারণ বাইসাইকেল কিকে পোর্তোর জালে বল জড়িয়ে দিলেও অফসাইডে তা বাতিল হয়।
গোটা ম্যাচে দাপট দেখানোর সুফল অবশেষে ৬৫ মিনিটে পায় পোর্তো। মিলান সঠিকভাবে ক্রস ক্লিয়ার করতে না পারায় তা এসে পড়ে লুইস ডিয়াজের পায়ে। কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড নিখুঁত বাঁক খাওয়ানো শটে পর্তুগিজ দলকে লিড এনে দেয়। জ্লাটান ইব্রাহিমোভিচ দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামলেও মিলানকে সমতায় ফেরাতে পারেনি। ম্যাচ ১-০ শেষ হয়। এই পরাজয়ের ফলে এখনও অবধি এ মরশুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের তিনটি ম্যাচই হারতে হল মিলানকে।