শেষ হল প্রতীক্ষা। অবশেষে মুক্তি পেল সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের বহু প্রতীক্ষিত ছবি ‘অতি উত্তম’ এর পোস্টার। আর পোস্টার মুক্তির জন্যেও মোক্ষম দিন বেছেছেন পরিচালক। ৩ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ মহানায়ক উত্তমকুমারের জন্মদিনের দিনেই প্রকাশিত হল এই পোস্টার। ইতিমধ্যেই সৃজিতের শেয়ার করা সেই পোস্টারের ছবি দেখে মজেছে দর্শকের দল।
নেটমাধ্যমে ‘অতি উত্তম’-এর পোস্টার শেয়ার করে ছবি তৈরির গল্পের খানিকটা আঁচও নেটিজেনদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই জনপ্রিয় পরিচালক। তাঁর লেখার সুবাদেই জানা গেছে দীর্ঘ ৪ বছরের ফসল এই ছবি। টানা ৪ বছরের গবেষণার পাশাপাশি রয়েছে মহানায়কের ৬২টি ছবি ফ্রেম বাই ফ্রেম খুঁটিয়ে দেখা, পর্যবেক্ষণ করা। এমনকি বারেবারে বদলাতে হয়েছে চিত্রনাট্যও। তারপর তো ছিলই ভিএফএক্স নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা। ভুলে চলবে উত্তমের ছবির বিভিন্ন লাগসই দৃশ্য নিজের ছবিতে ব্যবহার করার স্বত্ব আদায়ের জন্য নানান জায়গায় ছোটাছুটি করতে হয়েছে সৃজিতকে। ঘুপচি গলি পেরিয়ে ধুলো জমা মান্ধাতার আমলের অফিস হোক কিংবা আলো অন্ধকারে ঢাকা পানশালা, কিচ্ছু বাকি রাখেননি সৃজিত। অবশেষে সবকিছু শেষে পরিচালকের বহু দিনের স্বপ্ন এবার দেখতে পাবে বাকিরাও। আসছে ‘অতি উত্তম’।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
তবে নজর কেড়েছে ‘অতি উত্তম’ এর এই পোস্টার। অবিকল ষাটের দশকে মহানায়কের সিনেমার পোস্টারের ধাঁচে বানানো এই ছবির পোস্টার এক লহমায় বাঙালির জিয়া নস্ট্যাল যে করে দেবে ইতিমধ্যেই সেকথা মেনে নিয়েছে নেটিজেনদের একটি বড় অংশ। পোস্টারের একটি বড় অংশ জুড়ে ভুবনভোলানো সেই বিখ্যাত হাসি হাসছেন মহানায়ক। তাঁর আশেপাশে এদিক ওদিক জুড়ে রয়েছে ছবির বাকি অভিনেতা অভিনেত্রীদের মুখ। তার সঙ্গে পোস্টারে লেখার ভাষা ও আঙ্গিকের সঙ্গেও হবহু মিল সেই আমলের ছবির পোস্টারের। ইতিমধ্যেই সেই পোস্টার ঘিরে তুমুল হইচই শুরু হয়েছে নেটপাড়ায়।
‘অতি উত্তম’ এর বিষয়ে বলতে গিয়ে সৃজিত জানিয়েছিলেন প্রযুক্তিবিদ্যাকে কাজে লাগিয়ে বড়পর্দায় স্বয়ং উত্তমকুমারকে হাজির করাতে চান তিনি। মহানায়কের ৬২টি ছবি থেকে তাঁর বিভিন্ন দৃশ্যের ফুটেজ সংগ্রহ করে ভিএফএক্সের সাহায্যে পর্দায় ‘জীবন্ত’ করে তোলার কথা জানিয়েছিলেন সৃজিত। সেই ঘোষণার পরেই নড়েচড়ে বসেছিল ছবিপ্রেমীরা। এই রোম্যান্টিক কমেডি এগোবে এক উত্তম গবেষকের জীবনকে কেন্দ্র করেই, যে চরিত্রে রয়েছেন অনিন্দ্য সেনগুপ্ত। সে একটি মেয়েকে পছন্দ করলেও তাঁর হৃদয় জেতার ক্ষেত্রে বারেবারে গোল্লা পেয়েছে। অবশেষে উপায় না দেখে ‘গুরু’-র স্মরণাপন্ন হয় সে। উত্তম কুমারের নাতি গৌরব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগসাজশে প্ল্যানচেট করে মহানায়কের সাহায্য নেয় সে এই ভালোবাসার যুদ্ধে বিজয়ী তকমা পাওয়ার জন্য। উত্তম কী তাঁর ভক্তের ডাকে সাড়া দিলেন? গবেষক কী খুঁজে পেল তাঁর ভালোবাসাকে? এই নিয়েই ‘অতি উত্তম’।ছবিতে অনিন্দ্য, গৌরব ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন নবাগতা রোশনি ভট্টাচার্য, শুভাশিষ মুখোপাধ্যায়, লাবণি সরকাররা। ছবির সুরের দায়িত্বেও রয়েছে নতুন মুখ সপ্তক সানাই দাস।
কেন ‘অতি উত্তম’? জবাবে সৃজিত জানিয়েছেন, এরকম আবহে দর্শককে হলমুখী করতে আজও মহানায়ক একমেবাদ্বিতীয়ম। তিনিই পারেন দর্শকদের ফের একবার হলমুখী করতে। সহজ কথায়, মানুষকে হলমুখী করে তোলার উদ্যোগেই সৃজিতের এই চেষ্টা। আর তাঁর মতে, এ ব্যাপারে তাঁকে যে সর্বোতভাবে সাহায্য করতে পারেন তিনি এক এবং একমাত্র উত্তমকুমার!