কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন মিলিয়ে টিকা নিলে কার্যকারিতা বেশি হয়। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) নয়া একটি গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। সেই তথ্য অনুযায়ী, একই টিকার দুটি ডোজ নেওয়ার পরিবর্তে কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন মিলিয়ে নিলে সুরক্ষা এবং অনাক্রম্যতা বেশি হয়।
এমনিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভিন্ন করোনা টিকার দুটি ডোজ দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, বিহারের মতো রাজ্যে অভিযোগ উঠেছে, প্রথম ডোজে কোভিশিল্ড দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজে আবার দেওয়া হয়েছে কোভ্যাক্সিন। কোথাও আবার প্রথমে কোভ্যাক্সিন এবং পরে কোভিশিল্ড দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশের ১৮ জনের উপর সেই পরীক্ষা চালিয়েছিল আইসিএমআর। তাতে প্রথম ডোজ হিসেবে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার টিকা কোভিশিল্ড প্রদান করা হয়েছিল। ছ’সপ্তাহের ব্যবধানে দেওয়া হয়েছিল ভারত বায়োটেকের করোনা টিকা কোভ্যাক্সিন। তারপর প্রাপ্য পরিসংখ্যানের তুলনা করা হয়।
আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়েছে, গবেষণার জন্য বিভিন্ন বয়সের ১৮ জনকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ এবং সাতজন ছিলেন। কিন্তু পরে দু’জন সরে যান। সবমিলিয়ে গবেষণা প্রক্রিয়ায় ৯৮ জন স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন। গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, ‘যাঁরা কোভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিন (প্রতিটি গ্রুপে ছিলেন ৪০ জন। অর্থাৎ ৪০ জন পেয়েছেন কোভ্যাক্সিন, বাকি ৪০ জনকে কোভিশিল্ডকে দেওয়া হয়েছিল) পাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে সুরক্ষা এবং অনাক্রম্যতা সংক্রান্ত তথ্যের তুলনা করা হয়েছিল। তিনটি গ্রুপেই কম এবং একই ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল।’ যে গ্রুপের সদস্যদের কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছিল, করোনাভাইরাসের আলফা, বিটা এবং ডেল্টা প্রজাতির বিরুদ্ধে তাঁদের অনাক্রম্যতা বেশি ধরা পড়েছে। অ্যান্টিবডির প্রতিক্রিয়াও বেশি মিলেছে।
সেই গবেষণার প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সমীর ভাটিয়া বলেছেন, ‘দুটি টিকাই একই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলছে। দুটি টিকা মিলিয়ে দেওয়ার বিষয়টি জনসাধারণের জন্য কার্যকরী হতে পারে এবং টিকা নিয়ে দ্বিধাবোধ কাটাতে সাহায্য করতে পারে। বাড়াতে পারে টিকাকরণের গতি।’ তবে আরও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।