পুরানো দিনের সিনেমা যারা দেখেন তারা হয়তো দেখে থাকবেন হিচককের এই সিনেমাটি। এক খুনীর মনস্তত্ত্ব নিয়ে সিনেমা। তবে ভীষণ স্লো, ধৈর্য ধরে দেখা মুস্কিল। সে যাক হালে সাপুরজী আবাসনে নিহত দুষ্কৃতী ভুল্লারের অতীত শুনলেন ? পুলিশ অফিসার বাবার ছেলে এবং একদা আ্যথলেট গত পাঁচ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। তার বিরুদ্ধে ছিল অপহরণ, ডাকাতি, বন্দুক কারখানা লুট-সহ একাধিক মামলা। এতটাই বিপজ্জনক যে তার মাথার দাম দশলাখ টাকা রেখেছিল পুলিশ। কিন্তু এটা কি জানেন কলকাতার বুকে জন্ম নিয়েছিল এর থেকেও বড় এক অপরাধী ? ঠান্ডা মাথায় ঘরে বসে একে একে যখন তিনটে খুন করে তখন তার বয়স সতেরো হতেও একমাস বাকি ! ভাগ্যিস তখন সোশ্যাল মিডিয়া ছিলো না, নইলে ভার্চুয়াল জগতে হীরো হয়ে যেতো নির্ঘাত!

প্রশ্ন হলো এতো অল্প বয়সে এরকম ভয়ঙ্কর খুনী হলো কিভাবে? অপরাধ প্রবণতা কি তার রক্তে ছিলো ? উত্তর খুঁজে পাননি মনোবিজ্ঞানীরা। বাবা সুবল ছিলেন ছোটখাটো ব্যাবসায়ী। বিয়ে করে যখন এক ছেলের বাবা, তখন মিনতি নামে আরেক মহিলার সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে যান। সংসার ছেড়ে পাকাপাকি ভাবে চলে যায় তার কাছে এবং তাদের একটি পুত্রসন্তান হয়। নিজের নামের সাথে মিলিয়ে নাম রাখেন সজল। এদিকে বিবাহিতা স্ত্রী ছেড়ে দেবার পাত্রী নয়, মামলা মোকদ্দমা এড়াতে ভদ্রলোক আবার ফিরে আসেন তার পুরনো সংসারে। তবে ফিরে এলেও ভুলতে পারেননি নিজের ঔরসজাত পুত্রের কথা, কিছুদিন পর তাকেও নিয়ে আসেন দমদমে শুভম আ্যপার্টমেনটের ফ্ল্যাট বাড়িতে। ছেলেটির বয়স তখন মাত্র দশবছর।

মুখচোরা ছেলেটিকে সহ্য করতে পারেনি সুবলের স্ত্রী নিয়তি, নিত্য লাঞ্ছনা গঞ্জনার সাথে সাথে হাতও ওঠাতেন, সঙ্গী হতো তার নিজের ছেলে। অশান্তি এড়াতে ভদ্রলোক কোন প্রতিবাদ করতেন না। এই ব্যবহারের মধ্যেই হয়তো লুকিয়ে ছিলো সজলের কুখ্যাত অপরাধী হবার বীজ।

দিনটি ছিলো ২২শে নভেম্বর, ১৯৯৩।
আগেই সজল ভোজালি গ্লাভস দড়ি এসব জোগাড় করে বন্ধুদের বাড়িতে রেখেছিল। সেদিন সন্ধ্যায় ওগুলো নিয়ে বাড়ি ঢোকে। সৎমা নিয়তি তখন টিভিতে মগ্ন, অতো খেয়াল করেননি। কিছুক্ষন পর একে একে সজলের তিন বন্ধু ঢোকে। নিয়তি দেবীকে একটি চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে ফেলে তারা, মুখে লাগিয়ে দেয় লিউকোপ্লাস্ট। এরপর অপেক্ষা করতে থাকে সুবল ও তার ছেলের জন্য। ফুল ভল্যুমে চলতে থাকে টিভি।

কয়েক ঘণ্টা পরে বাড়িতে ঢোকে সজলের বাবা ও ভাই। বন্ধুদের সাহায্যে মুখ বেঁধে তিনজনেরই গলার নলি কেটে দেয় সজল। তারপর যেটা তারা করেছিল সেটা একদয় ডার্ক ফ্যান্টাসী। ঘরে থাকা তিনটি লাশের পাশে বসে ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে ধীরে সুস্থে খাওয়া দাওয়া করে। টেবিলে কিছু টাকাও রাখে খাবারের দাম হিসেবে। এরপর বন্ধুরা সজলকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে চলে যায়। টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘‌দ্য ওয়ার্ল্ড দিস উইক’ দেখে এই প্ল্যান করেছিল তারা। তিনটি মৃতদেহর সঙ্গে রাতভর কাটায় সজল। পরদিন সকালে তার চিৎকার শুনে ছুটে আসে পড়শীরা, খবর যায় থানায়।

পুলিশ এসে দেখে, তিনটে মৃতদেহ পড়ে আছে। আর এক তরুণ চেয়ারের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধা। সজল বয়ান দেয় বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। তারাই খুন করেছে পরিবারের সদস্যদের। কিন্তু, তদন্তকারীরা সজলের বয়ানকে বিশ্বাস করেননি। তাঁরা জেরা করতে থাকেন। জেরার মুখে ভেঙে পড়ে সজল। বলে দেয় আসল ঘটনা। তবে এর জন্য তার কোন আফসোস হয়নি। ওর কথার ভিত্তিতে পুলিশ বাকিদের গ্রেফতার করে। ব্যারাকপুর কোর্টে মামলা শুরু হয়। বিচার শেষে প্রথমে সজলের ফাঁসির আদেশ হয়, যা পরে বদলে যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে। গল্প কিন্তু এখনও শেষ হয়নি….. !

আলিপুর জেলে বন্দী ছিল তখন। অসুস্থতার ভান করে সেখান থেকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয় । আর তারপর একদিন পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ফুড়ুত……! সোজা মুম্বাই। নতুন নাম শেখ রাজু।মধ্যবিত্ত পরিবারের এক সাধারণ ছেলে ভিড়ে যায় অন্ধকার জগতে। বিভিন্ন গ্যাঙের হয়ে খুনজখম রাহাজানিতে হয়ে ওঠে সিদ্ধহস্ত। বিয়েও করে সিল্কি নামে এক বার ডান্সারকে। মুম্বাই পুলিশের হাতে এনকাউন্টার হয়ে যাবার ভয়ে পালিয়ে আসে আবার কলকাতায়। এবারে নাম নেয় কমল। বয়স তখন তার মাত্র পঁচিশ। নিজেই এবার ডাকাতির গ্যাং খুলে বসে।

কলকাতা ও আশেপাশের জেলায় বেশ কয়েকটি ডাকাতি ও অপহরণের ঘটনায় সামনে চলে আসে তার নাম, খুঁজতে থাকে পুলিশ। কিন্তু তাদের ঘুণাক্ষরেও সন্দেহ হয়নি সে-ই ফেরার খুনী আসামী সজল। শেষমেশ ধরা পড়ে যায় মেদিনীপুরে। সনাক্ত হতো না যদি না আলিপুরের এক জেলার বদলি হয়ে মেদিনীপুরে আসতেন। তিনি দেখেই চিনতে পারেন এই সেই দমদমে নৃশংস হত্যাকান্ডের নায়ক সজল বাড়ুই। মেদিনীপুর জেল থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হয় তাকে। সেখানে তখন বন্দী আফতাব আনসারি। শোনা যায়, আনসারির সঙ্গে চক্রান্ত করছিল রাজু। তড়িঘড়ি সজলকে পাঠিয়ে দেয়া হলো আলিপুর জেলে। ২০১০ -সালে হাইকোর্টের এক বিশেষ আদেশ বলে পনেরো বছর জেল খাটার পর মুক্তি পায় সজল। হারিয়ে যায় দেশের জনারণ্যে। বয়স হয়েছিল তেত্রিশ বছর।

আশ্চর্যের বিষয় ছবি আঁকায় ছিল দারুন হাত।
জেলে বসে বসেই ছবি আঁকতো, যেগুলি পরে বইমেলা সহ বিভিন্ন প্রদর্শনীতে দেখানো হয়েছে। অপরাধ জগতে সত্যিই এক শাহেনশাহ ছিল সে। এত অল্প বয়সে তিন তিনজনকে একসঙ্গে খুন, জেল থেকে পালানো, মুম্বইয়ে একাধিক গ্যাংয়ের সঙ্গে কাজ, আবার নাম বদলে কলকাতায় ফিরে ফের অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত হওয়া- এ একমাত্র সজল বাড়ুই করে দেখিয়েছিল।
কলমে ✍🏻 স্বপন সেন 🌲
পেপার কাটিং Soaham Mondal এর সৌজন্যে

পুরানো দিনের সিনেমা যারা দেখেন তারা হয়তো দেখে থাকবেন হিচককের এই সিনেমাটি। এক খুনীর মনস্তত্ত্ব নিয়ে সিনেমা। তবে ভীষণ স্লো, ধৈর্য ধরে দেখা মুস্কিল। সে যাক হালে সাপুরজী আবাসনে নিহত দুষ্কৃতী ভুল্লারের অতীত শুনলেন ? পুলিশ অফিসার বাবার ছেলে এবং একদা আ্যথলেট গত পাঁচ বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। তার বিরুদ্ধে ছিল অপহরণ, ডাকাতি, বন্দুক কারখানা লুট-সহ একাধিক মামলা। এতটাই বিপজ্জনক যে তার মাথার দাম দশলাখ টাকা রেখেছিল পুলিশ। কিন্তু এটা কি জানেন কলকাতার বুকে জন্ম নিয়েছিল এর থেকেও বড় এক অপরাধী ? ঠান্ডা মাথায় ঘরে বসে একে একে যখন তিনটে খুন করে তখন তার বয়স সতেরো হতেও একমাস বাকি ! ভাগ্যিস তখন সোশ্যাল মিডিয়া ছিলো না, নইলে ভার্চুয়াল জগতে হীরো হয়ে যেতো নির্ঘাত!

প্রশ্ন হলো এতো অল্প বয়সে এরকম ভয়ঙ্কর খুনী হলো কিভাবে? অপরাধ প্রবণতা কি তার রক্তে ছিলো ? উত্তর খুঁজে পাননি মনোবিজ্ঞানীরা। বাবা সুবল ছিলেন ছোটখাটো ব্যাবসায়ী। বিয়ে করে যখন এক ছেলের বাবা, তখন মিনতি নামে আরেক মহিলার সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে যান। সংসার ছেড়ে পাকাপাকি ভাবে চলে যায় তার কাছে এবং তাদের একটি পুত্রসন্তান হয়। নিজের নামের সাথে মিলিয়ে নাম রাখেন সজল। এদিকে বিবাহিতা স্ত্রী ছেড়ে দেবার পাত্রী নয়, মামলা মোকদ্দমা এড়াতে ভদ্রলোক আবার ফিরে আসেন তার পুরনো সংসারে। তবে ফিরে এলেও ভুলতে পারেননি নিজের ঔরসজাত পুত্রের কথা, কিছুদিন পর তাকেও নিয়ে আসেন দমদমে শুভম আ্যপার্টমেনটের ফ্ল্যাট বাড়িতে। ছেলেটির বয়স তখন মাত্র দশবছর।

মুখচোরা ছেলেটিকে সহ্য করতে পারেনি সুবলের স্ত্রী নিয়তি, নিত্য লাঞ্ছনা গঞ্জনার সাথে সাথে হাতও ওঠাতেন, সঙ্গী হতো তার নিজের ছেলে। অশান্তি এড়াতে ভদ্রলোক কোন প্রতিবাদ করতেন না। এই ব্যবহারের মধ্যেই হয়তো লুকিয়ে ছিলো সজলের কুখ্যাত অপরাধী হবার বীজ।

দিনটি ছিলো ২২শে নভেম্বর, ১৯৯৩।
আগেই সজল ভোজালি গ্লাভস দড়ি এসব জোগাড় করে বন্ধুদের বাড়িতে রেখেছিল। সেদিন সন্ধ্যায় ওগুলো নিয়ে বাড়ি ঢোকে। সৎমা নিয়তি তখন টিভিতে মগ্ন, অতো খেয়াল করেননি। কিছুক্ষন পর একে একে সজলের তিন বন্ধু ঢোকে। নিয়তি দেবীকে একটি চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে ফেলে তারা, মুখে লাগিয়ে দেয় লিউকোপ্লাস্ট। এরপর অপেক্ষা করতে থাকে সুবল ও তার ছেলের জন্য। ফুল ভল্যুমে চলতে থাকে টিভি।

কয়েক ঘণ্টা পরে বাড়িতে ঢোকে সজলের বাবা ও ভাই। বন্ধুদের সাহায্যে মুখ বেঁধে তিনজনেরই গলার নলি কেটে দেয় সজল। তারপর যেটা তারা করেছিল সেটা একদয় ডার্ক ফ্যান্টাসী। ঘরে থাকা তিনটি লাশের পাশে বসে ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে ধীরে সুস্থে খাওয়া দাওয়া করে। টেবিলে কিছু টাকাও রাখে খাবারের দাম হিসেবে। এরপর বন্ধুরা সজলকে চেয়ারের সঙ্গে বেঁধে চলে যায়। টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘‌দ্য ওয়ার্ল্ড দিস উইক’ দেখে এই প্ল্যান করেছিল তারা। তিনটি মৃতদেহর সঙ্গে রাতভর কাটায় সজল। পরদিন সকালে তার চিৎকার শুনে ছুটে আসে পড়শীরা, খবর যায় থানায়।

পুলিশ এসে দেখে, তিনটে মৃতদেহ পড়ে আছে। আর এক তরুণ চেয়ারের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বাঁধা। সজল বয়ান দেয় বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। তারাই খুন করেছে পরিবারের সদস্যদের। কিন্তু, তদন্তকারীরা সজলের বয়ানকে বিশ্বাস করেননি। তাঁরা জেরা করতে থাকেন। জেরার মুখে ভেঙে পড়ে সজল। বলে দেয় আসল ঘটনা। তবে এর জন্য তার কোন আফসোস হয়নি। ওর কথার ভিত্তিতে পুলিশ বাকিদের গ্রেফতার করে। ব্যারাকপুর কোর্টে মামলা শুরু হয়। বিচার শেষে প্রথমে সজলের ফাঁসির আদেশ হয়, যা পরে বদলে যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে। গল্প কিন্তু এখনও শেষ হয়নি….. !

আলিপুর জেলে বন্দী ছিল তখন। অসুস্থতার ভান করে সেখান থেকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয় । আর তারপর একদিন পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে ফুড়ুত……! সোজা মুম্বাই। নতুন নাম শেখ রাজু।মধ্যবিত্ত পরিবারের এক সাধারণ ছেলে ভিড়ে যায় অন্ধকার জগতে। বিভিন্ন গ্যাঙের হয়ে খুনজখম রাহাজানিতে হয়ে ওঠে সিদ্ধহস্ত। বিয়েও করে সিল্কি নামে এক বার ডান্সারকে। মুম্বাই পুলিশের হাতে এনকাউন্টার হয়ে যাবার ভয়ে পালিয়ে আসে আবার কলকাতায়। এবারে নাম নেয় কমল। বয়স তখন তার মাত্র পঁচিশ। নিজেই এবার ডাকাতির গ্যাং খুলে বসে।

কলকাতা ও আশেপাশের জেলায় বেশ কয়েকটি ডাকাতি ও অপহরণের ঘটনায় সামনে চলে আসে তার নাম, খুঁজতে থাকে পুলিশ। কিন্তু তাদের ঘুণাক্ষরেও সন্দেহ হয়নি সে-ই ফেরার খুনী আসামী সজল। শেষমেশ ধরা পড়ে যায় মেদিনীপুরে। সনাক্ত হতো না যদি না আলিপুরের এক জেলার বদলি হয়ে মেদিনীপুরে আসতেন। তিনি দেখেই চিনতে পারেন এই সেই দমদমে নৃশংস হত্যাকান্ডের নায়ক সজল বাড়ুই। মেদিনীপুর জেল থেকে প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হয় তাকে। সেখানে তখন বন্দী আফতাব আনসারি। শোনা যায়, আনসারির সঙ্গে চক্রান্ত করছিল রাজু। তড়িঘড়ি সজলকে পাঠিয়ে দেয়া হলো আলিপুর জেলে। ২০১০ -সালে হাইকোর্টের এক বিশেষ আদেশ বলে পনেরো বছর জেল খাটার পর মুক্তি পায় সজল। হারিয়ে যায় দেশের জনারণ্যে। বয়স হয়েছিল তেত্রিশ বছর।

আশ্চর্যের বিষয় ছবি আঁকায় ছিল দারুন হাত।
জেলে বসে বসেই ছবি আঁকতো, যেগুলি পরে বইমেলা সহ বিভিন্ন প্রদর্শনীতে দেখানো হয়েছে। অপরাধ জগতে সত্যিই এক শাহেনশাহ ছিল সে। এত অল্প বয়সে তিন তিনজনকে একসঙ্গে খুন, জেল থেকে পালানো, মুম্বইয়ে একাধিক গ্যাংয়ের সঙ্গে কাজ, আবার নাম বদলে কলকাতায় ফিরে ফের অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত হওয়া- এ একমাত্র সজল বাড়ুই করে দেখিয়েছিল।
কলমে ✍🏻 স্বপন সেন 🌲
পেপার কাটিং Soaham Mondal এর সৌজন্যে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.