রাতে দেবাঞ্জন দেবের বাড়িতে ঢুকেছে সিট ।
সিট অর্থাৎ স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেটিং টিম । যা গড়েছে লালবাজার । বৃহত্তর conspiracy র খোঁজে । কি সেই বৃহত্তর জালিয়াতি সময়ই তা বলবে কি না জানিনা । কোন হাকিম, কোন সেন, কোন ঘোষ কিভাবে ডেভেলপার হয়েছেন এই প্রতারকের জানব কি আমরা ? আদৌ ? জানিনা ।
আশঙ্কাটা আমার অন্য জায়গায় । তদন্তের নামে আরেকটা প্রহসন হবে না তো ? কলকাতা পুলিশ এমনিতেই যথেষ্ট যোগ্য এবং ইন্টেলিজেন্ট । যে কোন জালিয়াতি উন্মোচনে তারা যথেষ্ট পারদর্শী । কিন্তু সেই পুলিশকে সরকার কি ভাবে এবং কি কারণে ব্যবহার করে তার ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে । তাই আশঙ্কাটা ।
আনন্দপুরেরর বাড়িতে এই “সিট” ধরুন খুঁজে পেল এমন কিছু নথী যেখানে স্পষ্ট প্রমাণ হয় তার রথী মহারথীদের সঙ্গে আর্থিক বা ব্যক্তিগত স্তরের যোগাযোগ এবং প্যাট্রোনেজ । আপনি আমি কেউ কোনদিন জানতে পারব সেই বিবরণ ? আদালতে পেশ হবে সেই তথ্য, কোনোদিন ? চোখ বন্ধ করে এখনই বলতে পারি সেই নথী সূর্যালোক দেখবে না । নবান্ন কিম্বা কালীঘাট থেকেই অনাথ হবেই সেই ফাইল ।
এ রাজ্যে এখন এটাই বিধি । এটাই নিয়ম । কেন বলছি ?
হাল আমলে দুটো ঘটনার কথা বলি ।
মেডিক্যাল কলেজে ১১ লক্ষ টাকার খুব দামী ২২টা ইনজেকশন জনৈক উচ্চ প্রভাবশালী মাঝি স্যারের রেফারেন্সে উধাও হয়ে গিয়েছিল । মিডিয়াতে খুব হৈ চৈ হল । নবান্নে এক বেয়াড়া সাংবাদিক মুখ্যমন্ত্রীকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বেজায় রেগে গেলেন । রাতারাতি দুটো তদন্ত কমিশন বসল । তারপর কেউ ধরা পড়ল ? আজ পর্যন্ত ? ইনজেকশন গুলো খুঁজে পাওয়া গেল ? ১১ লক্ষ টাকা বেমালুম গায়েব হল । উল্টে যিনি সংবাদ লিকের কারণ, সেই তরুণ ডাক্তারকে বদলি করা হল কুচবিহারে । দু দুটো তদন্ত কমিটির নিট রেজাল্ট এটাই ।
দ্বিতীয় ঘটনা –
২০২০ সালে লক ডাউনের সময় স্বাস্থ্য ভবনে প্যান্ডেমিক পারচেজে ব্যাপক দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসে । রাতারাতি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে মাথায় বসিয়ে তদন্ত কমিটি গড়া হয় । এক বছর পেরিয়ে গেছে । কেউ জানেন তার রিপোর্ট ? যে ভাইপো বাহিনী ঐ কেলেঙ্কারিতে যুক্ত ছিলেন সবার নাম আড়ালে চলে গেল । কেউ শাস্তি পেল ? মাঝখান থেকে প্রায় দু হাজার কোটির কেনা কাটার জালিয়াতি অন্ধকারে চলে গেল । ঢাল হলেন স্নেহের আলাপন ।
এইভাবেই এ রাজ্যে তদন্তর নামে ঢাকা হয়েছে কত অন্ধকার, কত কুকীর্তি কেউ হিসেব রাখেন ?
আজও কি আমি আপনি জানি কিভাবে কি নিপুণতায় সুদীপ্ত সেনের বেনিফিসিয়ারির তালিকা বিধাননগর পুলিশ তদন্তের নামে রাতের অন্ধকারে লকার খুলে হাপিস করেছিল ? আসলে মমতা তদন্তের নামে তদন্তের ফল কি হবে সেটাও পুলিশকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন । এবং আড়াল কাদের করতে হবে বুঝিয়ে দেওয়া হয় তাদের ।
পুলিশ বলুন, সিট বলুন, সি আই ডি বলুন সেটাই অক্ষরে অক্ষরে পালন করে । হারিয়ে যায় আসল তথ্য, আসল সত্য, তদন্তকে ঢাল করে ।
তাই দেবাঞ্জনের ১৮ আনন্দপুরেরর বাড়িতে আজ রাত ভোর তল্লাশিতে কবরে চলে যাবে না তো লজ্জা বাড়ানো সে সব তথ্য ? যা প্রকাশ্যে এলে লাল বাড়ি, নীল বাড়ির কর্তাদের মুখ দেখাতে অসুবিধে হত ।
অবশ্য মুখ বলে আদৌ কিছু থাকলে !!
সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় ( ৯৮৩০৪২৬০৭৮ )