সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শৃঙ্খল ভাঙতে বন্ধ করা হয়েছে লোকাল ট্রেন। অথচ বৃহস্পতিবার বাসের ভরসায় পথে নেমে মরিয়া মানুষ সেই সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কাই যেন বাড়িয়ে দিলেন বহুগুণ। কোথাও দূরত্ব-বিধির তোয়াক্কা করলেন না তাঁরা। কাজে যাওয়া আর ঘরে ফেরার টানে সর্বত্র ফিরে এল বাসের পাদানি পর্যন্ত ঠেলে নেমে আসা ভিড়ের ছবি।
বৃহস্পতিবার উত্তর এবং দক্ষিণ শহরতলির বেশ কিছু রুট ছাড়াও হাওড়ার কয়েকটি রুটের বাসে যাত্রীদের এমনই ভিড় চোখে পড়েছে। সকালে অফিসের ব্যস্ত সময় ছাড়াও সন্ধ্যায় ফেরার পথে একই ভাবে বাসের জন্য হা-পিত্যেশ করতে দেখা গিয়েছে মানুষকে। তবে হাওড়া এবং শিয়ালদহের মতো রেলযাত্রীদের উপরে নির্ভরশীল বহু বাস রুট ছিল কার্যত যাত্রী-শূন্য।
পরিবহণ নিগমের পক্ষ থেকে অবশ্য এ দিন বাসের সংখ্যা কমানো হয়নি। বরং ট্রেন বন্ধ থাকার কারণে বেশ কিছু রুটে অতিরিক্ত বাস চলেছে। লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় সকাল থেকেই উত্তর শহরতলির ব্যারাকপুর, বারাসত ছাড়াও দক্ষিণ শহরতলির সোনারপুর, বারুইপুর রুটের বাসে ঠাসাঠাসি ভিড় চোখে পড়ে। ওই সব বাসে দূরত্ব-বিধি মানার কোনও বালাই ছিল না বলেই দাবি। সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েও মরিয়া মানুষ বাসে যাতায়াত করেছেন। ডালহৌসি এলাকার একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী সঞ্জয় নায়েক, সোনারপুর এলাকার বাসিন্দা। তাঁর কথায়, “সরকারি নির্দেশে ট্রেন বন্ধ হলেও অফিস বন্ধ হয়নি। আতান্তরে পড়েছি। নিরুপায়। তাই ঝুঁকি নিয়েই বাসে যাতায়াত করতে হচ্ছে।” এ ভাবে চলতে থাকলে সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙার সব চেষ্টাই বৃথা হবে বলে আশঙ্কা অনেক যাত্রীর।
প্রায় একই ভিড় চোখে পড়েছে ব্যারাকপুর-এসপ্লানেড, ধর্মতলা-বারাসত রুটের বাসে। এসপ্লানেড থেকে ডায়মন্ড হারবার, আমতলা, জোকা ছাড়াও হাওড়ার দিকে উলুবেড়িয়া, আমতা এবং হুগলির আরামবাগ রুটের বাসে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। লোকাল ট্রেন না থাকায় হুগলি ছাড়াও সাঁতরাগাছিগামী রুটের বাসগুলিতে যাত্রীদের ভিড় ছিল। ধর্মতলা থেকে বর্ধমান, দুর্গাপুর বা আসানসোল যাওয়ার জন্য দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাসেও এ দিন টিকিটের চাহিদা অন্যান্য দিনের তুলনায় যথেষ্ট বেশি ছিল।