রাত পেরোলেই ভোর।সোনালী সূর্যোদয়ের ঊজ্বল আভা কার রাজ সিংহাসনকে অলঙ্কিত করবে সেটাই দেখার এখন।করোনা কে তোয়াক্কা না করে, ভোট পর্বের পালা শেষে পথ চেয়ে বসে আছে রাজ্যের জনগণ। অপেক্ষার চির অবসান ঘটিয়ে কে শাসন করবে বঙ্গদেশের রাজত্ব?কে গড়বে সোনার বাংলার ঊজ্বল ভবিষ্যৎ?এই নিয়ে স্বপ্নের অচিন দেশে ঘুমিয়ে আছেন বঙ্গদেশের মানুষ।আগামীকাল ২মে রাজ্যে ভোট গণনা প্রক্রিয়া।তার ঠিক একদিন আগে অসহায় এক দুধের শিশুকে হাসপাটালে ভর্তি করিয়ে তার অসুস্থতার জন্য সাহায্যের আবেদন চেয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন বাংলা চলচ্চিত্র জগৎতের সুনামধন্য পরিচালক, তথা তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যারাকপুরের বিধানসভার প্রার্থী রাজ চক্রবর্তী। তাঁর নিজস্ব ফেসবুক পেজে শিশুটির ছবি সহ পোষ্ট করে মন্তব্যের মুখে পড়েন তিনি। তিনি লিখেছেন,
“একটি ১৯ দিনের শিশু। হার্ট এর সমস্যা রয়েছে। গত তিন দিন ধরে তার বাবা মা রাস্তায় ঘুরছেন বেডের জন্যে। কোন জায়গায় নেওয়া হচ্ছিল না। যখন জানতে পারি, ওনাদের ট্রেস করে হেলথ ডিপার্টমেন্ট এর সাথে কথা বলে চেষ্টা করে কোনো ভাবে হাওড়ার নারায়ণী হাসপাতালে ভর্তি করতে পেরেছি। কিন্তু সেখানকার দৈনিক খরচ ওনাদের সাধ্য ও ক্ষমতার বাইরে। তাই এই পরিস্থিতিতে ওনাদের আর্থিক সাহায্যের খুব প্রয়োজন”।
সকলকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসতে বলেন। রাজ চক্রবর্তীর জনগণের প্রতি এহেন মানসিকতা ও নির্লজ্জ ব্যবহার দেখে তাঁরই পরম ভক্তরা প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা ও জন প্রতিনিধিত্ব নিয়ে।
তাঁর পরম ভক্তরা বলছেন,তিনি চাইলে নিজেই একটি অসহায় শিশুর সমস্ত অসুস্থতার খরচ বহন করতে পারতেন।কারণ তাঁর কাছে অর্থের কোন অভাব ছিল না?একজন এত বড়ো মাপের পরিচালক হয়ে কিনা সাহায্য চাইছেন জনগনের কাছে।এর থেকে লজ্জ্বা বোধহয় কিছুই নেই।এরাই নাকি আবার দেশ চালাবে?জনগনের সেবা করবে? যিনি তো কিছুদিন আগে ভোট প্রচারে বেরিয়ে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মানুষের সুখ দুঃখে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কোথায় গেল আজ সেই জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি? নাকি ভোট ব্যাঙ্ক পেয়ে ক্ষমতা দখল করে নিজের আধিপত্য বিস্তার করাই ছিল রাজের আসল উদ্দেশ্য? এই সব নানান প্রশ্নের জল্পনা বাসা বেঁধেছে তাঁর অগুনতি পরম ভক্তদের মনে। যেখানে বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠন ও বিভিন্ন সুহৃদয় ব্যক্তিরা স্বেচ্ছায় এগিয়ে এসেছেন এই করোনা মোকাবিলায় মানুষের পাশে তাঁদের সাধ্যমত সেবা করার মানসিকতা নিয়ে। সেখানে রাজ চক্রবর্তীর এহেন মানসিকতার ওপর প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।আমরা দেখেছি,বলিউডের সনু সুদ ও অক্ষয় কুমারের মতন অভিনেতারা কোন ফুটেজ না খেয়েই এই ভয়ঙ্কর মহামারী করোনা ভাইরাসের সময় কালে রাস্তায় নেমে দিন-রাত পথচারী মানুষদের বিভিন্ন রকমের সেবা প্রদান করে চলেছেন সেখান রাজ চক্রবর্তী জনগনের প্রতি এই ব্যাবহার সত্যিই কাম্য নয় বলেই মনে করছেন বিভিন্ন নেতিজনেরা। এবং তাঁহারা এও মনে করছেন যে, রাজ চক্রবর্তীর এই মন্তব্যই কি পরিস্কার করে দিচ্ছে, শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের একুশে সাফ হওয়ার বিদায় ঘন্টা বেজে উঠেছে।
কৌশিক দাস