গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের যোগদান পর্ব তো চলছিলই। এ বার ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সর্বোচ্চ স্তর- জেলা পরিষদে হাত বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবির।
সূত্রের খবর, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সিংহভাগ সদস্য অচিরেই যোগ দিতে পারেন বিজেপি-তে। ফলে এই দুটি জেলা পরিষদ শাসক দলের হাতছাড়া হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
২০১৬ সালে বাংলায় বিধানসভা ভোটের পর ঠিক যে ভাবে কংগ্রেসের দখলে থাকা মালদহ ও মুর্শিদাবাদ পুরসভার দখল নিয়েছিল তৃণমূল। এ বার সেই পথেই রাতারাতি ডিগবাজি খেতে পারে উত্তরবঙ্গের এই দুই জেলা পরিষদ।
সেই যোগদান পর্ব কবে হবে, তার নির্ঘন্ট এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে আজ মঙ্গলবার বিকেলে দিল্লিতে বিজেপি সদর দফতরে গিয়ে তাদের পতাকা হাতে তুলে নিতে পারেন বনগাঁ-উত্তর বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। তাঁর সঙ্গে বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন বনগাঁ পুরসভার গরিষ্ঠ সংখ্যক কাউন্সিলর। বিশ্বজিৎ যে বিজেপি-তে যোগ দিতে পারেন তা রবিবার সবার প্রথম দ্য ওয়াল-এই লেখা হয়েছিল।
ইতিমধ্যেই ভাটপাড়া, কাঁচড়াপাড়া, হালিশহরের মতো পুরসভার দখল নিয়ে ফেলেছে গেরুয়া বাহিনী। গতকাল নোয়াপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক সুনীল সঙ্গের বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন ১৭ আসনের গারুলিয়া পুরসভার ১৩জন কাউন্সিলর। সূত্রের খবর, এ বার ভাঙনের মুখে পড়তে পারে বারাসত ও কল্যাণী পুরসভাও। এ ছাড়া জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার থেকে দু’জন করে তৃণমূল বিধায়ক শিগগির যোগ দিতে পারে বিজেপি-তে।
তবে বিজেপি জেলা পরিষদের দখল নিতে পারলে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে তৃণমূল। লোকসভার একটাও আসন জিততে পারেনি। বিজেপি-র কৌশল স্পষ্ট। বিধানসভা ভোটের আগেই উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ পুরসভা-পঞ্চায়েতে ক্ষমতা দখল করে নিরঙ্কুশ হয়ে উঠতে চাইছে গেরুয়া শিবির। পর্যবেক্ষকদের মতে, জেলা পরিষদের দখল নিয়ে নেওয়া মানে, সংশ্লিষ্ট গ্রামাঞ্চলে সমস্ত প্ৰকল্প এ বার রূপায়িত হবে বিজেপি-র হাত ধরে।
বিজেপি সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, এখন প্রায় প্রতিদিনই এই ধরনের যোগদান পর্ব চলবে। তবে দলের এক শীর্ষ সারির নেতার কথায়, “গত বিধানসভা ভোটে জয়ের পর তৃণমূল যে ভাবে বিরোধীদের দখলে থাকা পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলির রাতারাতি দখল নিয়েছিল, বিজেপি কিন্তু তা করছে না। তৃণমূল পুলিশ ও প্রশাসনকে দিয়ে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল। বিজেপি রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে তা করছে। একটা স্বৈরাচারী উপায় অন্যটা গণতান্ত্রিক। ফারাকটা মানুষ নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন।”