পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই বিপদসীমা পার হয়ে যাচ্ছে। গত বছরও এই সময় এত মারাত্মকভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়ায়নি। এ বছর সংক্রমণ একেবারে লাগামছাড়া। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন বলছে, একদিনে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৬৪৬। এই কিছুদিন আগেই দৈনিক সংক্রমণ সাড়ে চারশোর কাছাকাছি ছিল। একধাক্কায় সাড়ে ছ’শোর চৌকাঠে হাজির হয়েছে। করোনা সংক্রমণে একেবারে শীর্ষে কলকাতা। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রামিত হয়েছেন ২৩৯ জন। এরপরেই উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে নতুন সংক্রমণ দেড়শোর বেশি।
জনজোয়ারে লাগাম পরানো যাচ্ছে না কিছুতেই, স্বাস্থ্যভবনের বক্তব্য এমনটাই। বাসে-ট্রেনে ভিড় বাড়ছে। মুখে মাস্ক পরার বালাই নেই। গণপরিবহনগুলিতে পারস্পরিক দূরত্ব মানছেন না কেউই। সংক্রমণও তাই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। করোনার এত বাড়বাড়ন্তের আরও একটা কারণ হল নির্বাচনী প্রচার। জেলায় জেলায় প্রচারসভায় যেন জনসমুদ্র। সেখানে সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং তো দূর, মুখে মাস্ক অবধি ঠিক করে পরছেন না অনেকেই। আবার রাত পোহালেই ভোট শুরু। কাজেই সব মিলিয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখছে স্বাস্থ্য দফতর।
রাজ্যে এখন করোনা রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ৮৩ হাজার ছাড়িয়েছে। চিন্তা বাড়িয়েছে ভাইরাস সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। এ রাজ্যে যা চার হাজারের বেশি। কোভিড অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে। স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, রাজ্যে সংক্রমণের হার বেশি, তিন শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। কলকাতায় দৈনিক সংক্রমণের হার অন্যান্য জেলাগুলির তুলনায় বেশি।
সামনেই দোল, শবে-বরাতের মতো উৎসব রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে তাই স্থানীয় স্তরে উৎসব পালনে রাজ্যগুলিকে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে বলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাস্থ্য দফতর এদিন নির্দেশিকা জারি করে বলেছে, উৎসব উপলক্ষে কোনও ভিড় বা জমায়েত চলবে না, দোকান-বাজার, রেস্তারোঁয় পারস্পরিক শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা বাধ্যতামূলক। মাল্ক ছাড়া রাস্তার বের হওয়া যাবে না, দোল বা হোলির দিনে ধর্মীয় স্থানগুলিতে ভক্ত সমাগম হতে পারে। তাই সেখানে কোভিড বিধি মেনে চলা জরুরি। যে কোনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছোট করে করতে হবে, বেশি মানুষের ভিড় করা চলবে না। বিভিন্ন স্থানে হাত ধোওয়ার বেসিন ও স্যানিটাইজারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। কোভিড রোগীর সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে আইসোলেশন বেড বাড়াবারও নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।