লোকসভা ভোটের আগে বাংলায় ৪২টি লোকসভা আসনই জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো কর্মীদের কাজ করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন দলনেত্রী। তাঁর সঙ্গেই সুর মিলিয়ে ৪২টি লোকসভা আসনই জেতার দাবি করেছিলেন বীরভূমের ‘বেতাজ বাদসা’ অনুব্রত মন্ডল। তবে আরও একধাপ এগিয়ে তাঁর মন্তব্য ছিল, বাংলায় ৪২টির মধ্যে ৪২টি না পেলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।
কিন্ত্য গত ২৩ মে লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশ হতেই সব উলটপুরান! গোটা দেশে বিজেপির সুনামির আঁচ এসে পড়ে বাংলাতেও। এক ধাক্কায় দুটি আসন থেকে ১৮টি লোকসভা আসন ছিনিয়ে নেয় বঙ্গ বিজেপি। আর এভাবে বিজেপির উত্থানের পরেই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যান অনুব্রত। তাঁর দাবি, রাজনীতিতে অনেক এমন কথা নাকি বলতে হয়।
যদিও ফলপ্রকাশের পর থেকে সেই অর্থে অনুব্রত মন্ডলকে তেমন কিছু বলতে শোনা যায়নি। কিন্তু সময় ঘুরতেই ফের ফুল ফর্মে ফিরছেন কেষ্টা। ফের একবার দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মুখে। তাঁর আগাম ঘোষণা, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বীরভূমের ১১টি আসনে না জিতলে দল ছেড়ে দেবেন তিনি।
গত কয়েকদিন আগে নিমতায় প্রকাশ্যে খুন করা হয় তৃণমূল নেতা নির্মল কুন্ডুকে। এই ঘটনার প্রতিবাদে মুরারইয়ের ভাদীশ্বরে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয় শাসকদলের তরফে। অনুব্রত ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, মুরারইয়ের বিধায়ক আব্দুর রহমান। সেখানে বক্তব্য রাখা শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন অনুব্রত। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের রণকৌশলের বিষয়ে অনুব্রতকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর জবাব, “আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ১১টি আসন তৃণমূল জিততে না পারলে দল ছেড়ে দেব। সেই সঙ্গে আমার দায়িত্বে থাকা বর্ধমানের চারটি আসন (ও ভাতার) জিততে না পারলে দল করব না—এই চ্যালেঞ্জ করে গেলাম!’’
লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে দেখা গিয়েছে একাধিক বিধানসভায় এগিয়ে বিজেপি। খোদ বীরভূমে অনুব্রত মন্ডলের ওয়ার্ডে পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। এই অবস্থায় দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোপের মুখে পড়তে হয়েছেন অনুব্রতকে। এই অবস্থায় ফের একবার দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি কেষ্টা মন্ডলের।