দীর্ঘ সাত মাসের যাত্রা শেষ। মঙ্গলের মাটিতে সফলভাবে নামতে সক্ষম হয়েছে নাসার মহাকাশযান পারসিভিয়ারেন্স রোভার। রাত আড়াইটা নাগাদ লালগ্রহের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করে পৃথিবীর এই দূত। এরপরেই বিশ্ব সাক্ষী থাকে লালগ্রহের প্রথম ছবির।
যে রোভারটি নাসার তরফে পাঠানো হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বিশেষ যন্ত্রপাতি। এর একটি হল রিয়েল টাইম ছবি তোলার জন্য অটোমেটিক যন্ত্র। যার ফলে সুদূর মঙ্গলের মাটি থেকে তোলা প্রথম ছবি দেখল পৃথিবীবাসী। মঙ্গলের প্রথম ছবিটি টুইট করে নাসার তরফে লেখা হয়, “Hello, world. My first look at my forever home.”
এছাড়া এই রোভারে রয়েছে টেরেন রিলেটিভ নেভিগেশন,ল্যান্ডার ভিশন সিস্টেম। এই রোভারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছে আরও একটি বিশেষ যন্ত্র। এর নাম মক্সিই। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন তৈরি করা সম্ভব হলে এই যন্ত্রের সাহায্যে তা করা হবে।
অন্যদিকে জেজেরো ক্র্যাটার (Jezero Crater) মঙ্গলের এমন একটি জায়গা যা মারাত্মক দুর্গম। এখানে রয়েছে গভীর উপত্যকা, সুউচ্চ পাহাড়, বালির টিলা এবং প্রচুর উঁচু নীচু পাথর, যা জায়গাটিকে অসমান করে তুলেছে। তাই এই এলাকায় আদৈ রোভার নামতে কতটা সক্ষম হয়, সেদিকে নজর ছিল সকলের। মনে করা হয় একসময় এখানে নদী প্রবাহিত হত। পরে সেটি হয়তো হ্রদে পরিণত হয়।
এই রোভার মঙ্গলের মাটিতে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গল গ্রহে সবচেয়ে বেশিবার রোভার পাঠানো দেশ হিসেবে প্রথম স্থানে নিজেদের জায়গা পাকা করল বাইডেনের দেশ। মঙ্গলের মাটিতে কী কী উপাদান রয়েছে এবং আদৌ সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কীনা বা আগে ছিল কিনা ইত্যাদি অনুসন্ধান করবে নাসার এই রোভার। একই সঙ্গে লালগ্রহ থেকে মাটি ও পাথরের নমুনা সংগ্রহ করা এই রোভারের উদ্দেশ্য।
রোভার অবতরণের সময় প্রতিটা মুহূর্ত গভীর উৎকণ্ঠায় কেটেছে নাসার বিজ্ঞানীদের। কারণ যে কোনও সুউচ্চ পাহাড়ে ধাক্কা লেগে ভেঙে পড়তে পারত নাসার ল্যান্ডার ও রোভার। এমনকি তা পাহাড়ের খাঁজে আটকে গিয়ে বিকল হয়ে যেতে পারে মুহুর্তে। তাই যে মুহুর্তে রেডিও সিগন্যাল ল্যান্ডিং-এর সাফল্যের খবর নিশ্চিত করে সেসময় উল্লাসে ফেটে পড়েন নাসার বিজ্ঞানীরা।