আপাতত তিনি বহিষ্কৃত তৃণমূল বিধায়ক৷ কিন্তু তার আগে মুক্ত বাতাসে কাজ করছেন৷ সংগঠন পোক্ত করছেন গেরুয়া শিবিরের৷ যা ইঙ্গিত দিচ্ছে এখন আর দিনের নয়, কয়েক ঘন্টার অপেক্ষা মাত্র৷ তারপরই জোড়াফুল ছেড়ে শুভ্রাংশু রায়ের গন্তব্য হবে পদ্মফুলে৷
শুভ্রাংশু বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের ছেলে৷ রবিবার মুকুল রায়ের উপস্থিতিতেই নিজের বাড়িতে বীজপুরের পদ্ম নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সারলেন শুভ্রাংশু৷ বছর দুয়েকের মধ্যেই বিধানসভা ভোট৷ তার আগে ঘর গুছোতে কোমড় বাঁধলেন তিনি৷ তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগদানের আগে সেই কাজ চলছে ইন্ডোরেই৷
এদিন বারাকপুর বিজেপি সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্রের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন বিজপুরের বিধায়ক৷ ছিলেন গেরুয়া দলের মুকুল রায় ও অন্যান্য জেলা স্তরের নেতানেত্রীরা৷ বৈঠকে শুভ্রাংশু ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দেন বলেও জানা গিয়েছে৷ লোকসভায় বীজপুরে লিড পেয়েছে বিজেপি৷ সেই সাফল্য ধরে রাখতে বীজপুরের বিজেপি নেতা, কর্মীদের কাজের রূপরেখা বৈঠকে নির্ধারণ করে দেন মুকুল পুত্র৷
মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই তৃণমূলর অন্দরে শুভ্রাংশুকে নিয়ে নানা জল্পনা ছিল৷ তবে তিনি বলেছিলেন, শাসক দলেই থাকবেন তিনি৷ তাঁর নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্তু দিন যত এগিয়েছে অবস্থার ততই বদল হয়েছে৷ মুকুল রায়ের হাত ধরে একের পর এক তৃণমূল সাংসদ, নেতা, কর্মীরা দল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন৷ শুভ্রাংশু-তৃণমূল বিশ্বাস ভঙ্গের তীব্রতা শুরু তখনই৷ অনুঘটকের কাজ করেছে মাঝে মাঝেই মুকুল পুত্রের ফেসবুক পোস্ট৷ প্রচারে তাঁকে ‘গদ্দার’ও বলেন মমতা৷
মূলত মুকুল রায়ের কৌশলেই ঘুঁটি সাজিয়ে ১৯শের ভোটে বাংলায় বিরাট সাফল্য পেয়েছে পদ্ম শিবির৷ তারপরই পুঞ্জীভূত অপমানের জবাব দেন শুভ্রাংশু রায়৷ শনিবার বলেন, ‘‘বাবার সাফল্যে আমি গর্বিত৷ যে দলকে উনি তিলে তিলে গড়েছিলেন তার চালেই তা প্রায় শেষ হওয়ার পথে৷’’ স্পষ্ট জানিয়ে দেন তাঁর হার, ‘‘বাবার কাছে ছেলের হার৷’’ মুরুল রায় ও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা বিশেষণের জন্য কটাক্ষ করেন শাসক দলের নেতাদের৷
দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশুকে দল থেকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করে তৃণমূল৷ এরপরই শুভ্রাংশু বলেন, ‘‘মুক্ত বাতাসে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারবো বলে আমি খুশি৷’’ বাবার হাত ধরে তিনি কি তবে বিজেপিতে যোগ দেবেন? মুকুল রায় জানিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরেই নাম লেখাবেন ছেলে৷ তবে মুখে কিছু স্পষ্ট করেননি শুভ্রাংশু৷ বলেছিলেন সবার সঙ্গে কথা বলে জানানো হবে৷
রবিবারের পর সেই জল্পনায় ইতি৷ তবে কবে হবে আনুষ্ঠানিক যোগদান সেটাই দেখার৷ পরিষ্কার, ‘বাপ-ছেলে’র অপমানের জবাব দিতে মরিয়া কাঁচড়াপাড়ার মুকুল ও শুভ্রাংশু৷