বছরের শেষ দিনে সকাল থেকে হই হই কাণ্ড কলকাতায় তথা রাজ্য রাজনীতিতে। গরু পাচার কাণ্ডে যুক্ত অভিযোগে ‘প্রভাবশালী’ যুব তৃণমূলনেতার বাড়ি ও অফিসে তল্লাশিতে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি সিবিআই।
ওই নেতা হলেন বিনয় মিশ্র। শাসক দলের উপরের সারির এক নেতার তিনি ঘনিষ্ঠ বলে রাজ্য রাজনীতিতে সুবিদিত। গত ২৩ জুলাই তাঁকে যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি সরকারের থেকে এক্স ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান বলেও খবর।
সিবিআই সূত্রে বলা হচ্ছে, গরু পাচার কাণ্ডে ইতিমধ্যেই এনামুল হক নামে এক ব্যবসায়ী ও বিএসএফ কমান্ড্যান্ট সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জেরা করে বেশ কিছু তথ্য ও সূত্র পাওয়া গিয়েছে। তার ভিত্তিতেই আদালত থেকে সার্চ ওয়ারেন্ট এনে এই প্রভাবশালী নেতার বাড়িতে তল্লাশি চলছে। আপাতত তিন জায়গায় তল্লাশি চলছে। রাসবিহারী গুরুদ্বারার পিছনে তাঁর একটি বাড়িতে, চেতলার একটি বাড়িতে ও লেকটাউনের একটি ফ্ল্যাটে।
সিবিআইয়ের একটি সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যে গত সপ্তাহে এই নেতার অফিসে আয়কর তল্লাশি হয়েছে। তাঁদের মতে, বেআইনি কয়লা পাচার কাণ্ডেও তাঁর জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না।
কলকাতায় তল্লাশি চালানো নিয়ে সিবিআইয়ের অভিজ্ঞতা ভাল নয়। প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাসভবনে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে এক বার পুলিশের হাতে চরম হেনস্থা হতে হয় সিবিআই অফিসারদের। তাই এদিন আধা সামরিক বাহিনী নিয়ে তল্লাশিতে নেমেছে সিবিআই। একটি সূত্রের মতে, তল্লাশি চলাকালীন আধা সামরিক বাহিনীর মোতায়েন আরও বাড়ানো হতে পারে। কারণ, শুধু বিনয় মিশ্রের বাড়ি অফিসে তল্লাশি নয়, তার সূত্র ধরে এদিক ওদিকেও যেতে পারে সিবিআই টিম।
শুধু গরু পাচার কাণ্ড নয়, বেআইনি কয়লা পাচারের ঘটনা নিয়েও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হুগলির দুই জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই। সালকিয়া ও কোন্নগরে তল্লাশি চলছে। কয়লা পাচার কাণ্ডে অনুপ মাঝি বলে এক কারবারির বাড়িতে ও অফিসে এরই মধ্যে তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি তাদের এফআইআর এ জানিয়েছে, বেআইনি কয়লা পাচারের পিছনে বড় চক্র রয়েছে। ইস্টার্ন কোলফিল্ড, রেলের সাইডিংয়ে দায়িত্বে থাকা অফিসাররা তো রয়েছেই। কিন্তু মূল পাণ্ডা হল অনুপ মাঝি। আবার তার সঙ্গে আরও কিছু লোক থাকতে পারে। সেই সঙ্গে প্রশাসন ও পুলিশের কিছু কর্তা ব্যক্তির যোগসাজসের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা।
বস্তুত লালার পিছনে বড় মাথা কে, কার বরাভয়ে লালা এই কারবার করত এখন সেই খোঁজই চালাচ্ছে সিবিআই।
তবে এদিন তল্লাশির সময়ে বিনয় মিশ্র বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর বাবা বাড়িতে ছিলেন। বিনয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর বাবার হাতে নোটিস ধরানো হবে বলে জানা গিয়েছে।