বিজেপির অন্তর্দলীয় সমীক্ষা বলছে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে বিজেপি রাজ্যে ১৫০টি বিধানসভা আসনে এগিয়ে থাকবে৷ অন্তত ১০০ জন বিধায়ক ইতিমধ্যেই রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন৷ শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়াও সেই তালিকায় কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের বিধায়ক রয়েছেন৷
নির্বাচন শেষ হওয়ার পরই সারা দেশের সংবাদমাধ্যমগুলি বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলাফল ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে৷ বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব ওই ফলাফলকে গুরুত্ব দিয়েও নিজেদের যা ‘অ্যাসেসমেন্ট’ বা মূল্যায়নকেই অগিয়ে রাখছেন৷ গেরুয়া শিবির মনে করছে ১৫০টি বিধানসভা আসনে দল ‘লিড’ পাবে৷ উল্লেখ করা প্রয়োজন, এই মূল্যায়ন নির্বাচন শুরুর আগে থেকেই করা হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় পার্টি নিয়োজিত দুটি পৃথক দল এই মূল্যায়ন করেছে৷ রাজ্যের বিস্তারকরাও আলাদা ভাবে নিজেদের মূল্যায়ন কেন্দ্রীয় পার্টির কাছে জমা করেছিল৷
আলাদা-আলাদা মূল্যায়ন এবং পরিসংখ্যান বিচার করেছে সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর বিশেষ দল৷ সেই মতো রাজ্যে মোদী-শাহর ‘সুনামি প্রচার’ শুরু হয়ে যায়৷ রাজ্যে ১৭টি জনসভা করেছেন মোদী৷ শাহ করেছেন ১৬টি জনসভা৷ শীর্ষনেতৃত্ব ৫০টি জনসভা করেছেন৷ রাজ্যের নির্বাচনে বিজেপির যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে এবং ১৫০টি বিধানসভায় যে ‘লিড’ আসতে পারে তা অনেক আগেই বুঝতে পেরেছিলেন দিল্লির ৬-এ পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের ম্যানেজাররা৷
সূত্রের খবর, ১৫০টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে উত্তরবঙ্গের বিধানসভা কেন্দ্রগুলির সংখ্যাই বেশি৷ দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গলমহল সহ মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, দুই পরগণা ও হাওড়ার বিভিন্ন বিধানসভা রয়েছে৷ তবে যা খবর, বাম এবং কংগ্রেসের বিধায়করাই বিজেপির দিকে বেশি ঝুঁকে রয়েছেন৷ সংখ্যায় কম হলেও তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে তলায় তলায় যোগাযোগ রাখছেন৷
রাজ্যে নির্বাচনী জনসভা করতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে জানিয়েছিলেন, চল্লিশ জন বিধায়ক তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন৷ ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ২৩ মের পর তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে দিন গুণতে হবে৷ রবিবার লোকসভা ভোট শেষ হওয়ার পরই সোমবার রাজ্য বিজেপির সভাপতি কলকাতায় ‘অন্য দলের’ বিধায়কদের বিজেপির সঙ্গে গোপনে যোগাযোগের প্রশ্নে মুখ খুলেছেন৷
দিলীপের বক্তব্য, ‘‘কেউ তো বলবে না দলে যাব৷ ফোন করছে অনেকে৷ কিছু উদ্দেশ্য আছে৷ কালকেও একজন বিধায়ক আমাকে ফোন করেছে৷ শুধু টিএমসি নয়, বিভিন্ন পার্টির এমএলএ-রা ফোন করছে৷ জিজ্ঞাসা করছে, কী কেমন আছো? অনেক পরিশ্রম হয়েছে৷ শরীর ঠিক আছে তো? আমিও জিজ্ঞাসা করছি,আপনারা কেমন আছেন৷ কেউ তো আর এমনিতে ফোন করে না৷ নিশ্চই উদ্দেশ্য আছে৷’’
এক ধাপ অগিয়ে দিলীপ আরও জানান, অন্যান্য দলের ফোন তিনি আগে থেকেই পান৷ ‘‘প্রধানমন্ত্রী বললেন যে তাঁর কাছে ৪০ জন (বিধায়কের) খবর পৌঁছেছে৷ এখানে তো ১০০ জনের খবর আছে৷ এখানকার খবর দিল্লি গিয়েছে৷’’
সৌজন্যে কলকাতা২৪x৭.কম