ফের অপসারিত রাজীব কুমার। কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে তাঁকে আগেই সরতে হয়েছিল মেয়াদের কারণে। তারপর পাঠানো হয়েছিলম এডিজি সিআইডি করে। এ বার সেখান থেকেও তাঁকে সরিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। বুধবার সন্ধে বেলা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে দিল্লিতে সকাল ১০টার সময় রিপোর্ট করতে হবে। তাঁকে যুক্ত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে। ফলে বাংলা থেকে সোজা দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হল রাজীব কুমারকে।
রবিবার সপ্তম দফার ভোট। তার আগেই এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে পর্যবেক্ষকদের অনেকে। শুধু রাজীব কুমার নন, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব অত্রি ভট্টাচার্যকেও সরিয়ে দিয়েছে কমিশন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন মুখ্য সচিব মলয় দে।
নির্বাচন ঘোষণার আগেই রাজীব কুমারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কারণ কলকাতার নগরপাল পদে তিন বছর হয়ে গিয়েছিল। নির্বাচনের বিধি অনুযায়ী কোনও পুলিশ কর্তা এক পদে তিন বছরের বেশি থাকলে তাঁকে সরে যেতে হয়। রাজীব কে লালবাজার থেকে সরিয়ে ভবানী ভবনে পাঠায় নবান্ন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন অনুজ শর্মা। কিন্তু ভোট ঘোষণা হতেই আইন-শৃঙ্খলার পুরো বিষয়টি চলে যায় কমিশনের নিয়ন্ত্রণে। ভোটের চারদিন আগে এই সিদ্ধান্তের ফলে, কলকাতার ভোটের দিন শহরে থাকতে পারবেন না রাজীবকুমার।
এর আগে বিজেপি-র তরফে মুকুল রায়রা গিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, রাজীব কুমারকে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে সরালেও, তাঁকে কলকাতা পুলিশএর সঙ্গে যুক্ত শাখার চার্জে রেখে দেওয়া হয়েছে। এত দিঞ্জ সে সব নিয়ে নড়াচড়া না হলেও, ভোটের চার দিন আগে পদক্ষেপ করল কমিশন।
রাজীব কুমার সম্পর্কে বিরোধীদের অভিযোগ বিস্তর। তাঁর বাড়িতে সিবিআই-এর টিম যাওয়ার পর কলকাতার রাস্তায় হুলুস্থূল কাণ্ড, তারপর মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়া এবং ধর্ণায় বসা। সেই ধর্ণায় এসে রাজীব-সহ একাধিক পুলিশ আধিকারিকের বসে পড়া, এ নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। একাধিকবার কমিশনে জানিয়েছিল বিজেপি।
পর্যবেক্ষকদের মতে, নির্বাচন কমিশনের এই এক্তিয়ার রয়েছে। কমিশনের যে সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে যে কোনও রাজ্যের, যে কোনও প্রশাসনিক কর্তাকে সরিয়ে দেওয়ার। কিন্তু এটা অতীতে দেখা যায়নি। স্মরণাতীত কালে এমন ঘটনা দেখা যায়নি। ফলে অনেকের মতেই, কমিশনের এই সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন।