নিউজ ডেস্ক, কলকাতা: বিজেপি মনে করে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের থেকে ভালো মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন শীলা দীক্ষিত৷ লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এক বিজেপি নেতার মুখে এই কথা শুনে রাজধানীর রাজনৈতিক মহলের মনে হয়েছে যেন ভূতের মুখে রাম নাম৷ শীলা দীক্ষিত এবং কেজরিওয়াকে ঘিরে এই মন্তব্যটি করেছেন দিল্লির বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারি৷ মনোজ দিল্লি উত্তরপূর্ব থেকে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন৷ তিনি শীলা দীক্ষিতের বিরুদ্ধেই লড়াই করেছেন৷ রাজধানীতে রবিবার ভোট হয়ে গিয়েছে৷ লোকসভায় লড়াইয়ের ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোজ কেন এই মন্তব্য করেছিলেন তা নিয়ে দিল্লিতে বেশ আলোড়ন উঠেছে৷
কেন এই কথা বলতে গেলেন মনোজ, সেই প্রশ্ন নির্বাচনের পরও বারবার উঠতে শুরু করেছে৷ মনোজ বলেছিলেন, ‘‘কোনও সন্দেহ নেই শীলা দিক্ষীতের জনপ্রিয়তা বেড়েছে৷ ওর ভাবমূর্তি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের থেকে ভালো৷’’মনে রাখা দরকার, ২০১৪ লেকসভা নির্বাচনে বিজেপি দিল্লিতে ৭টি আসনই দখল করেছিল৷ দ্বিতায় স্থানে ছিল কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ) এবং তৃতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস৷ এই নির্বাচনেও বিজেপি ৭টি আসন দখল করবে বলে দাবি করেছেন মনোজ৷ তবে কংগ্রেস না আপ – কে দ্বিতীয় স্থানে থাকবে তা নিয়ে নিশ্চিত নন মনোজ? ‘‘কংগ্রেস এবং আপের মধ্যে লড়াই কঠিন লড়াই হবে৷’’
বেশিদিন নয়, কিছুদিন আগেই আম আদমি পার্টির (আপ) আহ্বায়ক তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ভোটারদের ভেবেচিন্তে ভোট দিতে অনুরোধ করেছেন৷ কেজরিওয়ালের বলেছিলেন, জেনে রাখবেন নরেন্দ্র মোদী আবার প্রধানমন্ত্রী হন তবে অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন৷ দেশে ঘোরতর দূর্দিন নেমে আসবে৷ সেই দেশের কী হবে যেখানে মোদী প্রধানমন্ত্রী আর অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হবেন? ‘‘একবার ভেবে দেখবেন৷ ভোট দেওয়ার আগে একবার অন্তত ভাববেন৷’’ – ভোটারদের এই ভাষাতেই সতর্ক করেছিলেন কেজরিওয়াল৷
কেজরিওয়ালের সঙ্গে বিজেপির লড়াই শুরু থেকেই৷ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই কেজরিওয়াল বিজেপি-কংগ্রেসের সঙ্গে লড়াই করছেন৷ তবে সম্প্রতি জোট রসায়নের কথা মাথায় রেখে কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখেন কেজরিওয়াল৷ দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত কেজরিওয়ালকে বাড়িতে ভোজনে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন৷ অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদীরকে বাক্যবাণে বিদ্ধ করেছেন কেজরিওয়াল৷ মোদীকে ফারজি রাষ্ট্রবাদী বা নকল দেশপ্রেমিক আখ্যাও দিয়েছেন তিনি৷ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, কখনও দেখেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর হয়ে ব্যাট ধরেছেন?
গত ৭০ বছরের ইতিহাসে এই ঘটনা কখনও দেশে কখনও ঘটেছে৷ মোদীর দেশপ্রেম কী রকম সকলের জানা হয়ে গিয়েছে৷ নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দিল্লিতে আপ বিরোধী ভোটকে একজোট করতে চেয়েছিলেন মনোজ তিওয়ারি৷ সেই করাণেই শীলা দীক্ষিতকে প্রশংসা করে তিনি ওই মন্তব্য করেছিলেন৷ দিল্লিতে এবারে মূল লড়ায়ে রয়েছে আপ এবং বিজেপি৷ কেজরিওয়ালের বক্তব্য, আপ নির্বাচনে লড়াই করে উন্নয়নের কথা বলে৷ রাস্তাঘাট, পানীয় জল, বিদ্যুৎ থেকে ট্রাফিক এই সবই ইস্যু৷ কিন্ত বিজেপি রাজনীতি করছে জাতপাত ও ধর্মের উপর এটাই পার্থক্য৷ অন্যদিকে বিজেপি বলছে কেজরিওয়ালের দূর্নীতি ধরা পড়ে গিয়েছে৷