প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে কেবলমাত্র ধর্মীয় কারনে চরম অত্যাচারিত, নিপীড়িত এবং বিতাড়িত হয়ে এদেশে আসা হতভাগ্য উদ্বাস্তু শরনার্থী মানুষ গুলোর মুখে একটু হাসি ফুটিয়ে তুলতে ভারত সরকার সম্পূর্ণ মানবিক কারণেই স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘ ৭৩ বছর পর শীত ঘুম কাটিয়ে যখন তাদের বৈধ নাগরিকত্ব দেওয়ার সাধু প্রচেষ্টা শুরু করলো সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, ২০১৯ প্রণয়নের মাধ্যমে, ঠিক তখনই এর প্রতিবাদে জিহাদি ও বাম ইকোসিস্টেমের ছত্রছায়ায় পালিত কাল সাপ গুলি দেশ জুড়ে সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করতে শুরু করলো। শুরু হ’ল লাগাতার সংগঠিত মিথ্যের বেসাতি। এরই ফলশ্রুতিতে ঘটলো দিল্লির নৃশংস হত্যালীলা। দিল্লির ঐ পৈশাচিক হিংসার ঘটনায় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের প্রাক্তন বামপন্থী সদস্য উমর খালিদকে গোটা ঘটনায় অন্যতম মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত করে এবং শাহিনবাগে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী জিহাদি আন্দোলন চলাকালীন, সেখানে উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়ার অপরাধে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে (ইউএপিএ) গ্রেফতার করার পরই প্রত্যাশিত ভাবেই শুরু হয়েছে জিহাদি বাম ইনটেলেকচুয়ালস্ দের নির্লজ্জ সাম্প্রদায়িক মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা। আবারও ফ্রিডম্ অফ এক্সপ্রেশনের নামে বিকৃত জিহাদি-বাম নেক্সাসের কদর্য রূপ প্রকাশিত হতে শুরু করেছে জেএনইউ আর যাদবপুর ক্যাম্পাসে। আওয়াজ উঠছে standwithumarkhalid। Muslim_Lives_Matter। বারংবার কেন দেশদ্রোহী দের পক্ষ নিয়ে বাম মনস্ক তথাকথিত বুদ্ধিজীবিরা কতিপয় কয়েকটি শিক্ষাঙ্গনে দেশ ও ঐতিহ্য বিমুখ মিথ্যে ন্যারেটিভের প্রোপাগাণ্ডা ছড়িয়ে যুব সম্প্রদায়ের স্বভাবজাত বৈপ্লবিক মনন কে বিপথগামী করতে উদগ্রীব?
ভুলে গেলে চলবে না, এই রাজ্যে বাম আমলে ঢাকার জেনেভা ক্যাম্প সহ বাংলাদেশের নানা জায়গা থেকে হাজার হাজার বিহারী রাজাকার ঢুকিয়ে কলকাতার ডেমোগ্রাফি পাল্টে দেওয়ার মূল কারিগর, মন্ত্রী কমরেড কলিমের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার জন্য যে নৃশংস কায়দায় প্রাণ দিতে হয়েছিল ডিসি পোর্ট আইপিএস বিনোদ মেহতা কে, ঠিক সেই একই পৈশাচিক কায়দায় গোয়েন্দা অফিসার অঙ্কিতকে ও প্রাণ দিতে হল সিএএ এর বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক আন্দোলনে নামা বাম সমর্থিত জিহাদি দের হাতে। বিনোদ মেহতার শরীর চপার দিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলে দেওয়া হয়েছিল ড্রেনে, অঙ্কিত শর্মার দেহে ও চারশো বার ছুরিকাঘাত করে ফেলে দেওয়া হয়েছে ড্রেনে। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। চার চারশো বার! যে চারশো বার আপনি আফজল গুরু, তাহির হুসেন, উমর খালিদের মত জিহাদি শক্তি কে বাঁচাতে মিথ্যের কলম ধরেছেন; যে চারশো বার আপনি বিপন্ন স্বজাতির আকুল আহ্বান থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন; যে চারশো বার আপনি নিজস্ব ঐতিহ্যের অস্মিতাকে আরবি দিনারে বিক্রি করে মেকি ধর্মনিরপেক্ষতার মিছিলে হেঁটে গেছেন; যে চারশো বার আপনি সোচ্চারে বলেছিলেন খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানই মানুষের একমাত্র সমস্যা; যে চারশো বার আপনি মিথ্যে সেকুলারিজমের নামে লুকোচুরি খেলেছেন; যে চারশো বার আপনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ, ‘ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে, ইনশাল্লাহ ইনশাল্লাহ’ ধ্বনিতে মুখরিত করেছেন; যে চারশো বার আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে দেশদ্রোহী আফজল গুরুর ফাঁসি মুকুবের আবেদনে কর্নপাত না করা স্বর্গীয় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি কে ‘Hangman mukherjee‘ বলে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন; যে চারশো বার আপনি ‘আফজল হাম শরমিন্দা হ্যায়, তেরা কাতিল জিন্দা হ্যায়’ বলে রাজপথে শ্লোগান তুলে দেশের সমস্ত গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের মান-মর্যাদা ধূলিসাৎ করেছেন; যে চারশো বার আপনি গলার শিরা ফুলিয়ে ‘Hindu rashtra is rapist’ আওয়াজ তুলে রাজপথ কাঁপিয়েছেন, ঠিক সেই চারশো বারই অঙ্কিত শর্মার সর্বাঙ্গে ছুরির আঘাত চালিয়েছে জিহাদিরা। আর এরজন্য সেকুলারিজমের নামে আপনার এই একপেশে ভন্ডামিই দায়ী।
শুধুমাত্র সংখ্যাধিক্যের অন্ধ গরিমায় যে সেকুলারিজম শব্দবন্ধ টি ভারতীয় সংবিধানের অপরিবর্তনীয় প্রস্তাবনায় ১৯৭৬ সালে বলপূর্বক ঢোকানো হয়েছিল, তার একপাক্ষিক বিকৃত অপব্যাখ্যায় অনুপ্রাণিত হয়ে, যারা ১৯৮৯-৯০ সালে কাশ্মীরি পন্ডিত গনহত্যা নিয়ে অপরিসীম নির্লজ্জতায় মুখ বন্ধ রাখে; আজ পশ্চিমবঙ্গের দিকে দিকে স্কুল গুলিতে মৌলবাদী আগ্রাসনের সম্মুখে বাধ্যতামূলকভাবে সরস্বতী পূজো বন্ধ হয়ে যাওয়া কে যারা তাদের মেকি সেকুলারিজমের পরাকাষ্ঠায় তুল্যমুল্য বিচার করে চুপ করে থাকা কে শ্রেয় বোধ করে প্রকারান্তরে মৌলবাদীদের হাত শক্ত করছেন, যারা আদ্যন্ত একটি বিকৃত জড়বাদী দর্শনে মজে গিয়ে জাতির ঐতিহ্য স্বরূপ শ্রীমদভগবদগীতা কে কলকাতা বইমেলায় পদদলিত করে শ্লাঘা বোধ করেন, তাদের প্রতি প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয় কেন ক্রমাগত মিথ্যার বেসাতি চালিয়ে মুসলিম সেন্টিমেন্টে সুড়সুড়ি দিয়ে পুনরায় দাঙ্গার ইন্ধন দিয়ে চলেছেন? Kashmiri_ Pandit_Lives_Matter লেখা পোস্টার বা Students_Must_Worship_Saraswati_In_Schools লেখা পোস্টার নিয়েও রাস্তায় নামুন। জানি, সেটা অলিক কল্পনা। কিন্তু কেন, কিসের স্বার্থে আপনাদের এই হিপোক্রেসি? যে অভিধান আপনারা পড়েন; সেখানে বোধ করি, আবশ্যিকভাবে সেকুলারিজম শব্দটি হিপোক্রেসির দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে।
দেশদ্রোহী দের গ্রেফতারের সাথে সাথে তাদের ঘৃণ্য অপরাধ কে আড়াল করার অসাধু প্রচেষ্টায় ধর্ম কে সামনে এনে ভিকটিম ভিকটিম খেলার প্রকৃষ্ট উদাহরণ #Muslim_Lives_Matter জাতীয় সাম্প্রদায়িক ন্যারেটিভ। মারুনা মুর্মু দের মত বামপন্থী তথাকথিত বুূদ্ধিজীবিদের কাছে জানতে মন চাই, উমর খালিদ, শার্জিল ইমামদের মত মৌলবাদী-জিহাদি-দেশবিরোধী শক্তি দের আড়াল করতে আর কতদিন সাম্প্রদায়িক সুড়সুড়ি দেওয়া মিথ্যে ন্যারেটিভের নোংরা খেলা খেলবেন? জাতীয়তাবাদী, প্রকৃত অর্থে সেকুলার মা-ভাই-বোনে দের কাছে অনুরোধ, একটু ভেবে দেখবেন এই সর্বগ্রাসী মিথ্যে বাম-মৌলবাদী প্রোপাগাণ্ডার বিরুদ্ধে মেরুদণ্ড সোজা রেখে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন না আজও জেগে ঘুমিয়ে থাকবেন। নিজ গৃহে আয়নার সামনে দাড়িয়ে সুপ্ত অস্মিতা জাগ্রত করার চেষ্টা করুন, না হ’লে আপনার ঘরের দুধের শিশুটিই হয়ত একদিন আপনার প্রতিস্পর্ধী হয়ে বলে উঠবে……
তুমিও মানুষ, আমিও মানুষ
তফাৎ শুধু শিঁরদাড়ায়।।
সেদিন শিশুটির চোখে চোখ রেখে উত্তর দিতে পারবেন তো??
লেখনী – ডঃ তরুণ মজুমদার (Dr. Tarun Majumdar)