করোনা টিকার প্রাথমিক পর্যায়ের ট্রায়ালে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সফল রাশিয়ার ‘স্পুটনিক ফাইভ’ (Sputnik V)। শুক্রবার বিখ্যাত বিজ্ঞান পত্রিকা ‘দ্য ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত এই টিকার ট্রায়াল রিপোর্ট অন্তত তেমনটাই বলছে।
কোনও নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই টিকা তৈরির ইঁদুরদৌড়ে নিজের ক্ষমতা প্রকাশ করতে চাইছে রাশিয়া। এই বদনামই জুটেছিল রাশিয়ার। ল্যানসেটে (The Lancet) প্রকাশিত রিপোর্টে তা অনেকটাই ঘুচল বলেই মনে করছেন একদল বিশেষজ্ঞ। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং আরডিআইএফ (রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড)-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে গামালিয়া সায়েন্টিফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিয়োলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি। রাশিয়ার (Russia) প্রথম উৎক্ষেপিত কৃত্রিম উপগ্রহের নামেই ভ্যাকসিনের নাম রাখা হয়েছে ‘স্পুটনিক ফাইভ’।
দ্য ল্যানসেটের সূত্র বলছে, জুন-জুলাই মাসে যে ৭৬ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাতে প্রত্যাশামতোই সুফল মিলেছে। কোনওরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই করোনার বিরুদ্ধে ১০০ শতাংশ রক্ষাকবচ তৈরি করতে পারছে টিকাটি। গত ১২ আগস্ট বড়মাপের কোনও ট্রায়ালে যাওয়ার আগেই দু’টি ডোজের ‘স্পুটনিক ভি’ করোনা প্রতিরোধ করবে বলে রাশিয়া ঘোষণা করছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা রাশিয়ার সেই পদক্ষেপকে কটাক্ষ করেছিল। ল্যানসেটের এই রিপোর্টে তাদের রক্তচক্ষু খানিকটা স্তিমিত হল। টিকাকরণের ১৮০ দিনের ব্যবধানে ফের ওই ৭৬ জন স্বেচ্ছাসেবককে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আতশকাচের তলায় রাখা হবে। তাঁরা কেমন আছেন, দেখা হবে।
ল্যানসেটের সূত্র বলছে, ৪২ দিনের দুই ডোজের টিকায় কাজ হচ্ছে। ঠিক যেভাবে কোভিড আক্রান্তের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, তেমনই হচ্ছে এক্ষেত্রে। তবে এখন কোভিডের ক্ষেত্রে তৃতীয় পর্যায়ের র্যান্ডামাইজড ট্রায়ালে দেখা হবে, অ্যান্টিবডি তৈরির পাশাপাশি টি-সেল ইমিউনিটি কতটা তৈরি করতে পারছে এই টিকা। যেটা অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ডের টিকা পেরেছে। আশার কথা, মস্কোর এক সরকারি স্তরের উচ্চপদস্থ কর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, টিকার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছিল ল্যানসেটের রিপোর্টই তার জবাব। জুন—জুলাইয়ের প্রথম পর্যায়ের ট্রায়ালের পর একাধিক মহাদেশের ৪০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের উপর স্পুটনিক ভি প্রয়োগ করা হচ্ছে।