রাতের অন্ধকারে সান্টা এসে দিয়ে যাবে উপহার।

রাতের অন্ধকারে সান্টা এসে দিয়ে যাবে উপহার। আর এই উপহার আদান-প্রদানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক পৌরাণিক চরিত্র। যার নাম সান্টাক্লজ। সান্টাক্লজ দেশভেদে সেইন্ট নিকোলাস, ফাদার ক্রিসমাস, ক্রিস ক্রিঙ্গল, বা সাধারণভাবে সান্টা নামে পরিচিত।  সান্টাক্লজ একজন হাসিখুশি এবং আমুদে বৃদ্ধ বলেই পরিচিত। প্রচলিত আছে যে, প্রতিবছর ক্রিসস ইভ বা ২৪ ডিসেম্বর রাতে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে তাদের জন্য উপহার রেখে আসেন। এই কাজটি করেন একেবারে গোপনে। যারা উপহার পেতে চায় তারা ঘরের ফায়ারপ্লেসের কাছে মোজা ঝুলিয়ে রাখে। এটাই রীতি। আর সান্টাক্লজ ওই ফায়ারপ্লেসের চিমনি দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করেন এবং মোজার ভিতর উপহার রেখে যান।

 সান্টাক্লজের পরণে থাকে সাদা কলার ও কাফযুক্ত লাল কোট, সাদা কাফযুক্ত লাল ট্রাউজার্স, কালো চামড়ার চওড়া বেল্ট ও জুতো। সঙ্গে তাঁর বিখ্যাত শ্বেতশুভ্র দাড়ি হাসি।  সান্টাক্লজ একটি কিংবদন্তী চরিত্র। তাঁকে ঘিরে রয়েছে নানা লোককথা, উপকথা। এসব কিংবদন্তী অনুসারে সান্টাক্লজের বসবাস সুদূর উত্তরে বরফ ঢাকা দেশে। এটাও ধারণা করা হয় যে সান্টাক্লজ উত্তর মেরুতে বসবাস করেন। সান্টাক্লজের সাথে তাঁর স্ত্রী মিসেস ক্লজ, অসংখ্য যাদুক্ষমতাসম্পন্ন এলফ এবং আট-নয়টি উড়ন্ত বলগা হরিণও বসবাস করে। বলা হয়ে থাকে, সান্টা সারা বিশ্বের শিশুদের সারা বছরের আচরণ দেখে বিশেষ তালিকা প্রস্তুত করে থাকেন। তারপর তিনি ইভ ক্রিসমাসের দিনে লক্ষী শিশুদের খেলনা, চকলেট ও অন্যান্য উপহার দিয়ে যান। তিনি এই কাজগুলি সম্পন্ন করেন এলফ আর বলগা হরিণদের সাহায্যে।

 মনে করা হয়, সান্টাক্লজের রয়েছে খেলনা আর উপহার তৈরির কারখানা। সারা বছর এলফরা এই কারখানায় উপহার তৈরি করে। এই উপহারগুলোই সান্টা তালিকা ধরে ধরে শিশুদের দিয়ে যান। এ কাজেও তাঁকে সাহায্য করে এলফরা।  সান্টাক্লজের উপহারে ভরা শ্লেজগাড়ি টেনে নিয়ে আসে আট-নয়টি উড়ন্ত বলগা হরিণ। এই শ্লেজগাড়িতে চড়েই তিনি এক রাতে সারা পৃথিবীর শিশুদের উপহার পৌঁছে দেন। সান্টাক্লজ নামটি আসলে ডাচ সিন্টারক্লাস নামের অপভ্রংশ, যার সাধারণ অর্থ হলো সেইন্ট নিকোলাস। সেইন্ট নিকোলাস ছিলেন খ্রিষ্টিয় চতুর্থ শতাব্দীর একজন বিশপ। অন্যান্য সন্তসুলভ অবদানের পাশাপাশি তিনি শিশুদের পরিচর্যা, দয়া ও উপহার প্রদানের জন্য খ্যাতনামা ছিলেন। অনেক দেশে তাঁর সম্মানে ৬ ডিসেম্বর উপহার আদান- প্রদানের মাধ্যমে উত্‍সব পালিত হয়। 

অরুপ দে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.