ফাইজার-বায়োনটেকের তৈরি মর্ডানা করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে এবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেন এক চিকিৎসক। তাঁকে ভর্তি করতে হয়েছে হাসপাতালের আইসিইউতে। ঘটনাটি মেক্সিকোতে।
চিকিৎসকের নাম প্রকাশ্যে আনা হয়নি। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মেক্সিকোর উত্তর প্রদেশের নুয়েভো লিওন প্রদেশের হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন ৩২ বছরের এক মহিলা চিকিৎসক। ভ্যাকসিন নেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে তীব্র কাঁপুনি, শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা ও গোটা দেহে অ্যালার্জি দেখা যায়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এনসেফালোমেইলেটিস ধরা পড়েছে। যেক্ষেত্রে মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডে প্রদাহ তৈরি হয়। চিকিৎসকের অ্যালার্জি জনিত সমস্যা আগে থেকেই ছিল, কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার পর মস্তিষ্কেও প্রদাহ তৈরি হয়েছে, এমন কোনও নিদর্শন আগে পাওয়া যায়নি। গোটা বিষয় নিয়ে ফাইজার-বায়োনটেকের পক্ষ থেকে অবশ্য কিছু জানানো হয়নি।
কিছুদিন আগেই মর্ডানা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতার কথা শুনিয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক চিকিৎসক। হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ কমা সহ মুখে-জিভে অ্যালার্জি সহ একাধিক উপসর্গের মধ্যে পড়েছিলেন তিনি। কিছুটা সময়জুড়ে চলা অস্বস্তি যদিও পরে কেটে গিয়েছিল। তবে পরে সংবাদমাধ্যমে গোটা অভিজ্ঞতা শোনানোর পর চিকিৎসক বলেছিলেন চাইব না এরকম অস্বস্তির মধ্যে দিয়ে কেউ যাতে যান।
এর আগেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে ফাইজার-বায়োনটেকের করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর অস্বস্তির খবর পাওয়া গিয়েছিল বিভিন্ন জায়গা থেকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট ছাড়াও ব্রিটেনেও পাওয়া গিয়েছিল এরকম একাধিক ঘটনা।
ব্রিটেনই প্রথম দেশ হিসেবে মর্ডানা টিকার গণটিককরণের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কিছুদিনের মধ্যে অ্যালার্জিতে ভোগার একাধিক খবর পাওয়ার জেরে বন্ধ করে দিতে হয়েছিল যে প্রক্রিয়া। পরে অবশ্য তা চালু হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাটির বানানো ভ্যাকসিন দিয়েই মার্কিন মুলুকে চলছে জন সাধারণের গণ টিকাকরণ। সেখানে অবশ্য তা স্তব্ধ হয়নি। যদিও এর মাঝে অক্সপোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনিকার তৈরি করা ভ্যাকসিনও গণ টিকাকরণের জন্য ছাড়পত্র দেয় ব্রিটেন।
এদিকে অক্সফোর্ডের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে ভারতে করোনা ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চালানো সিরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড ইতিমধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছে ব্যবহারিক প্রয়োগের জন্য। ভারত বায়োটেক ও আইসিএমআরের তৈরি কোভ্যাকসিনকেও সবুজ সংকেত দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)। তবে ভারতে করোনা ভ্যাকসিন বাজারজাত করতে চেয়ে প্রথম সংস্থা হিসেবে ফাইজার ছাড়পত্র চাইলেও তাদের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়নি।