অরুণাচল প্রদেশের ভেতরে গ্রাম বানিয়েছে চিন, দেখা গেল উপগ্রহ চিত্রে

ভারত যখন করোনা অতিমহামারীর মোকাবিলা করতে ব্যস্ত, তখন গোপনে অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে আস্ত একটা গ্রাম বানিয়ে ফেলেছে চিন। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি তোলা উপগ্রহ চিত্রে সেই গ্রামটি দেখা গিয়েছে। গ্রামটির অবস্থান সীমান্তের সাড়ে চার কিলোমিটার ভেতরে। উজান সুবনসিরি জেলায় সারি ছু নামে এক নদীর তীরে গড়ে তোলা হয়েছে গ্রামটি। সেখানে ১১০ টি কুঁড়েঘর রয়েছে।

২০১৯ সালের ২৬ অগাস্ট উপগ্রহ থেকে ওই অঞ্চলের ছবি তোলা হয়েছিল। তখন সেখানে কোনও বাড়ি দেখা যায়নি। কিন্তু ২০২০ সালের নভেম্বরে তোলা ছবিতে সেখানে ১০০-র বেশি বাড়ি দেখা যাচ্ছে। তা থেকে পরিষ্কার গত বছরেই গ্রামটি গড়ে তোলা হয়েছে। বিদেশমন্ত্রক থেকে বলা হয়েছে, কয়েক বছর ধরেই সীমান্তে বেআইনি নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছে চিন।

গত অক্টোবরে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “কিছুদিন ধরেই ভারত সীমান্তে পরিকাঠামো গড়ে তুলছে। বাড়তি সেনাও মোতায়েন করছে। সেজন্যই সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে।” কিন্তু অরুণাচল প্রদেশে নতুন চিনা গ্রামের আশপাশে ভারত কোনও রাস্তা বা অন্য পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে বলে দেখা যায়নি।

গত নভেম্বরে অরুণাচলের বিজেপি সাংসদ তাপির গাও লোকসভায় জানিয়েছিলেন, উজান সুবনসিরি জেলায় চিনারা প্রায়ই ঢুকে পড়ছে। সোমবার সকালে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, চিনারা অরুণাচলে ঢুকে দুই লেনের রাস্তা বানিয়ে ফেলেছে। এখনও তারা পরিকাঠামো বানিয়ে চলেছে। তারা সীমান্ত পেরিয়ে ৬০-৭০ কিলোমিটার ঢুকে পড়েছে।

চিন সীমান্তে লাদাখে গতবছর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে অরুণাচল সীমান্তেও নিঃশব্দে এলাকা দখলের চেষ্টা করছে চিন। গতবছর ১৫ জুন গালওয়ানে টহলরত ভারতীয় সেনার উপর আচমকা হামলা করে চিনা সেনা। এই হামলায় ২০ ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন। পাল্টা মারে চিনের প্রায় ৩৫ জওয়ান নিহত হয় বলে খবর। অবশ্য চিনের তরফে এই সংখ্যা জানানো হয়নি। এরপর থেকে দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তারপর থেকে সেনার উচ্চ পর্যায়ের ও কূটনৈতিক স্তরে প্রচুর বৈঠক হয়েছে। দু’দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরাও বৈঠকে বসেছেন। কিন্তু কোনও সমধান সূত্রে বের হয়নি।

তারমধ্যেই সীমান্তে উত্তাপ ক্রমাগত বাড়ছে। একদিকে যেমন সেনা বাড়াচ্ছে লাল ফৌজ, অন্যদিকে তেমনই সেনা বাড়াচ্ছে ভারতও। শীতেও যাতে সীমান্তে সেনা থাকে তার বন্দোবস্ত করেছে ভারত। নিয়ে যাওয়া হয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্র। এর থেকেই পরিষ্কার চিনের আগ্রাসনের জবাবে চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.