লর্ডস টেস্টে মহম্মদ সিরাজের আউট হওয়ার দৃশ্যটা সহজে ভোলার নয়। শোয়েব বসিরের বল ভাল করে ডিফেন্স করার পরও প্লেড-অন হয়ে যান। বল পিচের ক্ষতে পড়ে উইকেটে গিয়ে লাগে। শেষ হয়ে যায় ভারতের শেষ ২ উইকেটে ৩৫.২ ওভারের প্রতিরোধ। সিরাজ আউট হতে ২২ রানে হেরে যান শুভমন গিলেরা। ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টের আগে আবার উঠল সেই প্রসঙ্গ। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেন সিরাজ নিজেই।
ভারতের জোরে বোলার জানিয়েছেন, লর্ডসে হারের হতাশা কাটাতে তাঁর বেশ সময় লেগেছে। সিরাজ বলেছেন, ‘‘ভীষণ হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। বলটা ব্যাটের মাঝের অংশ দিয়ে খেলার পরও আউট হয়ে গেলাম। জাড্ডু ভাইয়ের (রবীন্দ্র জাডেজা) সঙ্গে জুটিটা ভালই গড়ে উঠেছিল। সে দিন মনে হচ্ছিল, আউট হব না। যে ভাবে ব্যাট করছিলাম, তাতে বেশ আত্মবিশ্বাসী লাগছিল। মনে হচ্ছিল, যাই হোক আমি আউট হব না। নিজে ভুল না করলে আমাকে ওরা আউট করতে পারবে না। দুর্ভাগ্যবশত আউট হয়ে গেলাম। বলটা ব্যাটের মাঝখান দিয়ে খেলার পরও! ঘটনাটা ভীষণ হৃদয়বিদারক। ম্যাচটা জিততে পারলে, সিরিজ়টা অন্যরকম হতে পারত।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘হতাশা কাটিয়ে উঠতে বেশ সময় লেগেছে। ম্যাচটা অনেকটা ২০২১র মতো ছিল। আমিই শেষ উইকেট নিয়েছিলাম। তার পর ওই রকম একটা পরিস্থিতি তৈরি হল। মানুষ হিসাবে আমি খুব আবেগপ্রবণ। এমন একটা পরিস্থিতিতে আউট হয়েছি, যে নিজেকে শান্ত করতে পারছিলাম না।’’
সিরাজ মনে করেন, তাঁর জন্যই ভারতকে হারতে হয়েছে। ব্যর্থ হয়েছে জাডেজা এবং জসপ্রীত বুমরাহের লড়াই। হায়দরাবাদের ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘জাড্ডু ভাই দুর্দান্ত লড়াই করছিল। জসপ্রীত ভাইও দারুণ ব্যাট করেছিল। ৫৪ বল খেলেছিল জসপ্রীত ভাই। এমন একটা লড়াই হার দিয়ে শেষ হল। এত পরিশ্রম মূল্য পেল না। তবে সিরিজ় এখনও শেষ হয়নি।’’
লর্ডসের হার নতুন করে উৎসাহিত করছে সিরাজকে। তাঁর জেদ বাড়াচ্ছে। সিরাজ বলেছেন, ‘‘হারলেও লর্ডসের ইনিংস আমাকে উৎসাহিত করেছে। আমি আরও ভাল খেলার চেষ্টা করব। নিজের ব্যাটিংয়েও গুরুত্ব দেব। কারণ বিদেশের মাটিতে টেলএন্ডারদের রান খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়। গত দুটো অস্ট্রেলিয়া সফরেও আমাদের এমনই পরিকল্পনা ছিল। নীচের দিকের ব্যাটারেরা রান করতে পারলে সুবিধা হয়। যত বেশি সম্ভব রান করে দলকে সাহায্য করা দরকার। তাই এখন আমরা ব্যাটিং নিয়েও পরিশ্রম করছি।’’
লর্ডসের লড়াই দলের সকলকে আত্মবিশ্বাসী করবে বলেও মনে করেন সিরাজ। তিনি বলেছেন, ‘‘আউট হওয়ার পর আমাকে কেউ কিছুই বলেনি। সবাই প্রশংসাই করেছে। একটা সময় মনে হচ্ছিল, আমরা ৮০ রানে হেরে যাব। অথচ আমরা লড়াইটা চা পানের বিরতির পরও টেনে নিয়ে যেতে পেরেছি। এটাই গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচটা ৮০ রানে হারলে এত কিছু মনে হত না। কিন্তু আমরা মাত্র ২২ রানে হেরেছি। কাছাকাছি পৌঁছেও পারিনি। সকলেই হতাশ হয়েছিলাম। ওরা ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে ঠিকই, তবে সিরিজ় এখনও শেষ হয়নি।’’
সিরাজের আশা, ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টেও ভাল লড়াই হবে। উল্লেখ্য, আগামী ২৩ জুলাই থেকে শুরু হবে ভারত-ইংল্যান্ড চতুর্থ টেস্ট।