Indian Railways: ভিড় এড়াতে ‘জেনারেল’ কামরা তুলে সংরক্ষিত বাতানুকূল কামরা চালুর ভাবনা রেলের

সমস্যাটা অনেক দিনের। সংরক্ষিত আসনের টিকিট না-পেয়ে দূরপাল্লার ট্রেনে সাধারণ শ্রেণির কামরায় ঠাসাঠাসি ভিড়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হন অনেকেই। এই সমস্যার সুরাহায় এ বার ওই ‘জেনারেল’ বা সাধারণ কামরা তুলে দিয়ে সেই জায়গায় সম্পূর্ণ সংরক্ষিত বাতানুকূল কামরা চালু করার কথা ভাবছে রেল। নতুন কামরায় কিছুটা বেশি ভাড়ায় ১২০ জন পর্যন্ত যাত্রী বসে সফর করতে পারবেন বলে রেল সূত্রের খবর।

রেলের তরফে এই বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করা হয়নি। তবে রেল সূত্রে খবর, রায়বরেলীর মডার্ন কোচ ফ্যাক্টরি এবং কপূরথালার রেল কোচ ফ্যাক্টরিতে ওই বাতানুকূল কামরা তৈরির প্রস্তুতি চলছে। দ্বিতীয় বা সাধারণ শ্রেণির কামরা তুলে দেওয়ার ব্যাপারে যাত্রীদের একাংশের আপত্তি থাকলেও রেলের দাবি, দূরপাল্লার ট্রেনে স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতেই এই ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছে। রেলকর্তারা জানান, বেশি যাত্রীকে বসে যাতায়াতের সুযোগ করে দিতে পারায় টিকিটের দাম আকাশছোঁয়া হবে না। এর আগে চলতি বছরেই ইকনমি শ্রেণিতে থ্রি-টিয়ার এসি কোচ চালু হয়েছে। সেই সব নতুন কোচে ৭২-এর বদলে ৮১ জনের আসন থাকছে। কামরার নকশায় বদল করে অতিরিক্ত ন’টি আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই কোচে টু-টিয়ার এসি-র স্বাচ্ছন্দ্য রয়েছে, দাবি রেলের। তারা জানাচ্ছে, যাত্রী বেশি হওয়ায় ভাড়া টু এসি-র তুলনায় অনেকটা কম থাকছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এ বার বেশি দূরত্বের ট্রেনগুলিতে দ্বিতীয় বা সাধারণ শ্রেণির বাতানুকূল কামরা চালুর কথা ভাবা হচ্ছে।

রেল সূত্রের খবর, যে-সব ট্রেন ১৩০ কিলোমিটার গতিবেগে ছোটে, সেগুলিতেই নতুন ধরনের কামরা জোড়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। রাজধানী, দুরন্ত, শতাব্দী, বন্দে ভারত, তেজসের মতো প্রথম সারির কয়েকটি ট্রেন বাদ দিলে সব ট্রেনেই এখন দ্বিতীয় শ্রেণির কামরা রয়েছে। নতুন কামরায় স্বয়ংক্রিয় দরজা বসানোর কথাও ভাবা হচ্ছে। ২০১৬ সালে সাধারণ বা দ্বিতীয় শ্রেণির কামরায় যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতে দীনদয়াল কোচ চালু করা হয়। সেই কোচে আরামদায়ক আসন, পরিস্রুত পানীয় জল, মোবাইল চার্জিং পয়েন্ট, কোচে কতটা জল রয়েছে, তা জানার ব্যবস্থা-সহ বিভিন্ন সুবিধা ছিল। নতুন এসি কোচকেও সেই ভাবে তৈরির চেষ্টা চলছে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য, যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তা বাড়ানো।

বেশির ভাগ যাত্রীকে দ্বিতীয় শ্রেণির কামরায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঠাসাঠাসি করে সফর করতে হয় বলে অভিযোগ। সেই সব যাত্রীর মধ্যে অনেকে বেশি টাকা দিয়ে টিকিট পরীক্ষকদের মাধ্যমে সংরক্ষিত আসন পাওয়ার চেষ্টা করেন। নানা আর্থিক দুর্নীতির ঘটনাও ঘটে। রেলের দাবি, বেশি যাত্রীকে সংরক্ষিত বাতানুকূল কামরায় যাতায়াতের সুযোগ দেওয়া গেলে সমস্যা কমবে। সাধারণ যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, এ ভাবে দ্বিতীয় শ্রেণির কামরা তুলে দিলে যাতায়াতের খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে। বেশি টাকা দিয়ে দূরপাল্লার ট্রেনে সফরের সামর্থ্য অনেকেরই নেই। রেলকর্তাদের বক্তব্য, সামান্য খরচ বাড়লেও নতুন ব্যবস্থায় যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তা অনেকটা বাড়বে। সর্বোপরি অনেক বেশি যাত্রী সফরের সুযোগ পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.