‘৪০০ আসনে জিতলেই মন্দির বানাব জ্ঞানবাপী ও মথুরায়’! বললেন বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা

লোকসভা ভোটের প্রচারে অযোধ্যার বাবরি মসজিদের পর এ বার বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মার নিশানায় মথুরার শাহি ইদগাহ। দিল্লিতে ভোটের প্রচারে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বুধবার বলেন, ‘‘গত বার লোকসভা ভোটে আমরা ৩০০ আসন জিতে অযোধ্যায় রামমন্দির বানিয়েছি। এ বার ৪০০ আসনে জিতে বারাণসীর জ্ঞানবাপী এবং মথুরায় কৃষ্ণ জন্মভূমিতে মন্দির বানাব।’’

ঘটনাচক্রে অযোধ্যার মতোই বারণসীর জ্ঞানবাপী এবং মথুয়ার শাহি ইদগাহের জমি বিতর্ক এখন আদালতের দরজায় গিয়েছে। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, দু’টি স্থানেই হিন্দুদের মন্দির ভেঙে মোগল সম্রাট অওরঙ্গজ়েবের নির্দেশে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৬৬৯ সালের ২ নভেম্বর মন্দির ভেঙে অওরঙ্গজ়েব জ্ঞানবাপী মসজিদ নির্মাণের ফরমান দিয়েছিলেন বলে আদালতে দাবি করেছে হিন্দুপক্ষ। সেই ফরমান সংক্রান্ত শিলালিপির সন্ধান ভারতীয় পুরতত্ত্ব সর্বেক্ষণের সমীক্ষায় মিলেছে বলেও তাদের দাবি।

সম্প্রতি, বারাণসী জেলা আদালত হিন্দুপক্ষকে জ্ঞানবাপীর ব্যাস কি তহখানায় পূজার্চনার অনুমতি দিয়েছে। ইলাহাবাদ হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টও সেই নির্দেশ বহাল রেখেছে। অন্য দিকে, মথুরার প্রাচীন কাটরা স্তূপ (যা কাটরা কেশবদাস নামে পরিচিত) এলাকায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মস্থান কমপ্লেক্সের পাশেই রয়েছে শাহি ইদগাহ মসজিদ। হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, ইদগাহের ওই জমিতে কৃষ্ণের জন্মস্থানে ছিল প্রাচীন কেশবদাস মন্দির। কাশীর ‘আসল বিশ্বনাথ মন্দিরের’ মতোই মথুরার মন্দিরটিও ধ্বংস করেছিলেন অওরঙ্গজ়েব।

অভিযোগ, তাঁর নির্দেশে ১৬৬৯ থেকে ১৬৭০ সালের মধ্যে তৈরি করা হয়েছিল মসজিদটি, কাটরা কেশবদাস মন্দিরের ১৩.৩৭ একর জমিতে। সেই জমির মালিকানা নিয়ে বিবাদও এখন ইলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারাধীন। লোকসভা ভোটপর্ব চলাকালীন হিমন্ত সেই প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে কৌশলে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ উস্কে দিতে চাইছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

প্রসঙ্গত, গত ১০ মে ওড়িশার মলকানগিরিতে বিজেপির প্রচারে গিয়ে হিমন্ত বলেন, ‘‘মানুষ প্রশ্ন তুলছে, আমরা কেন ৪০০টি লোকসভা আসনে জিততে চাইছি? আপনাদের উচিত ৪০০ লোকসভা আসনে বিজেপির জয় নিশ্চিত করা। কারণ, কংগ্রেস অযোধ্যার রাম জন্মভূমিতে বাবরি মসজিদ পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। তারা যাতে সফল না হতে পারে, সে জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদী মানুষের কাছে ৪০০টি আসনে জেতানোর আবেদন জানিয়েছেন।’’ সে সময়ও তাঁর বিরুদ্ধে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.