ভারত থেকে ফিরে হাসিনা চিন সফরে! জিনপিংয়ের সঙ্গে বুধ-বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যার পাশাপাশি তিস্তা?

ভারতের পরে এ বার চিন সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার, বেজিংয়ে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির শাখা ‘চাইনিজ় পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্স’ (সিপিপিসিসি)-এর চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নিবিড়তর করা এবং বাণিজ্যিক লেনদেন বৃদ্ধির পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা নিয়েও দু’জনের আলোচনা হয়েছে।

বুধবার চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন হাসিনা। তাঁদের দু’জনের আলোচনায় তিস্তা নদী প্রকল্পের প্রসঙ্গ আসতে পারে বলে বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে। চিন ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্পে বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছে হাসিনা সরকারকে। জানুয়ারিতে হাসিনার নতুন সরকার শপথ নেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় চিনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন নতুন বিদেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে দেখা করে তিস্তা নিয়ে তাঁদের প্রকল্পে দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন।

কিন্তু ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত তিস্তা নদীর জলপ্রবাহ নিয়ে তৃতীয় একটি দেশের ইঞ্জিনিয়ার ও কারিগরদের কাজ করা নিয়ে বাংলাদেশের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছিল দিল্লি। শিলিগুড়ি করিডোরে সংবেদনশীল ‘চিকেন নেক’ অংশের অদূরে চিনের এই প্রকল্প রূপায়ণে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেক বিশেষজ্ঞ। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী মাহমুদ শপথ নেওয়ার পরে দিল্লি এসে তাঁদের তিস্তা প্রকল্পটিতে অর্থ সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছিলেন ভারত সরকারের কাছে।

সম্প্রতি দিল্লিতে মাহমুদ মন্তব্য করেছিলেন, “তিস্তা প্রকল্প বাংলাদেশের কাছে খুবই দরকারি। ভারত এই প্রকল্প রূপায়ণে অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তা দিলে সব সমস্যা মিটে যায়।” ঘটনাচক্রে, তিস্তার জল বণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি অনির্দিষ্ট কাল পিছিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনাই বছর পাঁচেক আগে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে চিঠি লিখে তিস্তা প্রকল্পে সহযোগিতার আর্জি জানিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে সোমবার হাসিনা-জিনপিং বৈঠকের দিকে ‘নজর’ রাখছে সাউথ ব্লক।

বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে বেজিং-ঢাকা কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে হাসিনার এই সফর। হাসিনা সরকারের বিদেশমন্ত্রী মাহমুদ মঙ্গলবার বলেন, অশান্ত মায়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সে দেশের (মায়ানমার) উদ্যোগী হয়নি। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। ওয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরে মঙ্গলবার হাসিনা বলেন, ‘‘গত ছ’বছর ধরে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে চলে আসছেন।’’ অন্য দিকে ওয়াং বলেন, ‘‘আমরা মায়ানমারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করব।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.