ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে অস্ত্রবিরতির পরেও জম্মু ও কাশ্মীরে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গিয়েছে। শনিবার রাত ৯টার কিছু আগে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা সমাজমাধ্যমে জানান, শ্রীনগরে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন তিনি। অস্ত্রবিরতির কী হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওমর। কিছু সময় পরে একটি ভিডিয়োও সমাজমাধ্যমের পাতায় পোস্ট করেন ওমর। সেখানে ওমর লেখেন, “কোন অস্ত্রবিরতি চলছে না। শ্রীনগরের এয়ার ডিফেন্স ইউনিটগুলি আবার চালু হয়েছে।” জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীর এই পোস্টগুলির কিছু সময় আগেই সংবাদ সংস্থা রয়টার্স দাবি করেছে, জম্মু শহরেও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গিয়েছে।
সূত্রের খবর, শ্রীনগরে তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছে। কাশ্মীর সেক্টরের উধমপুরেও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গিয়েছে। সেখানেও অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন হচ্ছে বলে খবর। জম্মু শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে নওসেরা এবং ১৫ কিলোমিটার দূরের আখনুরেও গুলি চলেছে বলে খবর।
নতুন করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শনিবার রাতে জম্মুতে আবার ‘ব্ল্যাক আউট’ হয়েছে বলে খবর। যদিও সাইরেন বাজেনি। তবে উধমপুরে সাইরেন বাজিয়ে ব্ল্যাক আউট করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সকালের মতো পরিস্থিতি অতটা ভয়াবহ নয় ঠিকই। কিন্তু গোলাগুলি পুরোপুরি থামেনি। আনুষ্ঠানিক ভাবে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করা হলেও সংঘাতের বাতাবরণ পুরোপুরি মেটেনি বলেই অনুমান করছেন অনেকে। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, সাইরেনের শব্দ পাওয়া গিয়েছে কাশ্মীরের কাঠুয়াতেও। সেখানেও সাইরেনের শব্দ পাওয়া গিয়েছে।
শুধু কাশ্মীর উপত্যকাতেই নয়, শনিবার রাতে রাজস্থান, পঞ্জাব এবং গুজরাতে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলেও নতুন করে উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাজস্থানের বারমেঢ়, জৈসলমের এবং পঞ্জাবের ফিরোজ়পুর, পঠানকোট, মোগায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে ইতিমধ্যে ব্ল্যাকআউট করা হয়েছে। গুজরাতের পুলিশমন্ত্রী হর্ষ সঙ্ঘভি সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, কচ্ছ জেলায় বেশ কিছু ড্রোন দেখা গিয়েছে। সেখানেও সম্পূর্ণ ‘ব্ল্যাকআউট’ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এলাকাবাসীকে ভয় না-পেয়ে নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন গুজরাতের পুলিশমন্ত্রী।
গত মঙ্গলবার বেশি রাতের দিকে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়েছিল ভারত। ওই অভিযানে নির্দিষ্ট ভাবে জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে চিহ্নিত করে হামলা করা হয়েছে বলে দাবি ভারতের। কিন্তু সেই দাবি মানেনি পাকিস্তান। তারাও পাল্টা ভারতের দিকে ড্রোন এবং গোলা হামলা শুরু করে, যার বেশিরভাগই প্রতিহত করেছে ভারত। এই সংঘাতের আবহে পরমাণু শক্তিধর দুই রাষ্ট্র শনিবার বিকেলে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়। ভারতীয় বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী সমাজমাধ্যমে জানান, শনিবার বিকেল ৫টা থেকে অস্ত্রবিরতি কার্যকর হবে এবং দু’দেশই সব ধরনের সংঘর্ষ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার রাতে ফের শ্রীনগর উপত্যকায় বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেল।