সুপার কাপের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল, পঞ্জাবকে হারিয়ে দিল লাল-হলুদ, লাল কার্ড দেখলেন কোচ অস্কার

এক বছর পর আবার সুপার কাপের ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল। বৃহস্পতিবার গোয়ায় সুপার কাপের সেমিফাইনালে পঞ্জাব এফসি-কে ৩-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে গেল তারা। গোল করলেন মহম্মদ রশিদ, কেভিন সিবিলে এবং সাউল ক্রেসপো। ফাইনালে গোয়ার বিরুদ্ধে খেলবে ইস্টবেঙ্গল। তারা অপর সেমিফাইনালে ২-১ গোলে হারিয়েছে মুম্বইকে। তবে চিন্তা থাকল কোচ অস্কার ব্রুজ়োর লাল কার্ড নিয়ে। তিনি ফাইনালে রিজ়ার্ভ বেঞ্চে বসতে পারবেন না।

পাঁচ বিদেশিকে প্রথম একাদশে রেখেছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। শুরু থেকে দুই দল একে অপরকে মেপে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। খেলা হচ্ছিল লম্বা বলে। দু’বার আক্রমণে উঠেছিল পঞ্জাব। তবে সুবিধা করতে পারেনি তারা। ইস্টবেঙ্গলের আধিপত্য ছিল একটু বেশি। তারা নীচ থেকে আক্রমণ তৈরি করার চেষ্টা করছিল। তবে গোল আসে সেট পিস থেকে।

১২ মিনিটের মাথায় কর্নার পেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। বক্সে রাখা কর্নার ক্লিয়ার হয়ে পৌঁছয় রশিদের কাছে। তিনি বক্সের বাইরে থেকেই নিচু শট নেন। দুই দলের ফুটবলারদের পায়ের জঙ্গলের মাঝ দিয়ে বল জালে জড়িয়ে যায়। পঞ্জাবের গোলকিপার শাবিরের হাতে বল লাগলেও তিনি আটকাতে পারেননি।

কিছু ক্ষণ পরেই নাওরেম মহেশের একটি শট প্রতিহত হয়। গোল পেয়ে চাপ আরও বাড়াচ্ছিল ইস্টবেঙ্গল। পঞ্জাবের ফুটবলারেরা নিজেদের অর্ধের বাইরে বেরোতেই পারছিলেন না। জলপানের বিরতির পরেই পেনাল্টি পায় পঞ্জাব। রিকি শ্যাবং হেড করে ইস্টবেঙ্গল বক্সে বল ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। তা লাগে বিপিন সিংহের হাতে। পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরান ড্যানিয়েল রামিরেজ়।

গোল খাওয়ার পরেই রশিদ আবার একটি লম্বা শট মেরেছিলেন। সেটি গোলের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। পঞ্জাব এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। তবে রামিরেজ় সফল হননি। বিরতির আগেই রাগ দেখানোর কারণে হলুদ কার্ড দেখেন অস্কার। তার পরেই মিগুয়েল ফেরেরার ফ্রিকিক থেকে কর্নার পায় ইস্টবেঙ্গল। কর্নার থেকে সিবিলের হেড জালে জড়়িয়ে যায়। এর পরেই চতুর্থ রেফারির সামনে গিয়ে উল্লাস করতে থাকেন অস্কার। তা দেখে মাঠের রেফারি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড এবং লাল কার্ড দেখিয়ে অস্কারকে মাঠ থেকে বার করে দেন। বেরনোর সময়ও রিজ়ার্ভ বেঞ্চে ঘুষি মারতে দেখা যায় অস্কারকে। কোনও মতে তাঁকে মাঠের বাইরে নিয়ে যান টিম ম্যানেজার প্রতীম সাহা। দ্বিতীয়ার্ধে অস্কারকে দেখা যায় গ্যালারি থেকে বসে দল পরিচালনা করতে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও দাপট ছিল ইস্টবেঙ্গলেরই। বেশি পাস খেলে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করছিলেন লাল-হলুদের ফুটবলারেরা। ৫৬ মিনিটের মাথায় মিগুয়েল থেকে মহেশ হয়ে বল যায় বিপিনের কাছে। তিনি ক্রস করেছিলেন হিরোশি ইবুসুকির উদ্দেশে। জাপানি ফুটবলারের হেড লাগে পোস্টে।

৭১ মিনিটে তৃতীয় গোল করে ইস্টবেঙ্গল। মিগুয়েল ছোট পাস বাড়িয়েছিলেন সাউলকে। স্পেনীয় ফুটবলার দূরপাল্লার শটে দলের জয় নিশ্চিত করেন। ম্যাচের শেষ ভাগে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়ে দেয় ইস্টবেঙ্গল। তবে আর গোল করতে পারেনি তারা।

২০১৮ এবং ২০২৪-এর পর আবার সুপার কাপের ফাইনাল খেলবে ইস্টবেঙ্গল। এ বছরের শুরুতে সুপার কাপ হয়েছিল। সে বার তারা বিদায় নিয়েছিল শেষ ষোলো থেকেই। সুপার কাপ জিতলে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এর প্লে-অফ খেলার সুযোগ পাওয়া যাবে। না হলে খেলতে হবে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.