Aliah University: শিক্ষিকার দিকে জগ ছুড়েছিলেন আরাবুল, আলিয়া-কাণ্ডে আবার প্রশ্নে শিক্ষক নিরাপত্তা

এখন সবটাই তাঁর কাছে ‘স্বাভাবিক’ হয়ে গিয়েছে। ছাত্র-রাজনীতির আড়ালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপরে নিগ্রহের ঘটনা তাঁকে আর অবাক করে না। তবে সংবাদমাধ্যমে এমন ঘটনা পড়লে তাঁর মনে পড়ে যায় এক দশক আগের সেই ঘটনার কথা। অভিযোগ, শাসকদলের এক নেতার ছোড়া জগ থুতনিতে লেগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। যে ঘটনার প্রভাব পড়েছিল রাজ্য রাজনীতিতেও।

সেটাও ছিল এপ্রিল মাস। ভাঙড় কলেজে ওয়েবকুটার প্রার্থী নির্বাচন ঘিরে ভাঙড়ের তৎকালীন দাপুটে নেতা তথা ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি আরাবুল ইসলামের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন সেখানকার ভূগোলের শিক্ষিকা দেবযানী দে। অভিযোগ, দু’তরফের মধ্যে বচসা চলাকালীন আচমকা আরাবুল ওই শিক্ষিকাকে লক্ষ্য করে প্লাস্টিকের জগ ছুড়ে মারেন। থুতনিতে আঘাত পান দেবযানী। ওই ঘটনার এক বছর আগেই ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল।

নিউ টাউনে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা ও তাঁর অনুগামীরা সেখানকার উপাচার্যের গায়ে হাত না তুললেও, যে অশালীন ভাষায় তাঁকে হেনস্থা করেছেন, তা নিয়ে চরম প্রতিক্রিয়া আসছে শিক্ষাক্ষেত্র থেকে। উপাচার্যকে নিগ্রহ করার সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার কথা জানেন দেবযানীও। আলিয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে এ দিন দেবযানীকে ফোন করা হলে তিনি শুধু বলেন, ‘‘কী আর বলব! এই ধরনের খবরে পুরনো স্মৃতি ভেসে ওঠে। সেই ঘটনা আর মনে না করতে পারলেই ভাল হয়। আমার থুতনিতে সে দিন আঘাত লেগেছিল।’’

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গিয়াসউদ্দিন মণ্ডলকে ঘটনার দু’দিন পরে রবিবার বেলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাচক্রে তার খানিক আগেই সংবাদমাধ্যমে তৃণমূলের তরফে বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হয় যে, গিয়াসউদ্দিনকে তিন বছর আগেই দল থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে। ভাঙড়ের ঘটনায় সেই সময়ে প্রাথমিক ভাবে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ আরাবুলের পাশে দাঁড়ালেও পরে কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে বসানো হয় প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লাকে।

তবে ওই ভূগোল-শিক্ষিকা জানাচ্ছেন, ওই ঘটনার পরে শিক্ষক-শিক্ষিকারা একযোগে প্রতিবাদ করায়, পরবর্তী সময়ে নতুন করে আর কিছু ঘটেনি। দেবযানী বলেন, ‘‘আমরা সবাই একসঙ্গে রয়েছি। এ ভাবেই এগিয়ে চলেছি।’’

কলেজ সূত্রের খবর, কোনও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হলে আরাবুল ওই কলেজে যান। তবে শিক্ষিকা দেবযানী কিংবা আরাবুলের মধ্যে কোনও কথার আদানপ্রদান ঘটে না বলেই খবর। বর্তমানে ভাঙড় (২) পঞ্চায়েতের সভাপতি আরাবুলের কাছে এ দিন দশ বছর আগের সেই ঘটনার প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি বলেন, ‘‘ওই শিক্ষিকার সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। প্লাস্টিকের জগটা পড়ে গিয়েছিল। আর সংবাদমাধ্যম রটিয়ে দিল, আমি জগ ছুড়েছি।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.