সন্দেশখালিকাণ্ডে গ্রেফতার অজিত মাইতি, তাড়া খেয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা

সন্দেশখালিকাণ্ডে তৃণমূল নেতা অজিত মাইতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার তাঁকে নিয়েই উত্তপ্ত ছিল সন্দেশখালির বেড়মজুর গ্রাম। তিনি গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে অন্য এক জনের বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলেন। সেখান থেকে পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সোমবার সকালে অজিতকে গ্রেফতার করা হল।

অজিতকে রবিবার আটক করে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের হাত থেকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তাঁকে রবিবার মিনাখাঁ থানাতেই রাখা হয়েছিল। সোমবার গ্রেফতারির পর অজিতকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় মিনাখাঁ হাসপাতালে। তার পর আবার থানায় আনা হয়েছে তৃণমূল নেতাকে। সোমবারই তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে হাজির করাবে পুলিশ।

শনিবারের পর রবিবারও সন্দেশখালিতে গিয়েছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং সুজিত বসু। তাঁরা বেড়মজুরের একটি হরিনাম সংকীর্তনের আসরে ছিলেন। ওই এলাকায় অজিতকে দেখে তাড়া করেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন মহিলা।

তাড়া খেয়ে নিকটবর্তী একটি বাড়ির দরজা খোলা পেয়ে সেখানে ঢুকে পড়েন অজিত। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। ওই বাড়ির মালিক সেই মুহূর্তে বাইরে ছিলেন। অজিত তাঁকেও বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। অজিতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেড়মজুরে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বাড়ির ভিতরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। বাইরে তাঁকে ধরতে জড়ো হয়েছিলেন মারমুখী গ্রামবাসীরা। বাড়ির মালিক দরজার সামনেই ছিলেন, ভিতরে ঢুকতে পারছিলেন না। তিনি জানান, তিনি স্নান করতে বেরিয়েছিলেন। তাঁর নিমন্ত্রণ আছে। স্নান সেরে পোশাকটুকুও পরতে পারছেন না।

ইতিমধ্যে এলাকায় আসে পুলিশ। তাদের অনুরোধ সত্ত্বেও সেখান থেকে গ্রামবাসীদের সরানো যাচ্ছিল না বলে অভিযোগ। একসময় ভয়ে কেঁদেও ফেলেন অজিত। বলেন, ‘‘দাদা, দরজা খুলবেন না! ওরা আমাকে মেরে ফেলবে!’’ প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে অন্যের বাড়িতে আটকে থাকার পর অজিতকে অন্ধকারে ঘুপচি গলি দিয়ে বার করে গাড়িতে তোলে পুলিশ।

অজিতের বিরুদ্ধে এলাকায় অত্য়াচার, জমি জবরদখলের মতো অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা। তিনি শাহজাহান শেখের ভাই সিরাজউদ্দীনের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। এক সময়ে নাকি গ্রামবাসীদের চমকে-ধমকে বেড়িয়েছেন। তাঁর গ্রেফতারির দাবিতে শনিবারও বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। রবিবার তাঁকে সামনে পেয়ে তাড়া করেন।

অজিতের বিরুদ্ধে যখন ক্ষোভের আগুন জ্বলছে বেড়মজুরে, তখন রবিবারই সন্দেশখালির অন্য একটি জায়গা থেকে মন্ত্রী পার্থ জানিয়ে দেন, দল তাঁর পাশে নেই। তাঁর পদও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘অন্যায় করলে তো রাগের বহিঃপ্রকাশ হবেই।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.