হারের হ্যাটট্রিক ভুলে কেরল ম্যাচে চোখ ইস্টবেঙ্গলের, চোট-আঘাত নিয়ে ভাবছেন না কোচ

টানা তিনটি ম্যাচে হার। অস্কার ব্রুজ়‌োর অধীনে শুরুটা ভাল করার পরেও বছর শুরু হতে কেমন যেন তাল কেটে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। নতুন বছরে একটিও ম্যাচ জিততে পারেনি তারা। প্লে-অফের স্বপ্নও দূরে সরছে। তবে পুরোপুরি মিলিয়ে যায়নি। সেই স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যেই শুক্রবার যুবভারতীতে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে খেলতে নামছে ইস্টবেঙ্গল। তিন পয়েন্ট পাওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী কোচ অস্কার। দলের ফুটবলারদের চোট নিয়ে চাপ থাকলেও তিনি তা ভাবছেন না।

অস্কার বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, আনোয়ার আলির সুস্থ হতে এখনও ১৫ দিন লাগবে। হেক্টর ইয়ুস্তেও পুরো ৯০ মিনিট খেলার মতো ফিট নন। মহম্মদ রাকিপ, প্রভাত লাকরার মতো ডিফেন্ডারেরা চোট পেয়ে বাইরে। তাই আক্রমণে ওঠার কথা না ভেবে আগে ঘর সামলানোর দিকেই নজর দিতে চান অস্কার।

কেরলের বিরুদ্ধে সাইড ব্যাকে জিকসন সিংহকে খেলানো হতে পারে। অথবা মার্ক জোথানপুইয়াকে খেলিয়ে জিকসনকে মাঝমাঠে শৌভিক চক্রবর্তীর পাশে জুড়ে দিতে পারেন অস্কার। না হলে মাঝমাঠে শৌভিকের সঙ্গী হতে পারেন নাওরেম মহেশ। কেরলের বিরুদ্ধেও শুরু থেকে খেলতে পারেন নতুন বিদেশি রিচার্ড সেলিস। সঙ্গে থাকবেন দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস। কার্ড সমস্যায় নেই নন্দকুমার। তাঁর জায়গায় অস্কার কাকে খেলান সেই নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

আগের তিনটি হার নিয়ে ভাবতে চাইছেন না অস্কার। তিনি বললেন, “যে ভাবে আগের তিনটে ম্যাচ শেষ হয়েছে তাতে আমরা খুশি নই। তবে ইতিবাচক দিকগুলোর দিকে তাকাতে হবে। আমরা আইএসএলের সেরা দলগুলোর বিপক্ষে খেলেছি। ফলাফলও আমাদের পক্ষে যায়নি। যদি ছোটখাটো ব্যাপারগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারতাম তা হলে ভাল ফল হত। ভাল খেলেছি। কিন্তু ম্যাচ জিততে পারিনি।”

তবে চোট-আঘাত নিয়ে আক্ষেপ যাচ্ছে না। অস্কার বলেছেন, “হেক্টর অনুশীলনে ফিরলেও পুরো ৯০ মিনিট খেলার জন্য তৈরি নয়। সাউল এখনও সুস্থ হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। বাকি বিদেশিরা খেলার জন্য তৈরি। এ ছাড়া মহম্মদ রাকিপ, প্রভাত লাকরা, আনোয়ার আলি, মার্ক জোথানপুইয়াকে সুস্থ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আশা করি পরের ম্যাচগুলোতে আরও বেশি খেলোয়াড়কে পাব।”

প্রথম ছয় ম্যাচে পয়েন্ট না পাওয়াকে আবারও দুষেছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। তাঁর সাফ কথা, “আগের দশটা ম্যাচের পারফরম্যান্স দেখলে বুঝতে পারবেন আমরা হয়তো প্রথম চারে বা পাঁচে থাকতাম এখন। প্রথম ছয় ম্যাচের ফলাফল বদলানোর উপায় নেই। তত দিনে ২৫ শতাংশ ম্যাচ শেষ হয়েছিল। তবে খেলোয়াড়দের এখনও অনুপ্রাণিত করতে পারছি। কাল ঘরের মাঠে আবার সমর্থকদের সামনে খেলব। আশা করি তিন পয়েন্টই ঘরে তুলতে পারব। আমরা প্রমাণ করতে চাই যে এই দলটার প্রতিভা পয়েন্ট তালিকার অবস্থানের থেকে ভাল।”

গত তিনটি ম্যাচেই খারাপ গোল হজম করেছে ইস্টবেঙ্গল। তবে মুম্বই তিন গোল দিলেও মোহনবাগান এবং গোয়া এক গোলের বেশি দিতে পারেনি। রক্ষণের ভুল স্বীকার করেও অস্কারের চোখ ভবিষ্যতের দিকে। বলেছেন, “আমরা প্রতি আক্রমণে গোল খাচ্ছি। সেই সময়ে আমরা নিজেদের বুদ্ধি কাজে লাগাতে পারছি না। আক্রমণে ভেসে যাচ্ছি। এটা নিয়ে রোজই কাজ করতে হবে। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে আমাদের রক্ষণ ভাগের কতজন ফুটবলারের চোট রয়েছে সেটাও খেয়াল রাখতে হবে।”

সিনিয়র খেলোয়াড়েরা যখন সাফল্য এনে দিতে পারছেন না, তখন জুনিয়রদের উপরে কি ভরসা করা যায়? এই প্রশ্নে অস্কারের জবাব, “আমি বরাবরই প্রতিভাবান খেলোয়াড় তুলে আনায় বিশ্বাসী। তবে এই মুহূর্তে লিগের যা অবস্থা তাতে তরুণদের খেলালে সেটা ঝুঁকির হয়ে যাবে। তবু বলব, প্রত্যেকটা অনুশীলনে সাত-আট জন তরুণ অনুশীলন করে। আমি সব সময় ওদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করে। তবে এটাও বোঝাই, কেন ওদের নিয়মিত আইএসএলে খেলাতে পারছি না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.