শেষ মুহূর্তের গোলে কোনও মতে ড্র জার্মানির, গ্রুপ শীর্ষে থেকেই শেষ ষোলোয় ক্রুজ়রা

ইউরো কাপে লজ্জার হাত থেকে বেঁচে গেল আয়োজক দেশ জার্মানি। সংযুক্ত সময়ের গোলে কোনও মতে সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে হার এড়াল তারা। ম্যাচ শেষ হল ১-১ অমীমাংসিত অবস্থায়। প্রথমার্ধে সুইৎজারল্যান্ডকে এগিয়ে দিয়েছিলেন ড্যান এনডোয়ে। সংযুক্তি সময়ের তৃতীয় মিনিটে গোল করেন পরিবর্ত হিসাবে নামা নিকলাস ফুলক্রুগ। ড্রয়ের ফলে গ্রুপ শীর্ষে শেষ করল জার্মানি। তিন ম্যাচে তাদের পয়েন্ট সাত। সুইৎজারল্যান্ড তিন ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করল। অন্য ম্যাচে, শেষ মুহূর্তের গোলে জিতল হাঙ্গেরি। তারা ১-০ হারাল স্কটল্যান্ডকে। হাঙ্গেরির তিন ম্যাচে তিন পয়েন্ট হল। নকআউটে ওঠার সুযোগ রয়েছে তাদেরও।

ম্যাচের শুরু থেকে আধিপত্য ছিল জার্মানিরই। তিন মিনিটের মাথায় জামাল মুসিয়ালা ডিফেন্সচেরা পাস দিয়েছিলেন ইলকাই গুন্ডোয়ানকে। কিন্তু সেই আক্রমণ ক্লিয়ার করে দেয় সুইস রক্ষণ। জার্মানির আক্রমণ তাতে কমেনি। বলের লড়াইয়ে তারাই এগিয়েছিল। মুসিয়ালা এবং ফ্লোরিয়ান উইর্ৎজ ইচ্ছামতো জায়গা বদল করে খেলে সুইসদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

জার্মানি এগিয়ে গিয়েছিল ১৭ মিনিটে। বাঁ দিক থেকে জার্মানির মিটেলস্ট্যাডের ক্রস ক্লিয়ার করেছিলেন আবিশার। ২৫ গজ দূরে বল পেয়েছিলেন রবার্ট আন্দ্রিচ। দূর থেকে তিনি শট মেরেছিলেন। বিপক্ষ গোলকিপার ইয়ান সমারের সামনে আচমকা বল ড্রপ খেয়ে গোলে ঢুকে যায়। জার্মান ফুটবলারেরা গোলের উৎসব করার সময়েই তাতে জল ঢেলে দেন রেফারি। ভিডিয়ো অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভার) সঙ্গে শলাপরামর্শ এবং সাইডলাইনের ধারে গিয়ে ভিডিয়ো দেখার পর তিনি গোল বাতিল করে দেন। জানান, আবিশার বল ক্লিয়ার করার সময়ে তাঁকে ফাউল করেছিলেন মুসিয়ালা। রিপ্লে-তে সেই ঘটনা পরিষ্কার দেখাও গিয়েছে।

জার্মানির আক্রমণের সামনে ভালই খেলছিল সুইস রক্ষণ। ২৮ মিনিটের মাথায় আচমকাই এগিয়ে যায় তারা। নিজের অর্ধে বল হারান মুসিয়ালা। সেই বল ধরে এগিয়ে যান ফ্যাবিয়ান রাইডার। তিনি পাস দেন বাঁ দিকে থাকা রেমো ফ্রিউলারকে। ফ্রিউলার বক্সে ক্রস তুলেছিলেন। জার্মানির ডিফেন্ডারকে টপকে সেই বলে পা ছুঁইয়ে গোল করেন ড্যান এনডোয়ে। ‘ভার’ পরীক্ষা করলেও গোল বাতিল করা হয়নি। পরের মুহূর্তেই এনডোয়ে আবার গোল করে দিচ্ছিলেন। বক্সের বাইরে থাকা তাঁর শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

প্রথমার্ধে জার্মানি সমতা ফেরাতে পারেনি। বরং বেশ কয়েক বার সুইৎজারল্যান্ডের আক্রমণ জার্মান রক্ষণের বুকে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছিল। দ্বিতীয়ার্ধেও সুইৎজারল্যান্ডের রক্ষণে ফাটল ধরাতে পারছিল না জার্মানি। কয়েক মিনিট পরেই একাধিক খেলোয়াড়কে বদলে দেন কোচ জুলিয়ান নাগেলসম্যান। তার মধ্যে ডেভিড রাউমের ২৫ গজ দূর থেকে একটি শট অল্পের জন্য বারের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়।

৭০ মিনিটের মাথায় আরও একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে জার্মানি। সুইৎজারল্যান্ডের আবিশারকে টপকে জোশুয়া কিমিখের উদ্দেশে পাস বাড়িয়েছিলেন উইর্ৎজ়। সেই শট দারুণ ভাবে বাঁচিয়ে দেন ম্যানুয়েল আকাঞ্জি। সেই বল পেয়েছিলেন ম্যাক্সি বেইয়ার। কিন্তু সেই প্রচেষ্টাও রুখে দেন সুইস ডিফেন্ডার ফ্যাবিয়ান শার। পেনাল্টির সম্ভাবনা তৈরি হলেও ‘ভার’ তা খারিজ করে দেয়।

৮৪ মিনিটের মাথায় আবার গোল দিয়েছিল সুইৎজারল্যান্ড। তবে এ বার অফসাইডের কারণে গোল বাতিল হয়। আমাদোনির পাস পেয়েছিলেন ভার্গাস। তিনি ন্যুয়েরের মাথার উপর দিয়ে বল জালে জড়ান। তবে সামান্য এগিয়ে থাকার কারণে অফসাইড হন। পরের মিনিটেই হাভার্ৎজের একটি হেড বারে লাগে। খেলা শেষ হওয়ার দু’মিনিট আগে দারুণ একটি সেভ করেন ন্যুয়ের। তার পরে যে জার্মানি গোল শোধ করবে, তা অনেকেই ভাবতে পারেননি। বাঁ দিক থেকে রাউমের ক্রসে সবার উপরে লাফিয়ে উঠে গোল করেন ফুলক্রুগ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.